নওগাঁ প্রতিনিধি: আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ও বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে নওগাঁয় সংবাদ সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ নওগাঁ জেলা শাখা। ২৫ নভেম্বর শনিবার বিকেলে শহরের মাস্টার পাড়ায় সংগঠনের কার্যালয়ে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা বন্ধে এগিয়ে আসুন, সহিংসতা প্রতিরোধে বিনিয়োগ করুন’।সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক পারভীন আক্তার বলেন, গত এক বছরে নওগাঁ জেলার ১৫০ জন নারী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তারা স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনের কাছে থেকে যৌতুকের জন্য, স্বামীর পরকীয়ার জের, মাদক সেবনে বাধা দেওয়া, সন্তান না হওয়াসহ বিভিন্ন কারণে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।তিনি বলেন, এর মধ্যে মহিলা পরিষদের প্রচেষ্টায় ৩৫টি অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হয়েছে। বেশ কিছু মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। নানা সীমাবন্ধতার কারণে অনেক অভিযোগের শেষ পর্যন্ত সুরাহা করা সম্ভব হয় না। তারপরও আমরা সব অভিযোগ গুরুত্বসহকারে নিয়ে সমাধানের চেষ্টা করি।লিগ্যাল এইড সম্পাদক মমতাজ বেগম বলেন, অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, মানবিক সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্য নিয়ে দেশ স্বাধীন হয়েছিল। গত পাঁচ দশকে আর্থসামাজিক উন্নয়নে নারীর উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে। অথচ নারীর মানবাধিকার এখনও অর্জিত হয়নি। নারীদের আরও বেশি সচেতন হতে হবে। নারীর পাশে সবাইকে দাঁড়াতে হবে। নারী নির্যাতন প্রতিরোধে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। এ ধরণী হোক সবার জন্য নিরাপদ বাসগ্রহ। নারীরা যেন নির্যাতনের শিকার না হয়, সেজন্য যে যার অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে।এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ নওগাঁ জেলা শাখার সহ-সভাপতি সিদ্দিকা খাতুন, আন্দোলন সম্পাদক পারভীন রেজা, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মনোয়ারা বেগম প্রমুখ।
১ বছর আগে
নোয়াখালী প্রতিনিধি: নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে যৌতুকের দাবিতে নাজমা আক্তার (২১) নামে এক গৃহবধূর শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ১১ নভেম্বর শনিবার দুপুরে উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের মুজাহিদপুর গ্রামের উজির আলী জমাদার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী নাজমা আক্তার চৌমুহনী পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের হাজীপুর এলাকার মো.ইউসুফের মেয়ে।ভুক্তভোগী নাজমা অভিযোগ করে বলেন, ৫ বছর আগে উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের মুজাহিদপুর গ্রামের সিএনজি চালক মো. রাসেলের সাথে পারিবারিকভাবে আমার বিয়ে হয়। আমাদের সংসারে একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে আমার স্বামী রাসেল বিভিন্ন সময় টাকার জন্য সংসারে কলহ করতো। কিছু দিন আগে সে তার সিএনজি অটোরিকশাটি বিক্রি করে দেয়।নাজমা আরও অভিযোগ করে বলেন, গত ৬ নভেম্বর নতুন একটি সিএনজি অটোরিকশা কেনার জন্য ২ লক্ষ টাকা এনে দেওয়ার জন্য আমাকে বাবার বাড়িতে পাঠায়। শনিবার দুপুরে আমার কাছে টাকা চেয়ে ঘরের জিনিসপত্র ভাঙচুরের চেষ্টা করে। এ সময় বাধা দিলে শ্বশুর-শাশুড়ির উপস্থিতিতে রাসেল আমার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে আমার চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে উদ্ধার করে প্রথমে বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সন্ধ্যার ২৫০ জন্য বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় কেউ এখনও থানায় অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম বলেন, আগুনে নাজমার শরীরে উপরিভাগ পুড়ে গেছে। কয়েকটি জায়গায় পুড়ে ফোস্কা পড়ে গেছে। বর্তমানে তার চিকিৎসা চলছে।
১ বছর আগে
আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি: বরগুনার আমতলীতে সহকর্মী শিক্ষকের বিরদ্ধে এক নারী শিক্ষিকাকে যৌন হযরানির লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস কর্তৃক একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।লিখিত অভিযোগে জানা যায়, উপজেলাধীন আমতলী এ.কে. হাই স্কুল সংলগ্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. মাইনুল ইসলাম নারী শিক্ষিকা আফরোজ জাহান তানিয়াকে বিভিন্ন সময় কথা বার্তার অশালীনতা, অসৌজন্যমূলক ও ঔদাত্যপূর্ণ আচরণ করে যাচ্ছেন। কারণে-অকারণে সুযোগ পেলেই নোংরা প্রস্তাব দেয়, নোংরা ইঙ্গিত করে। বিভিন্ন সময় উত্যক্ত করে।সহকারী শিক্ষক মাইনুল ইসলামের কারণে আত্মহত্যা করা ছাড়া তার কোন উপায় নাই বলে শিক্ষিকা আফরোজ তানিয়া অভিযোগে জানান।বরগুনা জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর দেয়া লিখিত অভিযোগে আরও জানা যায়, এই শিক্ষকের দাপটে ও তার কথা-বর্তায় দাম্ভিকতায় অন্য নারী শিক্ষিকারাও দিশেহারা। এছাড়া ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে একাধিক নারীঘটিত ঘটনার কথা আমতলীতে চাউর আছে। এ ঘটনায় শিক্ষিকা তানিয়া ন্যায় বিচার চেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।এ ব্যাপারে অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক মো. মাইনুল ইসলাম তার বিরদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বিকার করেন।স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল মান্নান সিকদার বলেন, কিছু দিন আগে সহকারী শিক্ষিকা তানিয়া ও শিক্ষক মাইনুল ইসলামের মধ্যে স্কুলে বসে ঝগড়াঝাটি হয়েছে। এর বাইরে আমি কিছু জানি না।আমতলী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. সফিউল আলম বলেন, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মহোদয় শিক্ষিকা তানিয়ার অভিযোগের ভিত্তিত্বে দু’জন সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।তদন্ত কমিটির প্রধান সহকারী শিক্ষা অফিসার মো. আল আমিন বলেন, ২৪ সেপ্টেম্বর রোববার তদন্তর জন্য চিঠি পেয়েছি। দ্রুততম সময়ে তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে।বরগুনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, শিক্ষিকা তানিয়ার অভিযোগের ভিত্তিত্বে দুই সদস্যর তদন্ত কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পরে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
১ বছর আগে
সিলেট প্রতিনিধি: সিলেটের কানাইঘাটে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে ৯ মাসের শিশু সন্তানের সামনে এক নারীকে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পর ২৯ মে সোমবার দিনভর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ধর্ষণের সাথে জড়িত ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।গ্রেফতাররা হলো- কানাইঘাট উপজেলার নন্দিরাই গ্রামের আলাউদ্দিনের পুত্র দুদু মিয়া (৩৬), বীরদল ভাড়ারীফৌদ গ্রামের মৃত মঈন উদ্দিনের পুত্র হেলাল আহমদ (৩৮), বড়দেশ সরদারী পাড়া গ্রামের বিলাল আহমদের পুত্র ফরহাদ (৩৫), বীরদল আগফৌদ গ্রামের খলিলুর রহমানের পুত্র আব্দুল করিম ও বীরদল ছোটফৌদ গ্রামের হবিব আলীর পুত্র জুবের আহমদ (২৪)।প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পুলিশ জানায়, গণধর্ষণের সাথে সরাসরি জড়িত রয়েছে হেলাল আহমদ ও ফরহাদ আহমদ। গ্রেফতার অন্য আসামিরা ধর্ষণে সহায়তা ও ধর্ষিতাকে ফুসলিয়ে অপহরণের সাথে জড়িত।বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কানাইঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. গোলাম দস্তগীর আহমেদ।পুলিশ জানায়, ভিকটিমের বাড়ী কানাইঘাট উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউনিয়নে। আনুমানিক ২০ দিন পূর্বে গ্রেফতার আসামি দুদু মিয়ার সাথে কানাইঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভিকটিমের পরিচয় হয়। সেই সুবাদে দুদু মিয়ার সাথে ওই নারীর প্রায়ই ফোনে কথাবার্তা হতো। ভিকটিমের ৯ মাসের শিশু কন্যা অসুস্থ হলে দুদু মিয়া তাকে পার্শ্ববর্তী জকিগঞ্জ উপজেলার ফুটিজুরি গ্রামের এক কবিরাজের কাছে নিয়া যেতে বলে। পরবর্তীতে মেয়ের চিকিৎসার নাম করে রোববার বিকাল ৩টার দিকে দুদু মিয়া ভিকটিমকে তার বাড়ী থেকে নিয়ে যায়। কিন্তু কবিরাজের কাছে না নিয়ে কৌশলে ফুসলিয়ে দুদু মিয়া কানাইঘাটের বীরদল বাজার এলাকায় ওই নারীকে নিয়ে ঘুরতে থাকে। রাত সাড়ে ১০ টার দিকে বীরদল বাজারে থাকা লোকজনের সন্দেহ হয়। এতে দুদু মিয়ার ফোনে তার সহযোগী আব্দুল করিম বীরদল বাজারে চলে আসতে বলে এবং তারা ওই নারীকে কৌশলে মোটরসাইকেল যোগে বীরদল খালোমুরা বাজারে নিয়ে যায়। এতে স্থানীয় কিছু লোকজনের সন্দেহ হলে তাদের আটক করেন।পরে রাত ১১টার দিকে স্থানীয় লোকজন কানাইঘাট বাজারে নিরাপদে নিয়ে যাওয়ার জন্য জুবের আহমদের রিক্সায় তুলে দেওয়া হয়। এসময় ভিকটিমের পিছু নেয় দুদু মিয়া ও আব্দুল করিম। একপর্যায় পুরানফৌদ কবরস্থানের সামনে ভিকটিমের রিক্সা আসা মাত্রই হেলাল আহমদ ও ফরহাদ আহমদ রিক্সার গতিরোধ করে এবং তাকে পুরানফৌদ গ্রামের পিপি হাবিব আলীর নির্জন পুকুরঘাটে তুলে নিয়ে যায়। সেখানে তারা হেলাল ও ফরহাদ ভিকটিমের ইচ্ছার বিরুদ্ধে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এতে ভিকটিমের প্রচুর রক্তপাত হয়। তখন গণধর্ষণের সাথে জড়িতরা পালিয়ে গেলে ধর্ষিতার আর্তচিৎকারে স্থানীয় লোকজন এসে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে ধর্ষিতাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।পরে পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে স্থানীয়দের সহায়তায় সোমবার দিনভর অভিযান চালিয়ে গণধর্ষণের সাথে জড়িতসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করে।বর্তমানে গণধর্ষিতাকে পুলিশ হেফাজতে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে পাঠানো হয়েছে হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি গোলাম দস্তগীর।
২ বছর আগে