নওগাঁ প্রতিনিধি: প্রথমবারের মতো নওগাঁয় তুলে ধরা হলো ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় নওগাঁর রোড হয়ে ভারতের বালুরঘাট গমনকারী শরণার্থীদের ক্লান্তি ও দুর্ভোগ দুর্দশার চিত্র। নওগাঁর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন একুশে পরিষদ এমন ব্যতিক্রমী আয়োজন করে।২০ এপ্রিল শনিবার শহরের তাজের মোড় থেকে অবিকল শরণার্থীর বেশে প্রতিকী পদযাত্রাটি নিয়ে বের হন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। এ সময় একাত্তরের বালুরঘাট গমনকারী শরণার্থীদের ক্লান্তি ও দুর্ভোগ দুর্দশার চিত্র ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেন আয়োজকরা।একুশে পরিষদ প্রতিষ্ঠার পর থেকে নওগাঁ ও তার আশেপাশের এলাকার মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস খুঁজে খুঁজে বের করে তা সংরক্ষণ করা, মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারকে স্বীকৃতি প্রদান কাজে সহযোগিতা করা, জঙ্গলে লুকিয়ে থাকা গণকবরগুলোর সন্ধান করাসহ বিভিন্ন ধরণের সামাজিক কাজগুলো করে আসছে।তারই ধারাবাহিকতায় বর্তমান প্রজন্মকে সেই সময়ে যারা শরণার্থী ছিলেন তাদের দু:খ্য, দুর্দশা ও ভোগান্তি সম্পর্কে জানাতেই মূলত এমন ব্যতিক্রমী আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান আয়োজকরা। একুশে পরিষদ নওগাঁর সভাপতি অ্যাড. ডি.এম. আব্দুল বারী বলেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের বর্বরোচিত অত্যাচার, নিপীড়ন, গণহত্যা থেকে বাচঁতে যুদ্ধের শুরু থেকে এপ্রিল মাসে পায়ে হেঁটে নওগাঁর রোড হয়ে হাজার হাজার শরণার্থীরা বালুরঘাটে আশ্রয় নেয়।সে সময় চলার পথে অনেকেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। সেসব চিত্র নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতেই এমন আয়োজন। একুশে পরিষদের পক্ষ থেকে দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে সঠিক ভাবে তুলে ধরার এমন ব্যতিক্রমী আয়োজন আগামীতেও অব্যাহত রাখা হবে।
১ বছর আগে
রাজশাহী প্রতিনিধি: আজ ১৩ এপ্রিল, রাজশাহীর চারঘাট গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের আজকের এই দিনে অস্ত্রসজ্জিত বর্বর পাকিস্থানী হানাদার বাহিনীর অতর্কিত হামলা ও গুলিবর্ষণে চারঘাট উপজেলার কয়েকটি গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক বেসামরিক মানুষ শহীদ হন। আহত হয় আরও কয়েকশত মানুষ। শুধু গুলি করে ক্ষান্ত হননি, পেট্রল ঢেলে মৃত শরীর আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছিলো পাক হানাদার বাহিনী। সে থেকে প্রতিবছর ১৩ এপ্রিল থানাপাড়াবাসীকে স্মরণ করিয়ে দেয় একাত্তরের ভয়ানক দিনের কথা।প্রত্যক্ষদর্শী থানাপাড়া গ্রামের রায়হান আলী জানান, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কাছ থেকে জীবন রক্ষার্থে গ্রাম ছেড়ে কয়েক হাজার নারী, পুরুষ ও শিশুরা সীমান্তবর্তী পদ্মা নদীর তীরে আশ্রয় গ্রহণ করে। হানাদার বাহিনী তৎকালীন পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার সংলগ্ন পদ্মা নদী তীরে গিয়ে এ সকল নারী, পুরুষ ও শিশুদের উপস্থিতি দেখে তাদেরকে ঘেরাও করে। অবশেষে নারী ও শিশুদের ছেড়ে দিলেও পুরুষদের আটকে রেখে তাদের উপর গুলি বর্ষণ করে। শুধু গুলি করেও ক্ষান্ত হয়নি হানাদার বাহিনী, মৃত্যু নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে পেট্রোল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। সেই নারকীয় হত্যাযজ্ঞের মধ্য দিয়ে পাকিস্থানী বাহিনী এ অঞ্চলে জেনোসাইড শুরু করে। এতে নিহত হন থানাপাড়া, কুঠিপাড়া, গৌরশহরপুর, বাবুপাড়া ও তৎকালীন পুলিশ ট্রেনিংয়ে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ প্রায় ২০০ নিরস্ত্র বেসামরিক পুরুষ।এসময় প্রতিটি পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তি বাবা, ভাই অথবা স্বামী কেউ না কেউ; এই গণহত্যার শিকার হন। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বিধবার গ্রাম হিসেবে পরিচিত পাওয়া থানাপাড়া গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের জন্য তৎকালীন ত্রাণ ও পুর্নবাসন মন্ত্রী ও জাতীয় নেতা শহীদ কামরুজ্জামানের সুপারিশে দা সোয়ালোজ, সুইডেন নামে বিদেশী সংস্থা আত্ম-কর্মসংস্থান সুযোগ করে দেয়, যা আজ অবধি চলমান রয়েছে। যেখানে এখনও কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছে শহীদ ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের প্রায় কয়েক শত নারী ও পুরুষ।বীর মুক্তিযোদ্ধা মোকাররম হোসেন বলেন, এই গণহত্যা দিনটি সরকারি দিবস হিসেবে জাতীয় স্বীকৃতি দেয়া উচিত। তাছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার সরকারিভাবে কোন ধরনের আর্থিক সহযোগীতা পায় না। কোন কোন সময় নামমাত্র কিছু বরাদ্দ থাকলেও সকল ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার পাচ্ছে না বলে তিনি জানান।দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ উপজেলা শাখা, থানাপাড়া সোয়ালোজ ও উপজেলার বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও সাধারণ মানুষ শহীদদের স্মৃতি সম্বলিত শহীদ মিনারে গিয়ে ফুল দিয়ে সম্মান জানান। শহীদদের স্বরণ করে নানা কর্মসূচি পালন করা হয়।
১ বছর আগে
জাহাঙ্গীর আলম, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে‘বীর নিবাস’ নির্মাণকাজে অনিয়মের পাঁচ মুক্তিযোদ্ধাদের দেওয়া অভিযোগের মিলেছে সত্যতা। নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী সরিয়ে নিয়ে চুক্তিপত্র অনুযায়ী কাজের জন্য চিঠি দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিব্বির আহমেদ।জানাগেছে, ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় বীর নিবাস নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। কিন্তু কাজ শুরুর পর থেকেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিম্নমানের বালু, ইট ও কাজের মান নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। কাজের মানুন্নয়ন ও অনিয়মের প্রতিকার চেয়ে উপজেলার পাঁচজন বীর মুক্তিযোদ্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের উপজেলা প্রকৌশলী, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের উপ-সহকারী প্রকৌশলীকে নিয়ে গঠিত তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন।উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে (দ্বিতীয় পর্যায়ে ) ফুলবাড়ী উপজেলায় চারটি প্যাকেজে ২০টি বাড়ি এবং ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে (তৃতীয় পর্যায়ে) ৬টি প্যাকেজে ৩৬জন অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের থাকার জন্য আবাসন নির্মাণের বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রতিটি বীর নিবাস নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ১৪ লাখ ১০ হাজার ৩৮২ টাকা।দ্বিতীয় পর্যায়ে পাঁচটি ঘরকে একটি প্যাকেজের আওতায় এনে ২০টি এবং তৃতীয় পর্যায়ে ৬টি ঘরকে একটি করে প্যাকেজের আওতায় এনে ৩৬টি বীর নিবাস নির্মাণের জন্য আলাদা আলাদা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে এই নির্মাণকাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ইতোমধ্যে দ্বিতীয় পর্যায়ের তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজ শেষ হয়েছে। মো. হারুন অর-রশিদ নামের এক ঠিকাদারের প্যাকেজের পাঁচটি কাজ অসমাপ্ত রয়েছে।অন্যদিকে তৃতীয় পর্যায়ের ৩৬টি বাড়ির মধ্যে ৬ জন ঠিকাদারের পাঁচজন ঠিকাদারের কাজ নিয়ে অভিযোগ না থাকলেও ঠিকাদার মো. হারুন অর-রশিদের কাজের নির্মাণ সামগ্রী ও মান নিয়ে অভিযোগ ওঠে। সরেজমিনে ঘুরে এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে দেওয়া তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযোগের প্রেক্ষিত তদন্ত কমিটি সাইট পরিদর্শন করে। এসময় তারা ইটের ফিল্ড টেস্ট করেন এবং এতে বেশিরভাগ পুরাতন এবং চুক্তিপত্র বহির্ভূত ইট দেখতে পায়। এছাড়াও সিসি ঢালাইয় ৩ ইঞ্চির স্থলে ২ ইঞ্চি ও ১ দশমিক ৭৫ ইঞ্চি পায় এবং প্রস্থ ২০ ইঞ্চির স্থলে ১৬ থেকে ১৭ ইঞ্চি পায়।বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু বক্কর সিদ্দিক, শামসুল হক জানান, প্রধানমন্ত্রী দয়া করে, মায়া করে অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধার জন্য ঘরের বাজেট দিয়েছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ঘর নির্মাণে অনিয়মের শেষ নেই। ঠিকাদারের লোকজন নিম্নমানের ইট-বালু দিয়ে কাজ করছে। বিল্ডিং ঘর তোলার জন্য সিসি ঢালাইয়েও কারচুপি করে পরিমাণে কম দিচ্ছে। কিছু বললেই কাজ বন্ধ করে দেওয়ার ভয় দেখায়। ঠিকাদার হারুন অর রশিদের কাজের মান একেবারে ভালো না। আমি এর প্রতিকার চাই।তদন্ত কমিটির সদস্য ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মজিবর রহমান বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযোগের প্রেক্ষিত সরেজমিনে তদন্ত করে নিম্নমানের ইট, বালু এবং সিসি ঢালাই কম দেওয়ার সত্যতা পেয়েছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে ঠিকাদার হারুন অর রশীদের নিম্নমানের কাজের সরেজমিন প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ঠিকাদার হারুন অর রশিদের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলে তার ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিব্বির আহমেদ জানান, বীর নিবাস নির্মাণে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ পেয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। তদন্ত কমিটির সরেজমিন প্রতিবেদনের আলোকে ঠিকাদারকে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী সরিয়ে নিয়ে চুক্তিপত্র অনুযায়ী কাজের জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে।
১ বছর আগে
স্টাফ রিপোর্টার: গোপালগঞ্জে জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে। ২৮ জানুয়ারি রোববার বেলা ১১ টায় জেলা পুলিশের আয়োজনে এ সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।গোপালগঞ্জ পুলিশ লাইন্সের ড্রিলশেডে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা পুলিশ সুপার আল-বেলী আফিফা।অনুষ্ঠানের শুরুতে মানবিক পুলিশ সুপার আল-বেলী আফিফা বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মোহাইমিনুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন গৌরবময় স্মৃতি কথা তুলে বক্তব্য রাখেন, মুকসুদপুর উপজেলা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ফিরোজ খান, গোপালগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার এম বদরুদ্দোজা বদর, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ লুৎফার রহমান বাচ্চু, গোপালগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. মুন্সী মো. আতিয়ার রহমান, লে. কর্নেল (অব.) গাজী বেলায়েত হোসেন, মুজিব বাহিনী প্রধান ইসমত কাদির গামা, পুলিশের সাবেক ডিআইজি এস এম মনিরুজামান, সাবেক ডিআইজি এস এম মাহফুজুল হক প্রমুখ।এসময় টুঙ্গিপাড়া পৌর মেয়র শেখ তোজাম্মেল হক টুটুল, কাশিয়ানী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোক্তার হোসেন, মুকসুদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান টুটুল, কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আয়নাল হোসেন শেখ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) কাজী মাহবুবুল আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. খায়রুল আলম, সহকারী পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. শফিকুল ইসলাম, গোপালগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আনিচুর রহমানসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তাগণ-সদস্যবৃন্দ এবং জেলায় বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।
১ বছর আগে