শফিকুজ্জামান খান মোস্তফা, টাঙ্গাইল: সবুজ পাতা ছাপিয়ে সোনালি রঙের ফুলে সেজেছে সোনালু গাছ। প্রতিটি গাছের গা থেকে যেনো হলুদ ঝরনা নেমে এসেছে। বাতাসে কিশোরীর কানের দুলের মতো দুলছে এ ফুল, আকৃষ্ট করছে পথচারীদের।টাঙ্গাইল পৌর শহরের ধুলেরচর মাদ্রাসার সামনের ডিসি লেকের পশ্চিম দিকের পাকা সিঁড়ির পাশে একটি, লেকের পাড়ের রাস্তার ধারে আরও দুটি ও উদ্যান তত্ত্ব অফিসের আঙিনায় আরও তিনটি সোনালু গাছ ফুলে ফুলে শোভিত হয়ে আছে। পাশের সড়ক দিয়ে চলাচলকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে মুগ্ধ করছে সোনালু ফুল গাছগুলো।এই সোনালু গাছ নানা নামে পরিচিত। সোনাইল, সোঁদাল, বান্দরলাঠি নামেও কেউ কেউ চেনেন এই গাছটিকে। তবে এর বৈজ্ঞানিক নাম ক্যাসিয়া ফিস্টুলা, ইংরেজি নাম গোল্ডেন শাওয়ার ট্রি।হাজার বছর আগেও সোনালু গাছ এ উপমহাদেশে ছিল। এ গাছের আদি নিবাস হলো ভারত, মিয়ানমার ও বাংলাদেশ। এর ফুল, ফল ও পাতা বানরের খুব প্রিয়। সোনালু কাঠের রং ইটের মতো লাল। ঢেঁকি ও সাঁকো বানানোর কাজেও এ গাছের কাঠ ব্যবহার করা হয়।এই ফুলের সৌন্দর্য প্রসঙ্গে পথচারী আমিন নোমান বলেন, এই সময়ে আমি যতবার এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করি, কিছুটা সময় হলেও এই ফুলের শোভা উপভোগ করি। এই লেকের পাড়ে আরও আছে কৃষ্ণচূড়া, পলাশসহ বেশ কিছু গাছ, যেগুলো সব সময়ই আমাকে কাছে টানে। এই শহরে আরও কিছু এই ধরনের গাছ লাগানো জরুরি।টাঙ্গাইল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ও কনস্ট্রাকশন ডিপার্টমেন্টের ষষ্ঠ সেমিস্টারের ছাত্র শৈবাল চৌধুরী বলেন, আমি জন্মসূত্রে কক্সবাজার জেলার হলেও পড়ালেখার কারণে টাঙ্গাইল পৌরসভার ধুলেরচর এলাকায় থাকি। যখনই আমি সময় পাই ডিসি লেকের এই ঘাটলায় বসে সোনালু ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করি। এই গাছগুলোর সামনে এসে দাঁড়ালেই মন ভালো হয়ে যায়।হাকিম মো. ইকবাল হোসেন জানান, সোনালু গাছের বাকল এবং পাতায় ঔষধি গুণ রয়েছে। ব্লাডপ্রেসারে নাক দিয়ে রক্ত পড়লে সোনালুর ফলমজ্জা আধা কাপ পানিতে মিশিয়ে তা ছেঁকে চিনি বা মধু দিয়ে পান করলে এই সমস্যার সমাধান হয়। অন্ত্রের সমস্যায় চার-পাঁচ গ্রাম ফলমজ্জা চার কাপ পানিতে সেদ্ধ করে ছেঁকে সকালে ও বিকালে পান করলে উপকার পাওয়া যায়। কোষ্ঠ্যকাঠিন্যও দূর হয়। ইউনানী চিকিৎসায় এই গাছের ব্যবহার রয়েছে।টাঙ্গাইল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. সাজাদুজ্জামান জানান, সোনালু একটি বনজ শোভা বর্ধনকারী গাছ। এটি পাখিদের আশ্রয়স্থল হিসেবেও কাজ করে। গাছের উজ্জ্বল হলুদ ফুল মৌমাছি ও প্রজাপতিদের আকর্ষণ করে পরাগায়নের সহযোগিতা করে থাকে। এই গাছ মূলত সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য লাগানো হয়ে থাকে। সোনালু গাছের সাথে কৃষ্ণচূড়া, পলাশ প্রভৃতি গাছ লাগালে আরও বেশি সৌন্দর্য বর্ধন করে থাকে।
১ বছর আগে
কাপ্তাই (রাঙামাটি) প্রতিনিধি: রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার ২নং রাইখালী ইউনিয়নের ডংনালা চন্দনি পাড়া নামক স্থানের মাটির নিচ থেকে পুঁতে রাখা হাতির মরদেহের হাড়-গোড় উদ্ধার করেছে বন বিভাগের সদস্যরা।৩ মার্চ রোববার কিকেল ৫ টায় বন বিভাগের সদস্যরা ওই স্থানে গিয়ে মাটি খনন করে হাতির নিচের ছোয়ালের অংশ, পায়ের হাড্ডিসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ উদ্ধার করে।বিষয়টি নিশ্চিত করে কাপ্তাই পাল্পউড বাগান বিভাগের রাইখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. জাহেদুল ইসলাম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পাওয়ার পর ওই স্থানে গিয়ে মাটি খনন করে তল্লাসী করা হয়। সেখানে হাতির মরদেহের হাঁড়সহ কয়েকটি অংশ খুঁজে পাওয়া।তিনি আরও জানান, ধারণা করা হচ্ছে স্থানীয় কিছু ব্যক্তি হাতিটি হত্যা করে মাংস ভক্ষণের পর হাড়গুলো সেখানে পুঁতে রেখে গেছে। এ বিষয়ে বন বিভাগ থেকে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হাতির মরদেহের অংশগুলো ময়না তদন্তের জন্য কাপ্তাই পশু হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
১ বছর আগে
রাবি প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্বরে প্রাণিবিদ্যা বিভাগ ও ভ্যালেন্ট টেক লিমিটেডের সহযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ড কনজারভেশন ক্লাব একদিনব্যাপী এক পাখি মেলার আয়োজন করেছে।২৬ ফেব্রুয়ারি সোমবার সকাল ৯টায় 'পাখি প্রকৃতির সৌন্দর্য, আনন্দের সঙ্গীদের বাচতে দিন' প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এ মেলা শুরু হয়। এরপর পাখি সংরক্ষণে গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে একটি র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ শেষে মেলা প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়।সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্টলে পাখির ছবির মধ্যে রয়েছে- কালোপিঠ গাংচিল, বাদামী ঝিল্লি, পালাসির গাংচিল, সাইবেরিয় শিলাফিদ্দা, লম্বাপা তিলাবাজ, নীল চটক, উইলসন্স স্টর্ম পেট্রল, লালঘাড় কাস্তেচোরা, তিলা লালবাটান, উল্টেঠুঁটি, ছোট বাবুবাটান, খুড়ুলে পেঁচা, কালোমাথা কাস্তেচোরা, ধলাকোমর মুনিয়া, ইউরেশিয় চামচ ঠুঁটি, বুটপা ঈগল, রঙিলা চ্যাগা, খয়রা মাথার সুঁইচোরা, সাদাগলা মানিকজোড়, সবুজ চাপাখি, তিলা লাল পা, ছোট ডুবুরী, ডাহুক, নদী টি টি, বামুন শালিক, জল ময়ূর, উদয়ী গয়ারসহ আরো বিভিন্ন রকমের পাখি।পাশের স্টলে রয়েছে পাখির প্রদর্শনী। সেখানে সারিবদ্ধভাবে সাজানো রয়েছে- পানকৌড়ি, জল কাক, তুর্কি বাজ, টিয়া, লক্ষ্মী পেঁচা, হুতুম পেঁচা, গরিয়াল মাছরাঙা, পাতি তিলি হাঁস, ডোরা কাঠবিড়ালি, কোয়েল, পাঁতি কাক, নিশি বক, বালি হাঁস, চোখাচোখি, সাতভাই প্রভৃতি। এইসব পাখিগুলো রাসায়নিক দিয়ে সংরক্ষণ করা।পাখি মেলার মূল আকর্ষণ ছিল স্কুলের বাচ্চাদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। ক্যাম্পাসের আশেপাশের বিভিন্ন স্কুলের নার্সারি থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। লম্বা সাদা কাগজে তারা ফুটিয়ে তুলে টিয়া, মাছরাঙা, বক, শালিক, ময়নাসহ বিভিন্ন পাখির ছবি। প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়।আয়োজনের সহকারী পরিচালক হাসনাত রনি বলেন, এ আয়োজনের উদ্দেশ্য হলো পাখির প্রতি মানুষের ভালোবাসার এবং সচেতনতা তৈরি করা। বাংলাদেশে একটা ছোট দেশ হওয়ায় জমির পরিমাণ কম, তাই পাখির সংখ্যা প্রতিনিয়তই কমছে। আমরা দেখি বর্তমান ছেলে-মেয়েরা কাক আর শালিকের পার্থক্য বুঝতে পারে না। এটা আমাদের ব্যর্থতা এই ব্যর্থতার দায় এড়ানোর জন্যই আমরা এ আয়োজন করছি।দর্শনার্থী তৌফিকুল ইসলাম বলেন, এটা নিসন্দেহে ভালো একটা উদ্যোগ। পাখি প্রকৃতির একটা অংশ আর প্রকৃতিকে সচল রাখার জন্য পাখির সাথে পরিচিত হওয়া আমাদের জরুরি। আমার পাখি ভালো লাগে আমি অনেক বৈচিত্র্যময় পাখি দেখলাম মনে হলো এগুলো জীবন্ত পাখি।জেনেটিক ইন্জিনিয়ারিং এন্ড বায়ো টেকনোলজি বিভাগের ২০-২১ সেশনের ছাত্র হাসিবুল শান্তবর্তমানে বাসস্থানের অভাবে পাখি বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এর আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য হলো সচেতনতার জন্য। মানুষকে পাখি সম্পর্কে জানানো এবং পাখিকে রক্ষা করার সাথে সাথে প্রকৃতিকে রক্ষা করা।
১ বছর আগে
মো. মাইনুল হক, নীলফামারী: কৃষি জমির মাটি কেটে পুকুর খনন করা হচ্ছে। আর এসব মাটি বিক্রি করা হচ্ছে ইটভাটায়। আবার অনেকে বাড়ির ভিটা তৈরির জন্যও এ মাটি কিনে নিচ্ছেন। এতে দিন দিন আশঙ্কাজনক হারে বিলীন হতে শুরু করেছে কৃষি জমি। প্রশাসনের নীরবতার কারণে ভূমি আইন অমান্য করে অবাধে ফসলি জমির মাটি বিক্রি করেই চলছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। এ যেন দেখার কেউ নেই!সরেজিমনে গিয়ে দেখা যায়, নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার উত্তর সোনা খুলির, নেছারিয়া স্কুলের সংলগ্ন, অলিয়ারের মোড়, জবান পাড়ার কুমারগাড়ী এলাকায় প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে অফিস বন্ধের দিনে জমির উর্বর মাটি ভেকু মেশিন দিয়ে কেটে অবৈধ প্রায় ১০-১৫ ট্রলি গাড়িতে মাটি তোলা হচ্ছে।জমির মালিক জিল্লুর চৌধুরী বলেন, এসব মাটি ইটভাটায় যাচ্ছে। মাটি কাটা শুরুর দিকে সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসিল্যাল্ড এসে দেখে গেছে। এরপর থেকে আমরা নিরাপদে মাটি কাটছি। কেউ আমাদের বাধা দিচ্ছে না।সৈয়দপুর উপজেলার৭নং ওয়াডের মেম্বার আবুল কালাম বলেন, এসব মাটি ইটভাটায় যাচ্ছে। ট্রক্টর চলাচলের জন্য ভালো রাস্তা গুলো ভেঙে যাচ্ছে।অপরদিকে আগে উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের ফকির পাড়ায় রাতের অন্ধকারে ভেকু দিয়ে জমির মাটি কেটে নাজমুল হাজীর ভাটায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।এ ছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় কৃষি জমির মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে বলে এলাকাবাসীর দাবি, মাছ চাষের কথা বলে পুকুর খনন করে বিঘার পর বিঘা আবাদি কৃষি জমির মাটি ভেকু দিয়ে কেটে ইটভাটা ও বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণকারীদের কাছে বিক্রি করছে, মাটি বিক্রেতারা।এসব মাটি অবৈধ ট্রলিতে করে নেওয়া-আনার ফলে অধিকাংশ গ্রামীণ কাচা-পাঁকা সড়কের বেহাল অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। সড়ক যতই মেরামত করুন, তাতে লাভ নেই। অবৈধ ট্রলি দিয়ে মাটি নেওয়া-আনা বন্ধ করা না হলে সড়কের বেহাল অবস্থা ভালো হবে না বলে দাবি এলাকাবাসীর।উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মুহাম্মদ ইসমাঈল বলেন, ভেকু দিয়ে কৃষি জমির মাটি কাটার বিষয় আমার জানা নেই। খোঁজ-খবর নিয়ে সব জায়গায় মাটি কাটা বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
১ বছর আগে