মধুপুরে আশা'র সদস্যদের কন্দাল জাতীয় ফসল চাষের প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত
মধুপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের মধুপুরে আশা'র সদস্যদের কন্দাল জাতীয় ফসল চাষের প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
৬ জুন বৃহস্পতিবার মধুপুর বীজ উৎপাদন খামার ট্রেনিং হল রুমে দিনব্যাপী কৃষক প্রশিক্ষণে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মধুপুর বীজ উৎপাদন খামারের আলু বীজ হিমাগারের উপ-পরিচালক অনুপ কুমার, মধুপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তাজবী নূর রাত্রী, আশা'র কৃষি কর্মকর্তা আশিকুর রহমান, মধুপুর অঞ্চলের সিনিয়র আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক মো. আবু বকর সিদ্দিক, কাকরাইদ অঞ্চলের সিনিয়র আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক মো. আবু হায়দার, কাকরাইদ ব্রাঞ্চের সিনিয়র ব্রাঞ্চ ম্যানেজার মো. দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।
প্রশিক্ষণে আশার সদস্যরা ফসল চাষ করে যাতে লাভবান হতে পারে, সে জন্য এ প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়।
মধুপুরের লাল মাটিতে বিভিন্ন ধরনের কন্দাল জাতীয় ফসল চাষ হয়ে থাকে। উর্বর লাল মাটিতে আশার যেসব সদস্য কন্দাল জাতীয় ফসল চাষ করেন তাদেরকে প্রশিক্ষণ দিয়ে এগিয়ে নিতে সহায়তার অংশ হিসেবে এ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। প্রশিক্ষণে আশার ৩০ জন সদস্য অংশ গ্রহণ করেন।
সংশ্লিষ্ট
স্টাফ রিপোর্টার, ফরিদপুর: পেঁয়াজের রাজধানী খ্যাত ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় এবছর গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে৷ উপজেলার প্রায় ১০ একর জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে পেঁয়াজের আবাদ হয়।জানা যায়, সালথা উপজেলা পাট ও পেঁয়াজের জন্য খুবই বিখ্যাত। বর্তমান চলছে পাটের মৌসুম। তারপরও গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে ঝুঁকে পড়েছেন অনেকেই।সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, হালি পেঁয়াজ তেমন ভালো না হলেও বীজ রোপণ করা পেঁয়াজ ভালোই লক্ষ করা যাচ্ছে জমিগুলোতে। গাছের গোড়ায় গোল আকারে নামতে শুরু করছে পেঁয়াজ।উপজেলার কৃষক অরুণ, মোতালেব, নয়ন, সেলিম নামে কয়েকজন চাষির সাথে কথা বললে তারা জানান, শীতকালে আমাদের এলাকায় প্রচুর পেঁয়াজের আবাদ হয়। তাই গ্রীষ্মকালেও আমরা পরীক্ষামূলক পেঁয়াজের আবাদ করেছি।তারা আরও জানান, পেঁয়াজের বীজ রোপণ করা ক্ষেতের পেঁয়াজ মোটামুটি ভালোই দেখা যাচ্ছে। গাছের গোড়ায় পেঁয়াজ নামতে শুরু করেছে। এটা ২০/২১ দিন পরে ক্ষেত থেকে উত্তোলন করা যাবে। এই গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের আবাদ কীভাবে করতে হবে? কীভাবে করলে ভালো ফলন পাবো সে বিষয়ে আমাদের আরো জানতে হবে । আশা করি, আগামীতে বেশি করে আবাদ করবো। ফরিদপুরের উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি অফিসার সুদীপ বিশ্বাস জানান, এ বছর পরীক্ষামূলকভাবে ১০ একর জমিতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে। কিছু ক্ষেতে ভালো হয়েছে। আর যেসব ক্ষেতে পানি জমে থাকে সেসব ক্ষেতের পেঁয়াজ ভালো হয়নি। তবে বেলে-দোঁআশ মাটিতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষের জন্য উপযোগী। হালি পেঁয়াজ রোপণের চেয়ে এই মৌসুমে পেঁয়াজের বীজ বপন করা ভালো।
রংপুর ব্যুরো: কৃষি মন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ এমপি বলেছেন, হাড়িভাঙ্গা আম ও সবজি সংরক্ষণের জন্য দেশের প্রথম বিশেষায়িত হিমাগার স্থাপন করা হবে রংপুরের মিঠাপুকুরে। সেই সাথে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে হাড়িভাঙ্গা আমের চাষ ও বাজারজাতকরণে মার্কেট লিংকেজ এবং আম চাষিদের প্রণোদনার আওতায় আনা হবে।২১ জুন শুক্রবার বিকেলে মিঠাপুকুর উপজেলার পদাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ প্রাঙ্গনে জিআই পণ্য হাড়িভাঙ্গা আম মেলা ও প্রদর্শনীর উদ্বোধন শেষে তিনি সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।কৃষিমন্ত্রী বলেন, হাড়িভাঙ্গা জিআই পণ্য হয়েছে তা বেশি বেশি করে প্রচার করতে হবে। তিনি আরও বলেন, আম চাষিদের ফসলের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।এর আগে কৃষিমন্ত্রী সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি, ফল-ফসলের ১২টি স্টল পরির্দশন করেন।জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, রংপুর-৫ মিঠাপুকুর আসনের সংসদ সদস্য জাকির হোসেন সরকার, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তার, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মাসুদ করিম, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার আবু জাফর, রংপুর রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মিজানুর রহমান ও জেলা পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) ফেরদৌস আলী চৌধুরী।
কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি: ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে জয়পুরহাটে কয়েকদিন থেকে টানা বৃষ্টিপাত হয়েছে। অতিরিক্ত এই বৃষ্টিপাতের কারণে উত্তরবঙ্গের শস্যভাণ্ডার খ্যাত জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার ফসলি মাঠগুলো প্রায় পানিতে ডুবে গেছে। জমে থাকা পানির কারণে ডুবে গেছে পাকা ও আধাপাকা ধান। অনেক জমিতে ডুবে যাওয়া ধান থেকে চারা বের হচ্ছে। তবে এমন সময়ে অতিরিক্ত অর্থ খরচ করেও মিলছে না ধান কাটার শ্রমিক। উপজেলাজুড়ে কষ্টার্জিত বোরো ফসল ঘরে তুলতে কৃষকরা এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।কালাই উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে এই উপজেলার বোরো আবাদ হয়েছে ১২ হাজার ৫৫ হেক্টর জমিতে। এতে ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৭৭ হাজার ৯৬৮.৫ মেট্রিক টন এবং চাল উৎপাদনের ৫১ হাজার ৯৭৯ মেট্রিক টন নির্ধারণ করা হয়েছে। আলু উৎপাদনের কারণে এই উপজেলায় দেরিতে ধান কাটা মাড়াই শুরু হয়েছে।সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার জিন্দারপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ কুঁজাইল, করিমপুর ও বেগুনগ্রাম, পুনট ইউনিয়নের পাঁচগ্রাম ও শিকটা গ্রাম, উদয়পুর ইউনিয়নের তেলিহার ও দুধাইল গ্রাম, আহম্মেদাবাদ ইউনিয়নের ঝামুটপুর, হাতিয়র ও হারুঞ্জা গ্রাম, মাত্রাই ইউনিয়নের উলিপুর ও বানদীঘিসহ বিভিন্ন গ্রামের ধানের জমিতে বৃষ্টির পানি জমে রয়েছে। শ্রমিক সংকটের কারণে এসব ধান কাটতে পারছেন না কৃষকরা। বাইরের কোনো জেলা থেকে এবার কৃষি শ্রমিক না আসায় শ্রমিকের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। শ্রমিকপ্রতি দৈনিক ৭০০/৮০০ টাকা দিয়েও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না।তেলিহার গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, জমির ধান পানিতে ডুবে গেছে। কিন্তু শ্রমিক নেই। দু-একজন যা পাওয়া যায় তারাও বেশি মজুরি চায়। প্রতিবছর রংপুর ও গাইবান্ধা থেকে ধান কাটার জন্য শ্রমিকরা আমাদের এখানে আসে। কিন্তু এবছর এখনো অধিকাংশ গৃহস্থের বাড়িতে কোনো শ্রমিক আসেনি।কালাই পৌর এলাকার নয়াপাড়া গ্রামের কৃষক সোহেল মিয়া বলেন, সবাই ধান কাটতে শ্রমিক খুঁজছে। গত বছর এক বিঘা জমির ধান কাটতে শ্রমিকের মজুরি দিতে হয়েছিল তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা। এবারে একই পরিমাণ জমির ধান কাটতে মজুরি দিতে হচ্ছে পাঁচ হাজার থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা। এরপরও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে অনেকেই নিজেই যতটুকু পারছেন ধান জমি থেকে কেটে রাখছেন।কালাই পৌরসভার সরদারপাড়া গ্রামের কৃষক আমিরুল ইসলাম বলেন, গত কয়েকদিনের বৃষ্টির কারণে জমির পাকা ধান পানিতে ডুবে নষ্ট হওয়ার পথে। শ্রমিকের অভাবে ধান কাটতে পারছি না। এই ধান যদি দুই-চার দিনের মধ্যে কাটতে না পারি তাহলে অনেক লোকসান হবে।কালাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অরুণ কুমার রায় বলেন, চলতি বোরো মৌসুমের শুরু থেকে কৃষি বিভাগের মাঠকর্মীসহ কর্মকর্তারা কৃষকদের নানা দিকনির্দেশনা দিয়ে উৎসাহিত করেছে। মাঠের শ্রমিক সংকটের কারণে ধান কাটা নিয়ে কৃষকরা যে সমস্যায় পড়েছেন তা হয়তো বেশিদিন থাকবে না। ঈদের পরে শ্রমিকরা কাজে যোগ দিতে চলে আসবে বলে তিনি মনে করেন।
নড়াইল প্রতিনিধি: নড়াইলে বস্তা পদ্ধতিতে রাস্তার পাশে অনাবাদি ও অকৃষি জমিতে চাষাবাদ করা হচ্ছে বিভিন্ন প্রকার সবজি। চাষ অনুপযোগী এসব জমিতে সবজি চাষ করে কৃষকরা বেশ সফল হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষক ও কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা।১০ জুন সোমবার নড়াইল পৌরসভার ধোপাখোলা এলাকায় নড়াইল-ফুলতলা সড়কের পাশে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় বস্তা পদ্ধতিতে সবজি চাষের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। মাটিভরা বস্তায় সবজি গাছ লাগানো হয়েছে। সারি সারি বস্তা শোভা পাচ্ছে রাস্তার পাশে। আর তার উপরে মাচায় ঝুলছে করোলা, লাউ, কুমড়া, উচ্ছে, চিচিঙ্গাসহ নানা প্রকার সবজি।ধোপাখোলা এলাকার কৃষক সুষম বিশ্বাস জানান, এ পদ্ধতিতে সবজি চাষ করে তিনি অনেক লাভবান হয়েছেন। ওই এলাকার আরেক কৃষক স্বপন বিশ্বাস বলেন, বস্তায় সবজি চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। কৃষি বিভাগ কৃষকদের প্রণোদনা দেয়ার পাশাপশি এভাবে সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ করছেন। এতে করে নড়াইলে দিন দিন বস্তা পদ্ধতিতে সবজি চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।নড়াইল সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মো. রোকনুজ্জামান জানান, মাটির সাথে পরিমাণ মতো খৈল, রাসায়নিক ও জৈব সার মিশিয়ে বস্তায় ভরে ৩ ফুট উঁচু করা হয়। এর কয়েকদিন পর ওই বস্তায় লতা জাতীয় সবজি গাছের চারা বা বীজ বপন করা হয়। আর বস্তাগুলোর উপরে বাঁশ বা অন্য কিছু দিয়ে মাচা তৈরি করা হয়। ওই মাচার উপরে গাছ উঠিয়ে দেয়া হয়। এতে কম খরচে অধিক মুনাফা হয়।জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্যান) কৃষিবিদ মো. জাহিদুল ইসলাম বিশ্বাস বলেন, জলাবদ্ধ, অনাবাদি, চাষ অনুপযোগী পতিত জমিতে কম খরচে বেশি মুনাফা পাওয়ায় কৃষকরা অনুপ্রাণিত হচ্ছেন বস্তা পদ্ধতিতে সবজি চাষে। ইতোমধ্যে কেউ কেউ বাণিজ্যিকভাবে এ পদ্ধতিতে সবজি চাষ শুরু করেছেন। এভাবে সবজি চাষে একদিকে যেমন ভালো ফলন হচ্ছে, অপরদিকে বাজারের চাহিদাও মিটছে।জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিচালক কৃষিবিদ মো. আশেক পারভেজ বলেন, কৃষি বিভাগ সার্বক্ষণিক কৃষকদের পাশে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ এক ইঞ্চি জমিও যেন ফাঁকা না থাকে, সে আদেশ প্রতিপালনে বস্তা পদ্ধতিতে সবজি চাষের মতো এ ধরনের উদ্যোগ ও কার্যক্রম সবসময় অব্যাহত থাকবে।
মধুপুরে আশা'র সদস্যদের কন্দাল জাতীয় ফসল চাষের প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত
সংশ্লিষ্ট
স্টাফ রিপোর্টার, ফরিদপুর: পেঁয়াজের রাজধানী খ্যাত ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় এবছর গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে৷ উপজেলার প্রায় ১০ একর জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে পেঁয়াজের আবাদ হয়।জানা যায়, সালথা উপজেলা পাট ও পেঁয়াজের জন্য খুবই বিখ্যাত। বর্তমান চলছে পাটের মৌসুম। তারপরও গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে ঝুঁকে পড়েছেন অনেকেই।সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, হালি পেঁয়াজ তেমন ভালো না হলেও বীজ রোপণ করা পেঁয়াজ ভালোই লক্ষ করা যাচ্ছে জমিগুলোতে। গাছের গোড়ায় গোল আকারে নামতে শুরু করছে পেঁয়াজ।উপজেলার কৃষক অরুণ, মোতালেব, নয়ন, সেলিম নামে কয়েকজন চাষির সাথে কথা বললে তারা জানান, শীতকালে আমাদের এলাকায় প্রচুর পেঁয়াজের আবাদ হয়। তাই গ্রীষ্মকালেও আমরা পরীক্ষামূলক পেঁয়াজের আবাদ করেছি।তারা আরও জানান, পেঁয়াজের বীজ রোপণ করা ক্ষেতের পেঁয়াজ মোটামুটি ভালোই দেখা যাচ্ছে। গাছের গোড়ায় পেঁয়াজ নামতে শুরু করেছে। এটা ২০/২১ দিন পরে ক্ষেত থেকে উত্তোলন করা যাবে। এই গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের আবাদ কীভাবে করতে হবে? কীভাবে করলে ভালো ফলন পাবো সে বিষয়ে আমাদের আরো জানতে হবে । আশা করি, আগামীতে বেশি করে আবাদ করবো। ফরিদপুরের উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি অফিসার সুদীপ বিশ্বাস জানান, এ বছর পরীক্ষামূলকভাবে ১০ একর জমিতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে। কিছু ক্ষেতে ভালো হয়েছে। আর যেসব ক্ষেতে পানি জমে থাকে সেসব ক্ষেতের পেঁয়াজ ভালো হয়নি। তবে বেলে-দোঁআশ মাটিতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষের জন্য উপযোগী। হালি পেঁয়াজ রোপণের চেয়ে এই মৌসুমে পেঁয়াজের বীজ বপন করা ভালো।
রংপুর ব্যুরো: কৃষি মন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ এমপি বলেছেন, হাড়িভাঙ্গা আম ও সবজি সংরক্ষণের জন্য দেশের প্রথম বিশেষায়িত হিমাগার স্থাপন করা হবে রংপুরের মিঠাপুকুরে। সেই সাথে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে হাড়িভাঙ্গা আমের চাষ ও বাজারজাতকরণে মার্কেট লিংকেজ এবং আম চাষিদের প্রণোদনার আওতায় আনা হবে।২১ জুন শুক্রবার বিকেলে মিঠাপুকুর উপজেলার পদাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ প্রাঙ্গনে জিআই পণ্য হাড়িভাঙ্গা আম মেলা ও প্রদর্শনীর উদ্বোধন শেষে তিনি সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।কৃষিমন্ত্রী বলেন, হাড়িভাঙ্গা জিআই পণ্য হয়েছে তা বেশি বেশি করে প্রচার করতে হবে। তিনি আরও বলেন, আম চাষিদের ফসলের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।এর আগে কৃষিমন্ত্রী সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি, ফল-ফসলের ১২টি স্টল পরির্দশন করেন।জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, রংপুর-৫ মিঠাপুকুর আসনের সংসদ সদস্য জাকির হোসেন সরকার, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তার, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মাসুদ করিম, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার আবু জাফর, রংপুর রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মিজানুর রহমান ও জেলা পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) ফেরদৌস আলী চৌধুরী।
কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি: ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে জয়পুরহাটে কয়েকদিন থেকে টানা বৃষ্টিপাত হয়েছে। অতিরিক্ত এই বৃষ্টিপাতের কারণে উত্তরবঙ্গের শস্যভাণ্ডার খ্যাত জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার ফসলি মাঠগুলো প্রায় পানিতে ডুবে গেছে। জমে থাকা পানির কারণে ডুবে গেছে পাকা ও আধাপাকা ধান। অনেক জমিতে ডুবে যাওয়া ধান থেকে চারা বের হচ্ছে। তবে এমন সময়ে অতিরিক্ত অর্থ খরচ করেও মিলছে না ধান কাটার শ্রমিক। উপজেলাজুড়ে কষ্টার্জিত বোরো ফসল ঘরে তুলতে কৃষকরা এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।কালাই উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে এই উপজেলার বোরো আবাদ হয়েছে ১২ হাজার ৫৫ হেক্টর জমিতে। এতে ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৭৭ হাজার ৯৬৮.৫ মেট্রিক টন এবং চাল উৎপাদনের ৫১ হাজার ৯৭৯ মেট্রিক টন নির্ধারণ করা হয়েছে। আলু উৎপাদনের কারণে এই উপজেলায় দেরিতে ধান কাটা মাড়াই শুরু হয়েছে।সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার জিন্দারপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ কুঁজাইল, করিমপুর ও বেগুনগ্রাম, পুনট ইউনিয়নের পাঁচগ্রাম ও শিকটা গ্রাম, উদয়পুর ইউনিয়নের তেলিহার ও দুধাইল গ্রাম, আহম্মেদাবাদ ইউনিয়নের ঝামুটপুর, হাতিয়র ও হারুঞ্জা গ্রাম, মাত্রাই ইউনিয়নের উলিপুর ও বানদীঘিসহ বিভিন্ন গ্রামের ধানের জমিতে বৃষ্টির পানি জমে রয়েছে। শ্রমিক সংকটের কারণে এসব ধান কাটতে পারছেন না কৃষকরা। বাইরের কোনো জেলা থেকে এবার কৃষি শ্রমিক না আসায় শ্রমিকের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। শ্রমিকপ্রতি দৈনিক ৭০০/৮০০ টাকা দিয়েও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না।তেলিহার গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, জমির ধান পানিতে ডুবে গেছে। কিন্তু শ্রমিক নেই। দু-একজন যা পাওয়া যায় তারাও বেশি মজুরি চায়। প্রতিবছর রংপুর ও গাইবান্ধা থেকে ধান কাটার জন্য শ্রমিকরা আমাদের এখানে আসে। কিন্তু এবছর এখনো অধিকাংশ গৃহস্থের বাড়িতে কোনো শ্রমিক আসেনি।কালাই পৌর এলাকার নয়াপাড়া গ্রামের কৃষক সোহেল মিয়া বলেন, সবাই ধান কাটতে শ্রমিক খুঁজছে। গত বছর এক বিঘা জমির ধান কাটতে শ্রমিকের মজুরি দিতে হয়েছিল তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা। এবারে একই পরিমাণ জমির ধান কাটতে মজুরি দিতে হচ্ছে পাঁচ হাজার থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা। এরপরও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে অনেকেই নিজেই যতটুকু পারছেন ধান জমি থেকে কেটে রাখছেন।কালাই পৌরসভার সরদারপাড়া গ্রামের কৃষক আমিরুল ইসলাম বলেন, গত কয়েকদিনের বৃষ্টির কারণে জমির পাকা ধান পানিতে ডুবে নষ্ট হওয়ার পথে। শ্রমিকের অভাবে ধান কাটতে পারছি না। এই ধান যদি দুই-চার দিনের মধ্যে কাটতে না পারি তাহলে অনেক লোকসান হবে।কালাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অরুণ কুমার রায় বলেন, চলতি বোরো মৌসুমের শুরু থেকে কৃষি বিভাগের মাঠকর্মীসহ কর্মকর্তারা কৃষকদের নানা দিকনির্দেশনা দিয়ে উৎসাহিত করেছে। মাঠের শ্রমিক সংকটের কারণে ধান কাটা নিয়ে কৃষকরা যে সমস্যায় পড়েছেন তা হয়তো বেশিদিন থাকবে না। ঈদের পরে শ্রমিকরা কাজে যোগ দিতে চলে আসবে বলে তিনি মনে করেন।
নড়াইল প্রতিনিধি: নড়াইলে বস্তা পদ্ধতিতে রাস্তার পাশে অনাবাদি ও অকৃষি জমিতে চাষাবাদ করা হচ্ছে বিভিন্ন প্রকার সবজি। চাষ অনুপযোগী এসব জমিতে সবজি চাষ করে কৃষকরা বেশ সফল হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষক ও কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা।১০ জুন সোমবার নড়াইল পৌরসভার ধোপাখোলা এলাকায় নড়াইল-ফুলতলা সড়কের পাশে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় বস্তা পদ্ধতিতে সবজি চাষের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। মাটিভরা বস্তায় সবজি গাছ লাগানো হয়েছে। সারি সারি বস্তা শোভা পাচ্ছে রাস্তার পাশে। আর তার উপরে মাচায় ঝুলছে করোলা, লাউ, কুমড়া, উচ্ছে, চিচিঙ্গাসহ নানা প্রকার সবজি।ধোপাখোলা এলাকার কৃষক সুষম বিশ্বাস জানান, এ পদ্ধতিতে সবজি চাষ করে তিনি অনেক লাভবান হয়েছেন। ওই এলাকার আরেক কৃষক স্বপন বিশ্বাস বলেন, বস্তায় সবজি চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। কৃষি বিভাগ কৃষকদের প্রণোদনা দেয়ার পাশাপশি এভাবে সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ করছেন। এতে করে নড়াইলে দিন দিন বস্তা পদ্ধতিতে সবজি চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।নড়াইল সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মো. রোকনুজ্জামান জানান, মাটির সাথে পরিমাণ মতো খৈল, রাসায়নিক ও জৈব সার মিশিয়ে বস্তায় ভরে ৩ ফুট উঁচু করা হয়। এর কয়েকদিন পর ওই বস্তায় লতা জাতীয় সবজি গাছের চারা বা বীজ বপন করা হয়। আর বস্তাগুলোর উপরে বাঁশ বা অন্য কিছু দিয়ে মাচা তৈরি করা হয়। ওই মাচার উপরে গাছ উঠিয়ে দেয়া হয়। এতে কম খরচে অধিক মুনাফা হয়।জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্যান) কৃষিবিদ মো. জাহিদুল ইসলাম বিশ্বাস বলেন, জলাবদ্ধ, অনাবাদি, চাষ অনুপযোগী পতিত জমিতে কম খরচে বেশি মুনাফা পাওয়ায় কৃষকরা অনুপ্রাণিত হচ্ছেন বস্তা পদ্ধতিতে সবজি চাষে। ইতোমধ্যে কেউ কেউ বাণিজ্যিকভাবে এ পদ্ধতিতে সবজি চাষ শুরু করেছেন। এভাবে সবজি চাষে একদিকে যেমন ভালো ফলন হচ্ছে, অপরদিকে বাজারের চাহিদাও মিটছে।জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিচালক কৃষিবিদ মো. আশেক পারভেজ বলেন, কৃষি বিভাগ সার্বক্ষণিক কৃষকদের পাশে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ এক ইঞ্চি জমিও যেন ফাঁকা না থাকে, সে আদেশ প্রতিপালনে বস্তা পদ্ধতিতে সবজি চাষের মতো এ ধরনের উদ্যোগ ও কার্যক্রম সবসময় অব্যাহত থাকবে।
মন্তব্য করুন