প্রকাশ : ৩০ মে ২০২৩ ০৩:১৯ পিএম
নীলফামারী বিআরটিয়েতে অনিয়ম, দুর্নীতি এবং খামখেয়ালির অভিযোগ
মোঃ মাইনুল হক , নীলফামারী প্রতিনিধি: বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) নীলফামারী জেলা কার্যালয়ে দুর্নীতি, অনিয়ম এবং খামখেয়ালির অভিযোগ পাওয়া গেছে। গাড়ির লাইসেন্স, ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং বৈধ কাগজপত্র থাকার পরেও আগত সেবা গ্রহীতাদের হয়রানি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে এখানকার কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে। দালালদের দৌরাত্বে এ অফিসে আগত সেবা গ্রহীতার এখন জিম্মি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, নীলফামারী বিআরটিয়ের সবকিছুই নিয়ন্ত্রন করছে এখানকার দালালরা। তাদেরকে সাহায্য করছে এখানকার এক শ্রেণির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীর। তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় দালালদের দৌরাত্বে সেবাগ্রহীতারা বাধ্য হচ্ছেন লাইসেন্স ইস্যু, নবায়ন ও কাগজপত্র জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত অর্থ দিতে।
কথা হয় সেবা নিতে আসা লক্ষীচাপ ইউনিয়নের রবীন্দ্রনাথ রায়ের সাথে। তিনি বলেন, আমার গাড়ির লাইসেন্স করতে কাগজপত্র জমা দেয়ার জন্য বিআরটিয়েতে আসছি। সব কাগজপত্র ঠিক থাকার পরও তারা আমার কাগজ আজকে জমা না নিয়ে বলে আজ হবেনা কালকে আসেন। কিন্তু আমার সাথে আসা আরেকজন আমার সামনেই দালালের মাধ্যমে কোন বাধা ছাড়াই কাগজপত্র জমা দিলো। আমি চেয়ে চেয়ে দেখলাম। নিজেকে এত অসহায় মনে হচ্ছে, ভাষায় প্রকাশ করতে পারবোনা। আমি কাউকে বাড়তি টাকা দেইনি বলে তারা ইচ্ছেকরে আমাকে হয়রানি করছে।
কথা হয় আরেকজন সেবা গ্রহীতা বাসুদেব রায়ের সাথে। তিনি বলেন, আমি ২০২১ সালে ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য পরীক্ষা দিয়ে উত্তির্ন হই। তারপর ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য কাগজ জমা দিতে এসে দীর্ঘ সময় লাইনে দাড়িয়ে ছিলাম। এমন সময় আমার পরে এসেও কয়েকজন লাইনে না দাড়িয়ে আমার আগে কাগজ জমা দেয়। এতে আমি প্রতিবাদ করায় আমাকে হুমকি দেয় এখানকার কর্মকর্তারা। এ সময় তারা আমাকে নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করতে থাকে। এভাবে কিছুক্ষন বাকবিতণ্ডার পর ভেতর থেকে পিয়ন এসে আমার কাগজ জমা নেয়। পরে আমি জমার রশিদ চাইলে আমাকে হুমকি দিয়ে বলে বাড়ি যান, আপনার কাজ হবে না। ২০২১ সাল পেরিয়ে এখন ২০২৩ সালের মাঝামাঝি। তারা আমাকে এখন বলে আবার ড্রাইভিং লাইসেন্স পরিক্ষা দিতে। এখন আমি কি করবো বলেন?
গুরতর এমন অভিযোগের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হয় নীলফামারী বিআরটিয়ের সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ার) মো. ফারুক আলমের কাছে। তিনি বলেন, যে অভিযোগগুলো করা হয়েছে তা সঠিক নয়। আমরা স্বচ্ছতার সাথে কাজ করি। বাসুদেব রায়কে পাস করার পরও আবার কেনো পরীক্ষা দিতে বলা হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের বিআরটিয়ের সার্ভারের জটিলতা থাকার কারণে তার লাইসেন্সের কাজটি হয় নি। তাই নতুন করে তাকে আবারও পরীক্ষা দিতে হবে।
এমন অভিযোগের ব্যপারে এশিয়ান টিভি অনলাইনের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোজাম্মেল হক রাসেলের কাছে। তিনি বলেন, পরীক্ষায় পাস করার পরও বাসুদেব রায়ের লাইসেন্স না পাওয়ার সম্পুর্ন দায়ভার বিআরটিয়ের। পুনরায় তাকে ড্রাইভিং লাইসেন্সের পরীক্ষা দিতে হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষায় পাস না করে কারও লাইসেন্স পাওয়ার সুযোগ নেই। সুতরাং বাসুদেব রায়কে আবারও ড্রাইভিং লাইসেন্স পরিক্ষা দিতে হবে।
...
প্রকাশ : ২ বছর আগে
আপডেট : ৪ মাস আগে
নীলফামারী বিআরটিয়েতে অনিয়ম, দুর্নীতি এবং খামখেয়ালির অভিযোগ