প্রকাশ : ২১ আগস্ট ২০২৩ ০২:২০ এএম
শরীরে এখনও ৪০টি স্প্লিন্টার বয়ে বেড়াচ্ছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ
রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় এখনও শরীরে ৪০টি স্প্লিন্টার বয়ে বেড়াচ্ছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি। গ্রেনেড হামলার ভয়াবহতা ও সেদিনের দুঃসহ কষ্টের দিনগুলো তিনি এখনো ভুলতে পারেননি। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার ৪৯১ জন সাক্ষীর মধ্যে তিনিও অন্যতম। দেশকে নেতৃত্ব হারা করতেই এই হামলা বলে মনে করেন তিনি।
জানা যায়, গ্রেনেড হামলার মুহুর্তে তিনি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য অস্থায়ীভাবে ট্রাকের উপর তৈরিকৃত মঞ্চের পাশেই ছিলেন। ঘাতকদের গ্রেনেড হামলা শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনিসহ শেখ হাসিনার পাশে থাকা সিনিয়র আওয়ামী লীগ নেতারা মানব দেয়াল রচনা করে শেখ হাসিনাকে রক্ষার চেষ্টা করেন। এসময় তার শরীরে গ্রেনেডের অসংখ্য স্প্লিন্টার বিদ্ধ হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তৎকালীন দুই নারী নেত্রীর সহযোগিতায় তিনি প্রথমে ঢাকার সিকদার মেডিকেলে ভর্তি হন। সেখানে ৮ দিন থাকার পর ২৯ আগস্ট তিনি উন্নত চিকিৎসার জন্য বেলজিয়ামে যান। সেখানে কয়েকটি স্প্রিন্টার বের করা সম্ভব হলেও এখনও শরীরে ৪০টি স্প্লিন্টার তিনি বয়ে বেড়াচ্ছেন।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার রাজ সাক্ষী হিসেবে তিনি ২০১৫ সালের ৪ মে ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডে অবস্থিত ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে সাক্ষ্য প্রদান করেন। ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নুর উদ্দিনকে সাক্ষ্য প্রদানকালে তিনি বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা এবং আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করাই ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল।
ড. হাছান মাহমুদ এমপি বলেন, সেদিন ঘটনাস্থলে তিনি উপস্থিত ছিলেন। ওইদিন বিষ্ফোরিত আর্জেস গ্রেনেডের অসংখ্য স্প্লিন্টার তার শরীরে ঢুকে যায়। চিকিৎসায় কিছু স্প্রিন্টার বের করা হয়। এখনো অন্তত ৪০টি স্প্লিন্টার তার শরীরে রয়ে গেছে। যেগুলো বের করতে গেলে তার নার্ভ কেটে বের করতে হবে। ফলে তার মুত্যুও হতে পারে। তাই তিনি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বাকি স্প্রিন্টার বের করেননি।
উল্লেখ্য, তৎকালীন শেখ হাসিনার একান্ত সহকারী ড. হাছান মাহমুদ ছাত্রজীবনে চট্টগ্রাম মহসিন কলেজ ছাত্রলীগের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। শেখ হাসিনার নির্দেশে পিএইচডি করতে বেলজিয়াম যান। সেখানে বেলজিয়াম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পরে দীর্ঘদিন সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এসময় বাংলাদেশের আলোচিত আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যাকাণ্ড নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নে তিনি নিন্দা প্রস্তাব উত্থাপন করেন। তৎকালীন জোট সরকারের বিভিন্ন দমন পীড়ন ও মানবাধিকার লংঘনের ঘটনায় বহির্বিশ্বে তিনি কূটনৈতিক তৎপরতা চালান। পরে পিএইচডি অর্জন শেষে দেশে ফিরে শেখ হাসিনার একান্ত সহকারীর দায়িত্ব পালন করেন।
তৎকালীন অর্থমন্ত্রী শাহ এস এম কিবরিয়ার সাথে ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে মনিটরিং সেলে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। পরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পরিবেশ ও বন বিষয়ক সম্পাদক হন। পরবর্তীতে তৎকালীন বিরোধী দলের একজন নেতা হিসেবে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে নেতৃত্ব দেন। এজন্য তাকে মুখোমুখি হতে হয়েছে নিত্য নতুন হুমকির। আর এই হুমকি নিয়েই শেখ হাসিনার মিশন-ভিশন বাস্তবায়নে এগিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান নেতা-কর্মীরা।
...
প্রকাশ : ১ বছর আগে
আপডেট : ৪ মাস আগে
শরীরে এখনও ৪০টি স্প্লিন্টার বয়ে বেড়াচ্ছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ