প্রকাশ : ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ০৬:১৩ এএম
গাইবান্ধায় ২ কোটি টাকার ভাগ বাটোরা নিয়ে দ্বন্দ্ব, মৃত্যুর ২ দিন পর লাশ দাফন
গাইবান্ধা প্রতিনিধি: জমি বিক্রি করে ব্যাংকে রাখা প্রায় ২ কোটি টাকার ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্বের কারণে মৃত্যুর দুই দিন পর মোতাহার আলী (৭০) নামে এক ব্যক্তির মরদেহ দাফন করা হয়েছে। নিঃসন্তান এই ব্যক্তির দেনা-পাওনা ও নগদসহ ব্যাংকের জমা টাকার বিষয়ে তার স্ত্রী মাসুমা বেগমের সঙ্গে জেঠাতো ভাই সেকেন্দার আলী মুন্সি ও ভাতিজা মানিক মিয়ার দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। এর জেরে তার মরদেহ দাফনে তারা বাধা দিচ্ছিল। এতে বাড়ির উঠানে পড়ে ছিল মরদেহ।
অবশেষে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পুলিশের সহায়তায় ২২ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে নিজ বাড়িতে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হয়।
ঘটনাটি ঘটেছে গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার বেতকাপা ইউনিয়নের সাকোয়া গ্রামে। মোতাহার আলী গণপূর্তের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী (হেড ক্লার্ক) ছিলেন। দাম্পত্য জীবনে নিঃসন্তান মোতাহার আলী স্ত্রী মাসুমা বেগমকে নিয়ে ঢাকায় কলাবাগান এলাকায় বসবাস করতেন।
গত ২১ ফেব্রুয়ারি বুধবার ভোর ৫টার দিকে ঢাকার ধানমন্ডির কলাবাগান এলাকার ভাড়া বাসায় মারা যান মোতাহার। তিনি দীর্ঘদিন ধরে অ্যাজমা ও ক্যান্সার রোগে ভুগছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, মৃত্যুর পর মোতাহার আলীর মরদেহ দাফনের জন্য অ্যাম্বুলেন্সে করে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসেন স্ত্রী মাসুমা বেগম। ওই দিন সন্ধ্যার দিকে মরদেহ বাড়িতে পৌঁছানোর পর দাফনে আপত্তি জানান জেঠাতো ভাই সেকেন্দার আলী মুন্সি ও ভাতিজা মানিকসহ পরিবারের লোকজন। এ সময় তারা মাসুমা বেগমের কাছে মোতাহার আলীর কাছে থাকা নগদসহ জমি বিক্রির ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা কোথায় কোন ব্যাংকে আছে তা জানতে চান।
এ নিয়ে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হলে মরদেহ দাফনে বাধা দেন। এতে তার মরদেহ নিজ বাড়ির উঠানে পড়ে থাকে। স্থানীয়রা চেষ্টা করেও দ্বন্দ্বের নিরসন করতে পারেননি।
জেঠাতো ভাই-ভাতিজাদের অভিযোগ, কিছু দিন আগে মোতাহার আলী তার নিজ নামের জমি ২ কোটি টাকা বিক্রি করেন। সেই টাকা স্ত্রীর নামে ব্যাংকে রাখেন। পরে মাসুমা বেগম গোপনে ব্যাংক থেকে এক কোটি টাকা উত্তলন করেন।
অবশেষে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে মরদেহ দাফন না হওয়ার ঘটনা জানতে পারেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পলাশবাড়ী থানা পুলিশ। পরে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে বৈঠক করে উভয়কে নিয়ে একটি সমঝোতার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর তাদের উপস্থিতিতে নিজ বাড়ির উঠানে জানাজা নামাজ শেষে মোতাহার আলীর মরদেহ দাফন করা হয়।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বেতকাপা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নিঃসন্তান মোতাহার আলীর ভাই-ভাতিজারা মরদেহ দাফনে আপত্তি জানানোর কারণে মরদেহ বাড়ির উঠানে ছিল। মূলত তার দেনাপাওনা এবং সম্পদ বিক্রির প্রায় দুই কোটি টাকা নিয়ে তার স্ত্রী মাসুমা বেগমের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়ান জেঠাতো ভাই সেকেন্দার আলী মুন্সিসহ পরিবারের লোকজন। অবশেষে উভয়কে নিয়ে পারিবারিকভাবে অর্থ সংক্রান্ত দ্বন্দ্বের বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে। মোতাহার আলীর স্ত্রী মামুমা বেগম তার ভাই-ভাতিজাদের ৬০ লাখ টাকা ফেরতের আশ্বাস দিয়েছেন। এরপরই নিজ বাড়িতে জানাজা শেষে মরদেহ দাফন করা হয়েছে।
...
প্রকাশ : ১ বছর আগে
আপডেট : ৪ মাস আগে
গাইবান্ধায় ২ কোটি টাকার ভাগ বাটোরা নিয়ে দ্বন্দ্ব, মৃত্যুর ২ দিন পর লাশ দাফন