চার লেনের রাস্তা নির্মাণের প্রকল্প বন্ধের দাবিতে ছাত্রফ্রন্টের মানববন্ধন
বাকৃবি প্রতিনিধি: বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) অভ্যন্তরের একটি দুই লেনের রাস্তাকে চার লেনের রাস্তায় রূপান্তরিত করার কাজ চলমান রয়েছে। নতুন করে রাস্তা নির্মাণের জন্য ওই রাস্তার একপাশের সকল গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। ওই বৃক্ষ নিধনের প্রতিবাদ এবং বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার ভিতর দিয়ে চার লেনের রাস্তা নির্মাণের প্রকল্প বন্ধের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট বাকৃবি শাখা।
৯ জুন রোববার দুপুর ১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুল জব্বার মোড়ে ওই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট বাকৃবি শাখার সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় রায়ের সঞ্চালনায় ও সভাপতি রিফা সজিদার সভাপতিত্বে ওই মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন গ্রন্থাগার বিষয়ক সম্পাদক পুষ্পিতা ভট্টাচার্য, বিজ্ঞান গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আল জাবের প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, দীর্ঘদিন যাবত ক্যাম্পাসে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের নামে অপরিকল্পিতভাবে অসংখ্য গাছ কাটা হয়েছে। এভাবে অপরিকল্পিত বৃক্ষ নিধন ক্যাম্পাসের সামগ্রিক পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ। যেখানে সারা পৃথিবীতে সবুজায়ন নীতি গ্রহণের দাবি উঠছে, সেখানে দেশের কৃষি শিক্ষার অন্যতম উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নির্বিচার বৃক্ষ নিধন চলছে।
উন্নয়নের এই ব্যাখ্যার সাথে দ্বিমত জানিয়ে বক্তারা বলেন, উন্নয়ন শুধু ভবণ নির্মানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এই উন্নয়ন ক্যাম্পাসের সামগ্রিক শিক্ষার পরিবেশ ও গবেষণা, গণতান্ত্রিক চর্চা ও শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের জীবনমান বৃদ্ধির সাথে যুক্ত। উন্নয়নের নামে বৃক্ষ নিধনের কর্মকাণ্ড সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। বরং বিকল্প পরিকল্পনা কি হতে পারে, তা গ্রহণের দাবি জানানো হয়। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক নিরাপত্তা ঝুঁকিকে বিবেচনায় না নিয়ে, শিক্ষা কার্যক্রমের পরিবেশকে গুরুত্বে না নিয়ে চার লেনের রাস্তা নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। যা বাস্তবায়নের আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ অংশীজন সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্র সংগঠনগুলোর কোন মতামত গ্রহণ করা হয়নি। একরকম অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্মাণাধীন এই প্রকল্প বাতিলের দাবি জানান বক্তারা।
এছাড়াও মানবনন্ধনে সারাদেশে অর্থ মন্ত্রনালয় থেকে জারি করা অগণতান্ত্রিক ‘সর্বজনীন পেনশন স্কিম’ এর বিরুদ্ধে শিক্ষক-কর্মচারীদের চলমান আন্দোলনে সংহতি জানানো হয়।
সংশ্লিষ্ট
পিরোজপুর প্রতিনিধি: পিরোজপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবিপি)-এর উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী সাইফুদ্দীন পিরোজপুর প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা করেছেন।২২ জুন শনিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের পিরোজপুরস্থ প্রশাসনিক ভবনে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।সভার শুরুতে বশেমুরবিপ্রবিপি উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক অগ্রগতি সম্পর্কে সাংবাদিকদের অবহিত করেন। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে তাঁর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা উপস্থিত সংবাদকর্মীদের অবগত করেন। এ সময় সাংবাদিকরা যেকোনো প্রয়োজনে উপাচার্যকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।মতবিনিময় সভায় অংশ নেওয়া সাংবাদিকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিষয়ে আরও সবিস্তরে জানতে চাইলে উপাচার্য তাদের সকল প্রশ্নের উত্তর দেন। একইসঙ্গে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত হওয়ার জন্য তিনি সকল সংবাদিককে ধন্যবাদ জানান।পিরোজপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি রেজাউল ইসলাম শামীম, সাধারণ সম্পাদক এস এম তানভীর আহমেদ, প্রেসক্লাবের কার্যনিবাহী কমিটির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ, জেলার সিনিয়র সাংবাদিকবৃন্দ এবং অন্যান্য সংবাদকর্মীরা মতবিনিময় সভায় উপস্থিত থেকে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. মুছা খান, প্রভাষক সুমাইয়া সুলতানা এবং মনোবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক নাজমা আক্তার উপস্থিত ছিলেন।
বাকৃবি প্রতিনিধি: বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ক্যাম্পাসের আবাসিক এলাকা থেকে প্রায় দুই লক্ষ টাকার ইলেকট্রনিক্স জিনিসপত্র চুরি হওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন আয়েশা সিদ্দিকা নামের একজন ভুক্তোভোগী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ড. আনিসুর রহমানের স্ত্রী। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকার ডি ১১/২ নম্বর বাসায় থাকেন।চুরির ঘটনায় ড. আনিসুর রহমান ১৯ জুন বুধবার দুপুরে ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। এছাড়াও গত ১৮ জুন বহিরাগতদের একটি বাইক আচমকা এসে ধাক্কা দিয়ে চলে যান আয়েশা সিদ্দিকাকে। এতে তিনি আহত হন।একদিকে ক্যাম্পাস বন্ধ, অন্যদিকে বহিরাগতদের এমন উৎপাত। এমতাবস্থায় চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানান আয়েশা সিদ্দিকা।ভুক্তভোগী আয়েশা সিদ্দিকা চুরির বিষয়ে জানান, গত ১৮ জুন রাত ১১ টায় বাসার দরজা বন্ধ করে আমরা ঘুমিয়ে পরি। পরে রাত সাড়ে ৪টায় নামাজের জন্য ঘুম থেকে উঠে দেখি রান্না ঘরের দরজা খোলা এবং বাসার নিচ তলায় তিনটি ল্যাপটপ ও একটি অ্যাপেল ওয়াচ নেই। একটি ল্যাপটপ অ্যাপেল, একটি ডেল এবং অন্যটি লেনোভো ব্র্যান্ডের ছিলো। সব মিলিয়ে প্রায় ২ লক্ষ টাকার ইলেকট্রনিক্স জিনিসপত্র চুরি হয়েছে।বিষয়টিকে চরম হতশাজনক উল্লেখ করে তিনি বলেন, সকাল থেকে সবাইকে (বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন) জানিয়েছি, কিন্তু আশেপাশের কোনো একটা ক্যামেরাও নাকি ভালো নেই। পরে থানার ওসি আসলে তার কাছে আমরা লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি। ভার্সিটির ভিতরে আসলে হচ্ছেটা কি? আমরা যদি নিজেদের এলাকায় নিজেরাই অরক্ষিত থাকি. তাহলে আর কিছু বলার নেই।এদিকে বাইকের ধাক্কার বিষয়ে তিনি জানান, গত ১৮ জুন বিকেলে নিরাপত্তা জোন-১ এর সামনে দিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিলাম। সেই সময় একটা বাইক আমাকে ফেলে দিয়ে চলে যায়। ওই ঘটনায় আমি শুধু প্রাণে বাঁচার মত বেঁচে গেছি। পরে রাস্তার পাশের লোকজন গিয়ে ২ জন নিরাপত্তা কর্মীকে ডেকে নিয়ে আসে। বাইকে দুইজন ছিল। তার মধ্যে যে চালক (মো. জামিল হোসেন) ছিল, তাকে নিরাপত্তা কর্মীরা আটক করে কিছু সময় রাখলো এবং যে পিছনে বসে ছিল সে বাইক নিয়ে চলে যায়। পরে আটক করা ওই ছেলের পরিবার থেকে লোকজন এসে মুছলেকা দিয়ে তাকে নিয়ে যায়। আমি মারাত্মকভাবে আহত হয়েছি। হাতে পায়ের বিভিন্ন জায়গায় কেটে গেছে।মোটরসাইকেল চালক মো. জামিল হোসেন তার লিখিত জবানবন্দিতে বলেন, হাত ছেড়ে দিয়ে নিজ মোটরসাইকেল চালানোর সময় তিনি আয়েশা সিদ্দিকাকে ধাক্কা লাগিয়ে ফেলে দিয়ে আহত করেন। পরে নিরাপত্তা কর্মীরা তাকে ধরে জোন অফিসে নিয়ে আসেন। আমি আর বাকৃবি চত্বরে মোটরসাইকেল নিয়ে আসবো না বলেও অঙ্গীকার করেন ওই চালক।বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কাউন্সিলের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার কথা শোনার সাথে সাথে আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। বাইক চালক ছেলেটি নিজের দোষ স্বীকার করে একান্তভাবে ক্ষমাপ্রার্থনা করলে ভুক্তভোগী তাকে ক্ষমা করে দেন।চুরির বিষয়ে তিনি বলেন, চুরির ঘটনা আমাকে জানানো হলে আমি যতদ্রুত সম্ভব ওই ঘটনাস্থলে যাই। এরপর কোতোয়ালী থানার ওসির সাথে যোগাযোগ করি। ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্টদের খুঁজে বের করার জন্য বিভিন্ন জায়গায় গোয়েন্দা বাহিনীও কর্মরত আছেন। তবে কাজটি সম্পন্ন করতে কিছুটা সময় অবশ্যই প্রয়োজন। কোতোয়ালী থানা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার পক্ষ থেকে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে। আমি নিজেও প্রতিদিন থানায় যোগাযোগ করছি।
জবি প্রতিনিধি: পবিত্র ঈদুল আজহায় ঢাকায় থাকা শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য প্রথমবারের মতো ঈদ আপ্যায়নের উদ্যোগ নিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ আয়োজনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলো প্রক্টরিয়াল বডির সহকারী প্রক্টরসহ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ।১৭ জুন সোমবার দুপুরে শিক্ষার্থীদের জন্য পোলাও, ডিমের কোরমা ও খাসির মাংসের পাশাপাশি সফট ড্রিংকসের আয়োজন করা হয়েছে।সহকারী প্রক্টরবৃন্দের সাথে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজি ও সাধারণ সম্পাদক এস এম আক্তার হোসাইনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থেকে আপ্যায়নের খাবার রান্না করা থেকে বিতরণ করা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান করেন।খাবার বিতরণের সময় পেছনে ব্যানারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে ছাত্রলীগের তত্ত্বাবধানের কথা উল্লেখ থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে খাসি কেনার জন্য আর্থিক সহায়তা করা হয়েছে বলে জানা গেছে। সহকারী প্রক্টরদের অবস্থান প্রসাশনের এই উদ্যোগকে সাফল্যমণ্ডিত করেছে।এ বিষয়ে জবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, প্রথমবারের মতো আয়োজিত এ উদ্যোগে আমাদের আর্থিক সহায়তা আর ছাত্রলীগের তত্ত্বাবধানে আজকের আপ্যায়ন অনুষ্ঠানটি সফলভাবে সম্পাদিত হয়েছে। এখানে সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ও দায়িত্বে সহকারী প্রক্টররা ছিলেন এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে সুন্দরভাবে বিতরণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন আয়োজনে উপস্থিত শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরাসহ সকলে সাধুবাদ জানায়।
বাকৃবি প্রতিনিধি: বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) অনুমোদিত সাংবাদিকদের সংগঠন বাকৃবি সাংবাদিক সমিতি (বাকৃবিসাস) থাকা সত্ত্বেও প্রশাসনের অনুমতি না নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক ও কিছু শিক্ষার্থী মিলে বাকৃবি প্রেস ক্লাব নামের একটি নতুন সংগঠন খুলে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ও ছাত্রবিষয়ক বিভাগ কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন।১৩ জুন বৃহস্পতিবার বাকৃবি প্রেস ক্লাব নামে ৯ সদস্য বিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটির একটি সংবাদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করার পর বিষয়টি সকলের দৃষ্টিগোচর হয় । এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তি তারা প্রকাশ করেনি। বিশ্ববিদ্যালয় যখন ঈদের ছুটির বন্ধ, শিক্ষার্থীরা সবাই বাসায়, ঠিক তখনি সবার অগোচরে এই কমিটি ফেসবুকে ঘোষণা করা হয়।জানা যায়, কমিটিতে সভাপতি হিসেবে মনোনীত হয়েছেন সবুজ বাংলাদেশ ২৪ ডটকমের নির্বাহী সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. সহিদুজ্জামান সবুজ। শিক্ষক হয়ে একটি পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক আবার প্রেস ক্লাবের সভাপতি। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে যেটি একটি বিরল ঘটনা। বিতর্কিত শিক্ষক ড. সহিদুজ্জামান নিজের অফিসেই খুলে বসেছেন তার অনলাইন পত্রিকার কার্যালয়। সরকারি আইন অনুযায়ী যেখানে একজন সরকারি চাকুরীজীবী ব্যক্তি চাকুরির পাশাপাশি কোনো ধরনের লাভজনক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক হতে পারেন না, সেখানে পুরো একটি অনলাইন পোর্টালের কার্যালয়ই নিজের কর্মরত অফিসকে বানিয়ে পোর্টালটিতে কাজ করে যাচ্ছেন এই শিক্ষক। সেই পোর্টালে কাজ করার জন্য তিনি ক্যাম্পাসের সাংবাদিক সমিতি থেকে যেসকল সাংবাদিক দুর্নীতি কিংবা শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে বহিষ্কৃত হন, তাদের টাকা দিয়ে প্রলুব্ধ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রোগ্রামে দাওয়াত করা না সত্ত্বেও নিজে থেকেই তার পোর্টালে কর্মরত সাংবাদিকদের পাঠানো এবং প্রোগ্রামে আয়োজকদের কাছ থেকে নিউজ কভারেজের জন্য টাকা দাবি করারও অভিযোগ রয়েছে এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে।এছাড়াও জানা যায়, ড. সহিদুজ্জামান সবুজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন সোনালি দলের ২০১৩-১৪ ভেটেরিনারি অনুষদীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি ২০২১ সালে বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির কৃষি বিষয়ক সম্পাদক পদে রয়েছেন এবং এই মর্মে বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদ থেকে একটি প্রত্যয়নপত্রও নিয়েছেন।এদিকে বির্তকিত এই প্রেস ক্লাবের কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নাম এসেছে দৈনিক জনকন্ঠ পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি রায়হান আবিদের। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির- ২০২৩ কার্যনির্বাহী কমিটি থেকে শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও অসদাচরণের কারণে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বহিষ্কৃত হন। এছাড়াও বির্তকিত এই প্রেস ক্লাবের কমিটির সহ-সভাপতি জাহিদ হাসান বাকৃবি সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন ২০২১ সালে। পরে ২০২২ সালে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে তার সদস্যপদ বাতিল করা হয়।অভিযোগের বিষয়ে অধ্যাপক ড. মো. সহিদুজ্জামান সবুজ বলেন, গঠনতন্ত্রসহ একটি আবেদন ছাত্রবিষয়ক বিভাগে জমা দেওয়া হয়েছে আর কি। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে তো শিক্ষকরা সাংবাদিকতার সাথে জড়িত থাকে। বিষয়টাকে এভাবে দেখতে পারো যে, অনেক সায়েন্টিফিক জার্নালে তো শিক্ষকরা কাজ করেন, তেমনি এটা একটা নিউজ জার্নাল। এখানে আইনি তো কোনো জটিলতা নেই।প্রেস ক্লাব খোলার অনুমতির বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।বহিষ্কৃত সাংবাদিকদের টাকা দিয়ে প্রলুব্ধ করে নিজের পোর্টালটিতে কাজ করানোর বিষয় এবং প্রোগ্রামে আয়োজকদের কাছ থেকে নিউজ কভারেজের জন্য টাকা দাবি করারও অভিযোগের বিষয়ে অধ্যাপক ড. সবুজ বলেন, আমি এ বিষয়ে কোনো কমেন্ট করতে চাই না।বিতর্কিত প্রেস ক্লাব সংগঠন খোলার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ ও প্রকাশনা দফতরের উপ-পরিচালক দীন মোহাম্মদ দীনু বলেন, আমার দফতরও এ বিষয়ে কিছুই জানে না। কোনো কাগজও হাতে পাইনি। এখন তো ক্যাম্পাস বন্ধ। ভিসি স্যারও হজে আছেন। অনুমতি ছাড়াই কিভাবে ক্যাম্পাসের নাম ও লোগো ব্যবহার করে একটি সংগঠন খুলতে পারে বিষয়টি আমার বোধগম্য নয়।বিতর্কিত প্রেস ক্লাব সংগঠন খোলার বিষয়ে কোনো কিছুই জানেন না বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. হারুন-অর-রশিদ। তিনি বলেন, আমরা এখনও এ বিষয়ে কোনো অবগত নই। তারা কোনো কাগজ ছাত্রবিষয়ক বিভাগে জমা দিয়েছে কি না, আমার জানা নেই। আর জমা যদি দিয়েও থাকে, সেটা তো আর অনুমতি দেওয়া হলো না। আর আমি চাইলেই কি অনুমতি দিতে পারবো নাকি? ভিসি স্যার ছাড়া অনুমতি দেওয়া যাবে না। এখন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ, বিশ্ববিদ্যালয় খুললে এবং ভিসি স্যার হজ থেকে আসলে আমরা এটি নিয়ে ব্যবস্থা নিবো।ড. সবুজের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, তিনি শিক্ষকতার পাশাপাশি একটি পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক হলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে অনুমতি দেওয়ার কথা না। অনেক শিক্ষকই বুঝে না এটি, না বুঝেই থাকে সাপোর্ট দেয়। কেউ কিছু বলেও না।বাকৃবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী হজে থাকায় ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক ড. আব্দুল আউয়াল বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। তারা কোনো প্রস্তাবও দেই নি কিংবা আমাকে একবারও জানায়ও নি। আর আমি উপাচার্য স্যারের অনুমতি ছাড়া কিছুই করতে পারবো না। তিনি ফিরে না আসা পর্যন্ত কোনো কিছুর অনুমোদন দেওয়া আমার এখতিয়ারে নেই।
চার লেনের রাস্তা নির্মাণের প্রকল্প বন্ধের দাবিতে ছাত্রফ্রন্টের মানববন্ধন
সংশ্লিষ্ট
পিরোজপুর প্রতিনিধি: পিরোজপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবিপি)-এর উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী সাইফুদ্দীন পিরোজপুর প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা করেছেন।২২ জুন শনিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের পিরোজপুরস্থ প্রশাসনিক ভবনে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।সভার শুরুতে বশেমুরবিপ্রবিপি উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক অগ্রগতি সম্পর্কে সাংবাদিকদের অবহিত করেন। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে তাঁর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা উপস্থিত সংবাদকর্মীদের অবগত করেন। এ সময় সাংবাদিকরা যেকোনো প্রয়োজনে উপাচার্যকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।মতবিনিময় সভায় অংশ নেওয়া সাংবাদিকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিষয়ে আরও সবিস্তরে জানতে চাইলে উপাচার্য তাদের সকল প্রশ্নের উত্তর দেন। একইসঙ্গে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত হওয়ার জন্য তিনি সকল সংবাদিককে ধন্যবাদ জানান।পিরোজপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি রেজাউল ইসলাম শামীম, সাধারণ সম্পাদক এস এম তানভীর আহমেদ, প্রেসক্লাবের কার্যনিবাহী কমিটির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ, জেলার সিনিয়র সাংবাদিকবৃন্দ এবং অন্যান্য সংবাদকর্মীরা মতবিনিময় সভায় উপস্থিত থেকে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. মুছা খান, প্রভাষক সুমাইয়া সুলতানা এবং মনোবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক নাজমা আক্তার উপস্থিত ছিলেন।
বাকৃবি প্রতিনিধি: বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ক্যাম্পাসের আবাসিক এলাকা থেকে প্রায় দুই লক্ষ টাকার ইলেকট্রনিক্স জিনিসপত্র চুরি হওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন আয়েশা সিদ্দিকা নামের একজন ভুক্তোভোগী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ড. আনিসুর রহমানের স্ত্রী। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকার ডি ১১/২ নম্বর বাসায় থাকেন।চুরির ঘটনায় ড. আনিসুর রহমান ১৯ জুন বুধবার দুপুরে ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। এছাড়াও গত ১৮ জুন বহিরাগতদের একটি বাইক আচমকা এসে ধাক্কা দিয়ে চলে যান আয়েশা সিদ্দিকাকে। এতে তিনি আহত হন।একদিকে ক্যাম্পাস বন্ধ, অন্যদিকে বহিরাগতদের এমন উৎপাত। এমতাবস্থায় চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানান আয়েশা সিদ্দিকা।ভুক্তভোগী আয়েশা সিদ্দিকা চুরির বিষয়ে জানান, গত ১৮ জুন রাত ১১ টায় বাসার দরজা বন্ধ করে আমরা ঘুমিয়ে পরি। পরে রাত সাড়ে ৪টায় নামাজের জন্য ঘুম থেকে উঠে দেখি রান্না ঘরের দরজা খোলা এবং বাসার নিচ তলায় তিনটি ল্যাপটপ ও একটি অ্যাপেল ওয়াচ নেই। একটি ল্যাপটপ অ্যাপেল, একটি ডেল এবং অন্যটি লেনোভো ব্র্যান্ডের ছিলো। সব মিলিয়ে প্রায় ২ লক্ষ টাকার ইলেকট্রনিক্স জিনিসপত্র চুরি হয়েছে।বিষয়টিকে চরম হতশাজনক উল্লেখ করে তিনি বলেন, সকাল থেকে সবাইকে (বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন) জানিয়েছি, কিন্তু আশেপাশের কোনো একটা ক্যামেরাও নাকি ভালো নেই। পরে থানার ওসি আসলে তার কাছে আমরা লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি। ভার্সিটির ভিতরে আসলে হচ্ছেটা কি? আমরা যদি নিজেদের এলাকায় নিজেরাই অরক্ষিত থাকি. তাহলে আর কিছু বলার নেই।এদিকে বাইকের ধাক্কার বিষয়ে তিনি জানান, গত ১৮ জুন বিকেলে নিরাপত্তা জোন-১ এর সামনে দিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিলাম। সেই সময় একটা বাইক আমাকে ফেলে দিয়ে চলে যায়। ওই ঘটনায় আমি শুধু প্রাণে বাঁচার মত বেঁচে গেছি। পরে রাস্তার পাশের লোকজন গিয়ে ২ জন নিরাপত্তা কর্মীকে ডেকে নিয়ে আসে। বাইকে দুইজন ছিল। তার মধ্যে যে চালক (মো. জামিল হোসেন) ছিল, তাকে নিরাপত্তা কর্মীরা আটক করে কিছু সময় রাখলো এবং যে পিছনে বসে ছিল সে বাইক নিয়ে চলে যায়। পরে আটক করা ওই ছেলের পরিবার থেকে লোকজন এসে মুছলেকা দিয়ে তাকে নিয়ে যায়। আমি মারাত্মকভাবে আহত হয়েছি। হাতে পায়ের বিভিন্ন জায়গায় কেটে গেছে।মোটরসাইকেল চালক মো. জামিল হোসেন তার লিখিত জবানবন্দিতে বলেন, হাত ছেড়ে দিয়ে নিজ মোটরসাইকেল চালানোর সময় তিনি আয়েশা সিদ্দিকাকে ধাক্কা লাগিয়ে ফেলে দিয়ে আহত করেন। পরে নিরাপত্তা কর্মীরা তাকে ধরে জোন অফিসে নিয়ে আসেন। আমি আর বাকৃবি চত্বরে মোটরসাইকেল নিয়ে আসবো না বলেও অঙ্গীকার করেন ওই চালক।বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কাউন্সিলের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার কথা শোনার সাথে সাথে আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। বাইক চালক ছেলেটি নিজের দোষ স্বীকার করে একান্তভাবে ক্ষমাপ্রার্থনা করলে ভুক্তভোগী তাকে ক্ষমা করে দেন।চুরির বিষয়ে তিনি বলেন, চুরির ঘটনা আমাকে জানানো হলে আমি যতদ্রুত সম্ভব ওই ঘটনাস্থলে যাই। এরপর কোতোয়ালী থানার ওসির সাথে যোগাযোগ করি। ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্টদের খুঁজে বের করার জন্য বিভিন্ন জায়গায় গোয়েন্দা বাহিনীও কর্মরত আছেন। তবে কাজটি সম্পন্ন করতে কিছুটা সময় অবশ্যই প্রয়োজন। কোতোয়ালী থানা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার পক্ষ থেকে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে। আমি নিজেও প্রতিদিন থানায় যোগাযোগ করছি।
জবি প্রতিনিধি: পবিত্র ঈদুল আজহায় ঢাকায় থাকা শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য প্রথমবারের মতো ঈদ আপ্যায়নের উদ্যোগ নিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ আয়োজনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলো প্রক্টরিয়াল বডির সহকারী প্রক্টরসহ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ।১৭ জুন সোমবার দুপুরে শিক্ষার্থীদের জন্য পোলাও, ডিমের কোরমা ও খাসির মাংসের পাশাপাশি সফট ড্রিংকসের আয়োজন করা হয়েছে।সহকারী প্রক্টরবৃন্দের সাথে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজি ও সাধারণ সম্পাদক এস এম আক্তার হোসাইনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থেকে আপ্যায়নের খাবার রান্না করা থেকে বিতরণ করা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান করেন।খাবার বিতরণের সময় পেছনে ব্যানারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে ছাত্রলীগের তত্ত্বাবধানের কথা উল্লেখ থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে খাসি কেনার জন্য আর্থিক সহায়তা করা হয়েছে বলে জানা গেছে। সহকারী প্রক্টরদের অবস্থান প্রসাশনের এই উদ্যোগকে সাফল্যমণ্ডিত করেছে।এ বিষয়ে জবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, প্রথমবারের মতো আয়োজিত এ উদ্যোগে আমাদের আর্থিক সহায়তা আর ছাত্রলীগের তত্ত্বাবধানে আজকের আপ্যায়ন অনুষ্ঠানটি সফলভাবে সম্পাদিত হয়েছে। এখানে সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ও দায়িত্বে সহকারী প্রক্টররা ছিলেন এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে সুন্দরভাবে বিতরণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন আয়োজনে উপস্থিত শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরাসহ সকলে সাধুবাদ জানায়।
বাকৃবি প্রতিনিধি: বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) অনুমোদিত সাংবাদিকদের সংগঠন বাকৃবি সাংবাদিক সমিতি (বাকৃবিসাস) থাকা সত্ত্বেও প্রশাসনের অনুমতি না নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক ও কিছু শিক্ষার্থী মিলে বাকৃবি প্রেস ক্লাব নামের একটি নতুন সংগঠন খুলে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ও ছাত্রবিষয়ক বিভাগ কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন।১৩ জুন বৃহস্পতিবার বাকৃবি প্রেস ক্লাব নামে ৯ সদস্য বিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটির একটি সংবাদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করার পর বিষয়টি সকলের দৃষ্টিগোচর হয় । এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তি তারা প্রকাশ করেনি। বিশ্ববিদ্যালয় যখন ঈদের ছুটির বন্ধ, শিক্ষার্থীরা সবাই বাসায়, ঠিক তখনি সবার অগোচরে এই কমিটি ফেসবুকে ঘোষণা করা হয়।জানা যায়, কমিটিতে সভাপতি হিসেবে মনোনীত হয়েছেন সবুজ বাংলাদেশ ২৪ ডটকমের নির্বাহী সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. সহিদুজ্জামান সবুজ। শিক্ষক হয়ে একটি পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক আবার প্রেস ক্লাবের সভাপতি। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে যেটি একটি বিরল ঘটনা। বিতর্কিত শিক্ষক ড. সহিদুজ্জামান নিজের অফিসেই খুলে বসেছেন তার অনলাইন পত্রিকার কার্যালয়। সরকারি আইন অনুযায়ী যেখানে একজন সরকারি চাকুরীজীবী ব্যক্তি চাকুরির পাশাপাশি কোনো ধরনের লাভজনক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক হতে পারেন না, সেখানে পুরো একটি অনলাইন পোর্টালের কার্যালয়ই নিজের কর্মরত অফিসকে বানিয়ে পোর্টালটিতে কাজ করে যাচ্ছেন এই শিক্ষক। সেই পোর্টালে কাজ করার জন্য তিনি ক্যাম্পাসের সাংবাদিক সমিতি থেকে যেসকল সাংবাদিক দুর্নীতি কিংবা শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে বহিষ্কৃত হন, তাদের টাকা দিয়ে প্রলুব্ধ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রোগ্রামে দাওয়াত করা না সত্ত্বেও নিজে থেকেই তার পোর্টালে কর্মরত সাংবাদিকদের পাঠানো এবং প্রোগ্রামে আয়োজকদের কাছ থেকে নিউজ কভারেজের জন্য টাকা দাবি করারও অভিযোগ রয়েছে এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে।এছাড়াও জানা যায়, ড. সহিদুজ্জামান সবুজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন সোনালি দলের ২০১৩-১৪ ভেটেরিনারি অনুষদীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি ২০২১ সালে বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির কৃষি বিষয়ক সম্পাদক পদে রয়েছেন এবং এই মর্মে বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদ থেকে একটি প্রত্যয়নপত্রও নিয়েছেন।এদিকে বির্তকিত এই প্রেস ক্লাবের কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নাম এসেছে দৈনিক জনকন্ঠ পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি রায়হান আবিদের। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির- ২০২৩ কার্যনির্বাহী কমিটি থেকে শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও অসদাচরণের কারণে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বহিষ্কৃত হন। এছাড়াও বির্তকিত এই প্রেস ক্লাবের কমিটির সহ-সভাপতি জাহিদ হাসান বাকৃবি সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন ২০২১ সালে। পরে ২০২২ সালে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে তার সদস্যপদ বাতিল করা হয়।অভিযোগের বিষয়ে অধ্যাপক ড. মো. সহিদুজ্জামান সবুজ বলেন, গঠনতন্ত্রসহ একটি আবেদন ছাত্রবিষয়ক বিভাগে জমা দেওয়া হয়েছে আর কি। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে তো শিক্ষকরা সাংবাদিকতার সাথে জড়িত থাকে। বিষয়টাকে এভাবে দেখতে পারো যে, অনেক সায়েন্টিফিক জার্নালে তো শিক্ষকরা কাজ করেন, তেমনি এটা একটা নিউজ জার্নাল। এখানে আইনি তো কোনো জটিলতা নেই।প্রেস ক্লাব খোলার অনুমতির বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।বহিষ্কৃত সাংবাদিকদের টাকা দিয়ে প্রলুব্ধ করে নিজের পোর্টালটিতে কাজ করানোর বিষয় এবং প্রোগ্রামে আয়োজকদের কাছ থেকে নিউজ কভারেজের জন্য টাকা দাবি করারও অভিযোগের বিষয়ে অধ্যাপক ড. সবুজ বলেন, আমি এ বিষয়ে কোনো কমেন্ট করতে চাই না।বিতর্কিত প্রেস ক্লাব সংগঠন খোলার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ ও প্রকাশনা দফতরের উপ-পরিচালক দীন মোহাম্মদ দীনু বলেন, আমার দফতরও এ বিষয়ে কিছুই জানে না। কোনো কাগজও হাতে পাইনি। এখন তো ক্যাম্পাস বন্ধ। ভিসি স্যারও হজে আছেন। অনুমতি ছাড়াই কিভাবে ক্যাম্পাসের নাম ও লোগো ব্যবহার করে একটি সংগঠন খুলতে পারে বিষয়টি আমার বোধগম্য নয়।বিতর্কিত প্রেস ক্লাব সংগঠন খোলার বিষয়ে কোনো কিছুই জানেন না বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. হারুন-অর-রশিদ। তিনি বলেন, আমরা এখনও এ বিষয়ে কোনো অবগত নই। তারা কোনো কাগজ ছাত্রবিষয়ক বিভাগে জমা দিয়েছে কি না, আমার জানা নেই। আর জমা যদি দিয়েও থাকে, সেটা তো আর অনুমতি দেওয়া হলো না। আর আমি চাইলেই কি অনুমতি দিতে পারবো নাকি? ভিসি স্যার ছাড়া অনুমতি দেওয়া যাবে না। এখন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ, বিশ্ববিদ্যালয় খুললে এবং ভিসি স্যার হজ থেকে আসলে আমরা এটি নিয়ে ব্যবস্থা নিবো।ড. সবুজের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, তিনি শিক্ষকতার পাশাপাশি একটি পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক হলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে অনুমতি দেওয়ার কথা না। অনেক শিক্ষকই বুঝে না এটি, না বুঝেই থাকে সাপোর্ট দেয়। কেউ কিছু বলেও না।বাকৃবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী হজে থাকায় ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক ড. আব্দুল আউয়াল বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। তারা কোনো প্রস্তাবও দেই নি কিংবা আমাকে একবারও জানায়ও নি। আর আমি উপাচার্য স্যারের অনুমতি ছাড়া কিছুই করতে পারবো না। তিনি ফিরে না আসা পর্যন্ত কোনো কিছুর অনুমোদন দেওয়া আমার এখতিয়ারে নেই।
মন্তব্য করুন