পুলিশের গুলিতে পুলিশ নিহত: কনস্টেবল কাওসার ৭ দিনের রিমান্ডে
নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীতে পুলিশের গুলিতে আরেক পুলিশ সদস্য মনিরুল হক নিহতের ঘটনায় করা মামলায় আসামি কনস্টেবল কাওসার আলীর ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
৯ জুন রোববার তাকে আদালতে হাজির করে মামলার সুষ্ঠুতদন্তের জন্য তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাকিল আহাম্মদ ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার সূত্রে জানা গেছে, ৮ জুন শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর বারিধারায় ফিলিস্তিন দূতাবাসের সামনে নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত পুলিশ সদস্য মনিরুল হককে গুলি করে হত্যা করে আরেক পুলিশ সদস্য কাওসার আলী। নিহত পুলিশ সদস্য ডিপ্লোম্যাটিক সিকিউরিটি ডিভিশনে কর্মরত ছিলেন।
এ ঘটনায় সাজ্জাদ হোসেন নামে জাপান দূতাবাসের এক গাড়িচালক আহত হন। তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ সদস্য নিহতের ঘটনায় ৯ জুন রোববার গুলশান থানায় মামলা করেছেন নিহত মনিরুল হকের ভাই মো. মাহাবুবুল হক।
সংশ্লিষ্ট
ফরিদপুর প্রতিনিধি: এক চোরকে ধরে বিপাকে পড়েছে এলাকাবাসী। গরু চুরি করার সময় ধরা পড়লে স্থানীয়রা তাকে উত্তম মধ্যম দেয়। এর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ওই চোর ইউপি সদস্যসহ এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দেয়। এর পর থেকে গ্রেফতার এড়াতে চোর নয়, এলাকাবাসীই পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।এলাকাবাসী জানায়, চিলারকান্দি গ্রামের বাসিন্দা মাজেদ ফকিরের বাড়িতে গত ১২ জুন বুধবার রাত দেড়টার দিকে গরুর ঘরের তালা ভাঙার শব্দ পেয়ে ঘুম থেকে জেগে উঠে বাড়ির লোক। তখন সবাই চিৎকার করে চোরের পিছনে ধাওয়া করে। চোর দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলেও কিছু দূর গিয়েই ধরা পড়ে। ধরা পড়ার পর দেখা যায়, সে এলাকার স্থানীয় চোর, দেলোয়ার ওরফে দেলু চোর।হাতেনাতে ধরার পড়ার পর চোরকে গাছে বেঁধে গণপিটুনি দেয় স্থানীয় জনগণ। সেখানে চোরের সহযোগী হিসেবে উপস্থিত থেকে কেউ ভিডিও ধারণ করে চোরের বউকে জানায়। জানতে পেরে স্বামীকে গণপিটুনি থেকে রক্ষা করতে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশ দিয়ে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। পরে চোর দেলোয়ার ৯ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত গ্রামবাসীদের নামে মামলা দায়ের করে।একদিকে ওই চোরের উৎপাত, তার উপরে মামলায় গ্রেফতার হওয়ার ভয়। এই ভয়ে রীতিমত অতিষ্ট কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের কয়েক গ্রামের মানুষ। চোরের হাত থেকে মুক্তি পেতে ও চোরের দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে স্থানীয়রা।২২ জুন শনিবার ইউনিয়নের ময়নার মোড়ে এই মানববন্ধনে কয়েকশ’ নারী পুরুষ অংশ নেন। মানববন্ধনে অংশ নেয়া স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দেলোয়ার ওরফে দেলু এলাকার চিহ্নিত চোর। সে একাধিকবার চুরি করার সময় হাতে নাতে ধরা পড়েছে। ওর চুরি ধরলে উল্টো হুমকি দেয়, মামলা দেয়। আমরা রাতে ঘুমাতে পারি না, আর এখন গ্রেফতারের ভয়ে বাড়িতে থাকতে পারছি না। আমারা প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই, আমাদের এই চোরের হাত থেকে রক্ষা করেন।স্থানীয়রা আরও জানান, পেশাদার চোর মো. দেলোয়ার খাঁন বিভিন্ন জায়গায় চুরি করে ধরা পড়ে ও পুলিশে সোপর্দ করে জনতা। কিন্তু চোর দেলোয়ার জামিনে বাইরে এসে বিভিন্ন হুমকি-ধামকি এবং উল্টো মামলা করার ভয়-ভীতি দেখিয়ে আসে। সাধারণ জনগণ চুরির ভয়ে চোর দেলোয়ারের বিরুদ্ধে কিছু বলতে সাহস পায় না।
শাফি উদ্দিন আহমদ: ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাতের ছাগলকাণ্ডে আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে বিপুল অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ জমা পড়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক)। চলতি জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে জমা পড়া অভিযোগটি যাচাই করে কমিশন অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।এরমধ্যে বাবা মতিউর রহমানের উদ্দেশ্যে ইফাত তার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। প্রথম স্ট্যাটাসে তিনি উল্লেখ করেছেন বাবার এত অপকর্ম নিয়ে কখনো মুখ খুলেননি, তবে কেন তাকে সন্তান হিসাবে অস্বীকার করছেন মতিউর। পরের স্ট্যাটাসে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে বলেছেন, যদি তাকে স্বীকৃতি দিয়ে সব স্বীকার করে না নেন তবে মতিউরের সব অবৈধ সম্পদসহ বিভিন্ন তথ্য প্রকাশ্যে নিয়ে আসবেন তিনি।দুদক সূত্র জানায়, মতিউরের বিরুদ্ধে আগেও চারবার দুর্নীতির অভিযোগ জমা পড়েছিল। প্রতিবারই তাকে ‘ক্লিন সার্টিফিকেট’ দেয়া হয়েছে। তবে এবার কমিশন অভিযোগ আমলে নিয়ে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।দুদকের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা গণমাধ্যমে বলেন, এবার অভিযোগটি কমিশনের ব্যাংক শাখা থেকে অনুসন্ধান করা হচ্ছে। অনুসন্ধানে মতিউর এবং তার পরিবারের সদস্যদের নামে অবৈধ সম্পদের প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।তার বিরুদ্ধে পাওয়া অভিযোগে নামে-বেনামে বিপুল সম্পদের তথ্য রয়েছে। বাড়ি, গাড়ি, ফ্ল্যাট, প্লট, জমি, ব্যবসা, শেয়ার ব্যবসা, ব্যাংকে নগদ অর্থ, মেয়াদি আমানতসহ সবকিছুই আছে তার নামে।এদিকে এনবিআর সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, চলতি সাপ্তাহে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।বাবা মতিউর রহমানের উদ্দেশ্যে ইফাতের ফেসবুকে স্ট্যাটাসমতিউর বর্তমানে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট আপিলাত ট্রাইব্যুনালের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। গত কয়েক দিনে তার ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাতের ১২ লাখ টাকায় কুরবানির ছাগল, ৭০ লাখ টাকায় কয়েকটি গরু কেনার ছবি ও খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।তবে মতিউর বলেছেন, ইফাত তার ছেলে নয়। পরে জানা গেছে ইফাত তার দ্বিতীয় স্ত্রীর একমাত্র সন্তান। এ বিষয়ে পরিবারটির ঘনিষ্ঠজনেরা গণমাধ্যমে বলছেন, ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার কারণে মতিউর রহমান ছেলেকে অস্বীকার করছেন। কারণ হিসেবে জানা যায়, ১২ লাখের ছাগলকে কেন্দ্র করে ভাইরাল হওয়ার পর ইফাতের দামি ব্র্যান্ডের ঘড়ি, গাড়ি, আলিশান জীবনযাপনের নানা বিবরণ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ পাচ্ছে। সরকারি চাকরজীবী বাবার বেতনের টাকা দিয়ে ছেলে কীভাবে এমন ব্যয়বহুল জীবনযাপন করতে পারে, তা নিয়েও নানা প্রশ্ন উঠতে থাকে। এ অবস্থায় পরিস্থিতি সামাল দিতে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে ছেলের পরিচয় এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন।ঢাকা, গাজীপুর, সাভার, নরসিংদী, বরিশালসহ বিভিন্ন জায়গায় মতিউরের নামে বাড়ি, জমি, ফ্ল্যাট, প্লটসহ অন্যান্য স্থাবর সম্পদ রয়েছে বলে দুদক সূত্রে জানা গেছে। তার প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ বর্তমানে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা চেয়ারম্যান। এ দম্পতির মেয়ে ফারজানা রহমান ইস্পিতা ও ছেলে তৌফিকুর রহমান অর্ণবের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে কোটি কোটি টাকা জমা রয়েছে।আরও জানা গেছে, মতিউর দুর্নীতি করে শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। তার নামে-বেনামে ঢাকায় বিভিন্ন ব্যাংকে প্রায় ৪০ কোটি টাকার এফডিআর রয়েছে। দুর্নীতি-সংক্রান্ত ঝামেলা এড়ানোর জন্য স্ত্রী ও আত্মীয়স্বজনের নামে সম্পদ রেখেছেন তিনি। বসুন্ধরার ডি ব্লকের ১ নম্বর রোডে পাঁচ কাঠা জমির ওপর সাততলা বাড়ি রয়েছে। এর মূল্য প্রায় ৪০ কোটি টাকা। বাড়িটির দ্বিতীয় তলায় তিনি থাকেন। বাকি ফ্ল্যাট ভাড়া দেয়া। ময়মনসিংহের ভালুকার প্রায় ৩০০ বিঘা জমির ওপর তার রপ্তানিমুখী জুতার কারখানা রয়েছে। এর নাম গ্লোবাল সুজ। রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় মতিউরের রয়েছে বিপুল সম্পদ, প্লট ও বাগানবাড়ি। জেসিএক্স নামে একটি যৌথ ডেভেলপার কোম্পানি বসুন্ধরায় ১৪তলা বাণিজ্যিক ভবনের নির্মাণকাজ করছে। এতে তার মালিকানা রয়েছে। গাজীপুর সদরের খিলগাঁও মৌজায় বিপুল পরিমাণ জমি রয়েছে তার।রাজধানীর অদূরে সাভার থানার বিরুলিয়া মৌজায় আটটি খতিয়ানে ৬০ শতাংশ এবং একই মৌজায় স্ত্রীর নামে ১৪.০৩ শতাংশ জমি রয়েছে। গ্লোবাল সুজ কোম্পানির নামে সাতটি খতিয়ানে ৬০ শতাংশ জমি রয়েছে। এর মূল্য প্রায় ৯০ কোটি টাকা। এছাড়া তাদের নামে বিলাসবহুল গাড়ি রয়েছে কয়েকটি।দুর্নীতি দমন কমিশন সচিব খোরশেদা ইয়াসীন এশিয়ান টিভি অনলাইনকে বলেন, অনুসন্ধান শুরু হলে তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ সম্পর্কে বিস্তারিত বলা যাবে। অনুসন্ধান কর্মকর্তা দেখবেন তার আয়ের উৎস বৈধ কি না, কিংবা আয়ের সাথে তার এবং পরিবারের অর্জিত সম্পদের সামঞ্জস্যতা আছে কি না। দুদকের হাতে আসা অভিযোগ এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমে উঠে আসা সম্পদের তথ্যের বাইরে আর কোনও সম্পদ থাকলে সেটিও খতিয়ে দেখা হবে।
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের নান্দাইলে ৫২ কেজি গাঁজাসহ সুজন মিয়া (৩৪) নামে এক মাদক কারবারিকে আটক করেছে র্যাব-১৪। এ সময় মাদক পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেটকার জব্দ করা হয়।২১ জুন শুক্রবার রাতে র্যাব-১৪ এর কোম্পানি কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানায় র্যাব।র্যাব জানায়, শুক্রবার সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১৪ এর একটি আভিযানিক টিম নান্দাইল চৌরাস্তা মোড়ে চেকপোস্ট বসায়। এ সময় কিশোরগঞ্জ থেকে আসা সাদা রংয়ের একটি প্রাইভেটকার থামালে প্রাইভেটকারের চালক পালানোর চেষ্টা করলে তাকে আটক করা হয়। আটক প্রাইভেটকার চালক গাজীপুর সিটির ভাওরাইদ গ্রামের নাসির হাওলাদারের ছেলে সুজন। পরে তার দেয়া তথ্য মতে, প্রাইভেটকারের পিছনের বক্স থেকে ৫২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়।এ ব্যাপারে র্যাব বাদী হয়ে সুজন মিয়ার বিরুদ্ধে ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল থানায় একটি লিখিত এজাহার দায়ের করা হয়।আটক আসামি সুজন মিয়াকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ থানায় সোপর্দ করা হয়।
বগুড়া প্রতিনিধি: বগুড়ার ধুনটে বাড়িতে ডেকে সাতপাকে বাঁধার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করায় সুফদেব কুমার (২৪) নামে এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেছেন এক নারী।বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে ১৩ দিন অবস্থানের পর ১৯ জুন বুধবার দিবাগত রাতে ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে থানায় এ মামলা দায়ের করেন।প্রেমিক সুফদেব কুমার উপজেলার পেঁচিবাড়ি গ্রামের নারায়ন চন্দ্র মন্ডলের ছেলে।মামলা সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী নারী নাটোরের সিংড়া উপজেলার বাসিন্দা। প্রায় এক বছর আগে বিদ্যুৎস্পর্শে তার স্বামীর মৃত্যু হয়। এ অবস্থায় চার মাস আগে প্রতিবেশী সুফদেব কুমারের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিয়ের প্রলোভনে ২ জুন দুপুরের দিকে পেঁচিবাড়ি বাজারে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নিয়ে গিয়ে মেয়েটির সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে সুফদেব।পরবর্তীতে সাতপাকে বাঁধার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সুফদেব তার প্রেমিকাকে তাদের বাড়িতে আসতে বলে। প্রেমিকের কথা অনুযায়ী ৬ জুন মেয়েটি প্রেমিকের বাড়িতে আসেন। এ সময় প্রেমিকাকে ঘরে রেখে সুফদেব কৌশলে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়।এরপর থেকে মেয়েটি স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে ওই ঘরেই অবস্থান করতে থাকেন। কিন্তু মেয়েটিকে বিয়ে করতে রাজি হয়নি সুফদেব।ধুনট থানার ওসি সৈকত হাসান বলেন, এ মামলার আসামিকে গ্রেফতারে তৎপরতা চলছে। তদন্তসাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পুলিশের গুলিতে পুলিশ নিহত: কনস্টেবল কাওসার ৭ দিনের রিমান্ডে
সংশ্লিষ্ট
ফরিদপুর প্রতিনিধি: এক চোরকে ধরে বিপাকে পড়েছে এলাকাবাসী। গরু চুরি করার সময় ধরা পড়লে স্থানীয়রা তাকে উত্তম মধ্যম দেয়। এর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ওই চোর ইউপি সদস্যসহ এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দেয়। এর পর থেকে গ্রেফতার এড়াতে চোর নয়, এলাকাবাসীই পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।এলাকাবাসী জানায়, চিলারকান্দি গ্রামের বাসিন্দা মাজেদ ফকিরের বাড়িতে গত ১২ জুন বুধবার রাত দেড়টার দিকে গরুর ঘরের তালা ভাঙার শব্দ পেয়ে ঘুম থেকে জেগে উঠে বাড়ির লোক। তখন সবাই চিৎকার করে চোরের পিছনে ধাওয়া করে। চোর দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলেও কিছু দূর গিয়েই ধরা পড়ে। ধরা পড়ার পর দেখা যায়, সে এলাকার স্থানীয় চোর, দেলোয়ার ওরফে দেলু চোর।হাতেনাতে ধরার পড়ার পর চোরকে গাছে বেঁধে গণপিটুনি দেয় স্থানীয় জনগণ। সেখানে চোরের সহযোগী হিসেবে উপস্থিত থেকে কেউ ভিডিও ধারণ করে চোরের বউকে জানায়। জানতে পেরে স্বামীকে গণপিটুনি থেকে রক্ষা করতে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশ দিয়ে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। পরে চোর দেলোয়ার ৯ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত গ্রামবাসীদের নামে মামলা দায়ের করে।একদিকে ওই চোরের উৎপাত, তার উপরে মামলায় গ্রেফতার হওয়ার ভয়। এই ভয়ে রীতিমত অতিষ্ট কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের কয়েক গ্রামের মানুষ। চোরের হাত থেকে মুক্তি পেতে ও চোরের দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে স্থানীয়রা।২২ জুন শনিবার ইউনিয়নের ময়নার মোড়ে এই মানববন্ধনে কয়েকশ’ নারী পুরুষ অংশ নেন। মানববন্ধনে অংশ নেয়া স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দেলোয়ার ওরফে দেলু এলাকার চিহ্নিত চোর। সে একাধিকবার চুরি করার সময় হাতে নাতে ধরা পড়েছে। ওর চুরি ধরলে উল্টো হুমকি দেয়, মামলা দেয়। আমরা রাতে ঘুমাতে পারি না, আর এখন গ্রেফতারের ভয়ে বাড়িতে থাকতে পারছি না। আমারা প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই, আমাদের এই চোরের হাত থেকে রক্ষা করেন।স্থানীয়রা আরও জানান, পেশাদার চোর মো. দেলোয়ার খাঁন বিভিন্ন জায়গায় চুরি করে ধরা পড়ে ও পুলিশে সোপর্দ করে জনতা। কিন্তু চোর দেলোয়ার জামিনে বাইরে এসে বিভিন্ন হুমকি-ধামকি এবং উল্টো মামলা করার ভয়-ভীতি দেখিয়ে আসে। সাধারণ জনগণ চুরির ভয়ে চোর দেলোয়ারের বিরুদ্ধে কিছু বলতে সাহস পায় না।
শাফি উদ্দিন আহমদ: ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাতের ছাগলকাণ্ডে আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে বিপুল অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ জমা পড়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক)। চলতি জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে জমা পড়া অভিযোগটি যাচাই করে কমিশন অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।এরমধ্যে বাবা মতিউর রহমানের উদ্দেশ্যে ইফাত তার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। প্রথম স্ট্যাটাসে তিনি উল্লেখ করেছেন বাবার এত অপকর্ম নিয়ে কখনো মুখ খুলেননি, তবে কেন তাকে সন্তান হিসাবে অস্বীকার করছেন মতিউর। পরের স্ট্যাটাসে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে বলেছেন, যদি তাকে স্বীকৃতি দিয়ে সব স্বীকার করে না নেন তবে মতিউরের সব অবৈধ সম্পদসহ বিভিন্ন তথ্য প্রকাশ্যে নিয়ে আসবেন তিনি।দুদক সূত্র জানায়, মতিউরের বিরুদ্ধে আগেও চারবার দুর্নীতির অভিযোগ জমা পড়েছিল। প্রতিবারই তাকে ‘ক্লিন সার্টিফিকেট’ দেয়া হয়েছে। তবে এবার কমিশন অভিযোগ আমলে নিয়ে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।দুদকের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা গণমাধ্যমে বলেন, এবার অভিযোগটি কমিশনের ব্যাংক শাখা থেকে অনুসন্ধান করা হচ্ছে। অনুসন্ধানে মতিউর এবং তার পরিবারের সদস্যদের নামে অবৈধ সম্পদের প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।তার বিরুদ্ধে পাওয়া অভিযোগে নামে-বেনামে বিপুল সম্পদের তথ্য রয়েছে। বাড়ি, গাড়ি, ফ্ল্যাট, প্লট, জমি, ব্যবসা, শেয়ার ব্যবসা, ব্যাংকে নগদ অর্থ, মেয়াদি আমানতসহ সবকিছুই আছে তার নামে।এদিকে এনবিআর সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, চলতি সাপ্তাহে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।বাবা মতিউর রহমানের উদ্দেশ্যে ইফাতের ফেসবুকে স্ট্যাটাসমতিউর বর্তমানে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট আপিলাত ট্রাইব্যুনালের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। গত কয়েক দিনে তার ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাতের ১২ লাখ টাকায় কুরবানির ছাগল, ৭০ লাখ টাকায় কয়েকটি গরু কেনার ছবি ও খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।তবে মতিউর বলেছেন, ইফাত তার ছেলে নয়। পরে জানা গেছে ইফাত তার দ্বিতীয় স্ত্রীর একমাত্র সন্তান। এ বিষয়ে পরিবারটির ঘনিষ্ঠজনেরা গণমাধ্যমে বলছেন, ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার কারণে মতিউর রহমান ছেলেকে অস্বীকার করছেন। কারণ হিসেবে জানা যায়, ১২ লাখের ছাগলকে কেন্দ্র করে ভাইরাল হওয়ার পর ইফাতের দামি ব্র্যান্ডের ঘড়ি, গাড়ি, আলিশান জীবনযাপনের নানা বিবরণ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ পাচ্ছে। সরকারি চাকরজীবী বাবার বেতনের টাকা দিয়ে ছেলে কীভাবে এমন ব্যয়বহুল জীবনযাপন করতে পারে, তা নিয়েও নানা প্রশ্ন উঠতে থাকে। এ অবস্থায় পরিস্থিতি সামাল দিতে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে ছেলের পরিচয় এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন।ঢাকা, গাজীপুর, সাভার, নরসিংদী, বরিশালসহ বিভিন্ন জায়গায় মতিউরের নামে বাড়ি, জমি, ফ্ল্যাট, প্লটসহ অন্যান্য স্থাবর সম্পদ রয়েছে বলে দুদক সূত্রে জানা গেছে। তার প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ বর্তমানে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা চেয়ারম্যান। এ দম্পতির মেয়ে ফারজানা রহমান ইস্পিতা ও ছেলে তৌফিকুর রহমান অর্ণবের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে কোটি কোটি টাকা জমা রয়েছে।আরও জানা গেছে, মতিউর দুর্নীতি করে শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। তার নামে-বেনামে ঢাকায় বিভিন্ন ব্যাংকে প্রায় ৪০ কোটি টাকার এফডিআর রয়েছে। দুর্নীতি-সংক্রান্ত ঝামেলা এড়ানোর জন্য স্ত্রী ও আত্মীয়স্বজনের নামে সম্পদ রেখেছেন তিনি। বসুন্ধরার ডি ব্লকের ১ নম্বর রোডে পাঁচ কাঠা জমির ওপর সাততলা বাড়ি রয়েছে। এর মূল্য প্রায় ৪০ কোটি টাকা। বাড়িটির দ্বিতীয় তলায় তিনি থাকেন। বাকি ফ্ল্যাট ভাড়া দেয়া। ময়মনসিংহের ভালুকার প্রায় ৩০০ বিঘা জমির ওপর তার রপ্তানিমুখী জুতার কারখানা রয়েছে। এর নাম গ্লোবাল সুজ। রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় মতিউরের রয়েছে বিপুল সম্পদ, প্লট ও বাগানবাড়ি। জেসিএক্স নামে একটি যৌথ ডেভেলপার কোম্পানি বসুন্ধরায় ১৪তলা বাণিজ্যিক ভবনের নির্মাণকাজ করছে। এতে তার মালিকানা রয়েছে। গাজীপুর সদরের খিলগাঁও মৌজায় বিপুল পরিমাণ জমি রয়েছে তার।রাজধানীর অদূরে সাভার থানার বিরুলিয়া মৌজায় আটটি খতিয়ানে ৬০ শতাংশ এবং একই মৌজায় স্ত্রীর নামে ১৪.০৩ শতাংশ জমি রয়েছে। গ্লোবাল সুজ কোম্পানির নামে সাতটি খতিয়ানে ৬০ শতাংশ জমি রয়েছে। এর মূল্য প্রায় ৯০ কোটি টাকা। এছাড়া তাদের নামে বিলাসবহুল গাড়ি রয়েছে কয়েকটি।দুর্নীতি দমন কমিশন সচিব খোরশেদা ইয়াসীন এশিয়ান টিভি অনলাইনকে বলেন, অনুসন্ধান শুরু হলে তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ সম্পর্কে বিস্তারিত বলা যাবে। অনুসন্ধান কর্মকর্তা দেখবেন তার আয়ের উৎস বৈধ কি না, কিংবা আয়ের সাথে তার এবং পরিবারের অর্জিত সম্পদের সামঞ্জস্যতা আছে কি না। দুদকের হাতে আসা অভিযোগ এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমে উঠে আসা সম্পদের তথ্যের বাইরে আর কোনও সম্পদ থাকলে সেটিও খতিয়ে দেখা হবে।
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের নান্দাইলে ৫২ কেজি গাঁজাসহ সুজন মিয়া (৩৪) নামে এক মাদক কারবারিকে আটক করেছে র্যাব-১৪। এ সময় মাদক পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেটকার জব্দ করা হয়।২১ জুন শুক্রবার রাতে র্যাব-১৪ এর কোম্পানি কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানায় র্যাব।র্যাব জানায়, শুক্রবার সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১৪ এর একটি আভিযানিক টিম নান্দাইল চৌরাস্তা মোড়ে চেকপোস্ট বসায়। এ সময় কিশোরগঞ্জ থেকে আসা সাদা রংয়ের একটি প্রাইভেটকার থামালে প্রাইভেটকারের চালক পালানোর চেষ্টা করলে তাকে আটক করা হয়। আটক প্রাইভেটকার চালক গাজীপুর সিটির ভাওরাইদ গ্রামের নাসির হাওলাদারের ছেলে সুজন। পরে তার দেয়া তথ্য মতে, প্রাইভেটকারের পিছনের বক্স থেকে ৫২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়।এ ব্যাপারে র্যাব বাদী হয়ে সুজন মিয়ার বিরুদ্ধে ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল থানায় একটি লিখিত এজাহার দায়ের করা হয়।আটক আসামি সুজন মিয়াকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ থানায় সোপর্দ করা হয়।
বগুড়া প্রতিনিধি: বগুড়ার ধুনটে বাড়িতে ডেকে সাতপাকে বাঁধার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করায় সুফদেব কুমার (২৪) নামে এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেছেন এক নারী।বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে ১৩ দিন অবস্থানের পর ১৯ জুন বুধবার দিবাগত রাতে ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে থানায় এ মামলা দায়ের করেন।প্রেমিক সুফদেব কুমার উপজেলার পেঁচিবাড়ি গ্রামের নারায়ন চন্দ্র মন্ডলের ছেলে।মামলা সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী নারী নাটোরের সিংড়া উপজেলার বাসিন্দা। প্রায় এক বছর আগে বিদ্যুৎস্পর্শে তার স্বামীর মৃত্যু হয়। এ অবস্থায় চার মাস আগে প্রতিবেশী সুফদেব কুমারের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিয়ের প্রলোভনে ২ জুন দুপুরের দিকে পেঁচিবাড়ি বাজারে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নিয়ে গিয়ে মেয়েটির সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে সুফদেব।পরবর্তীতে সাতপাকে বাঁধার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সুফদেব তার প্রেমিকাকে তাদের বাড়িতে আসতে বলে। প্রেমিকের কথা অনুযায়ী ৬ জুন মেয়েটি প্রেমিকের বাড়িতে আসেন। এ সময় প্রেমিকাকে ঘরে রেখে সুফদেব কৌশলে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়।এরপর থেকে মেয়েটি স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে ওই ঘরেই অবস্থান করতে থাকেন। কিন্তু মেয়েটিকে বিয়ে করতে রাজি হয়নি সুফদেব।ধুনট থানার ওসি সৈকত হাসান বলেন, এ মামলার আসামিকে গ্রেফতারে তৎপরতা চলছে। তদন্তসাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মন্তব্য করুন