কালের সাক্ষী জামালপুর গ্রামের ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি মসজিদ

কালের সাক্ষী জামালপুর গ্রামের ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি মসজিদ

...

প্রকাশ : ১ বছর আগে

আপডেট : ৪ মাস আগে

কালের সাক্ষী জামালপুর গ্রামের ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি মসজিদ

কালের সাক্ষী জামালপুর গ্রামের ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি মসজিদ

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জামালপুর গ্রামের ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ির মসজিদটি মানুষের কাছে এক বিস্ময়কর সৃষ্টি। প্রায় দেড়শ’ বছরের পুরাতন কারুকার্যময় এ মসজিদটি কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। নিভৃত পল্লীতে এর অবস্থান হলেও মানুষের  কাছে এর আকর্ষণ কমেনি। এখনো দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এ মসজিদটি একনজর দেখার জন্য এখানে পর্যটকরা ভিড় করেন।ঠাকুরগাঁও জেলা শহর থেকে ১৪ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে জামালপুর গ্রামে অবস্থিত এই মসজিদটি স্থাপত্য শিল্পের এক অনন্য নিদর্শন। নয়নাভিরাম এই মসজিদটির আকর্ষণীয় দিক হলো এটি মুঘল স্থাপত্য রীতিতে তৈরি। তিন গম্ভুজ বিশিষ্ট মসজিদটির চারপাশে সুদৃশ্য মিনার ও কারুকার্য খচিত। গম্ভুজসমূহ ভল্ট কায়দায় নির্মিত।স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তিরা জানান, প্রথমে জমিদার আবদুল হালিম ও পরে হাজি নুনু মোহাম্মদ ১৮৬৭ সালে এ মসজিদটি নির্মাণ করেন। হাজি নুনু মোহাম্মদ চৌধুরীর মৃত্যুর পর এই মসজিদ তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব পড়ে জমিদার এমদাদুর রহমান চৌধুরী, জমিদার করিম উদ্দীন আহম্মদ চৌধুরী ও জমিদার বদিউদ্দীন আহম্মদ চৌধুরীর উপর।তিনটি গম্বুজ ও এর চারদিকে ৩০টি ছোট-ছোট মিনার রয়েছে এ মসজিদে। এর প্রধান প্রকৌশলী ছিলেন হংসরাজ ও তার ছেলে রামহিত নামে দুই হিন্দু মিস্ত্রী। তারা দিল্লি, আগ্রা, এলাহাবাদে নির্মিত মুসলিম ঐতিহ্যের বিভিন্ন কারুকার্যের অনুকরণে এ মসজিদটি নির্মাণ করেন।  মসজিদটির দৈর্ঘ্য ৪১ ফুট ৬ ইঞ্চি ও প্রস্থ ১১ ফুট ৯ ইঞ্চি। এর বারান্দা ২টি। প্রথম বারান্দার দৈর্ঘ্য ৪১ ফুট ২ ইঞ্চি, প্রস্থ ১২ ফুট ৩ ইঞ্চি। দ্বিতীয় বারান্দার দৈর্ঘ্য ৪১ ফুট ২ ইঞ্চি, প্রস্থ ১৯ ফুট ৫ ইঞ্চি। সামনে একটি খোলা আঙিনা রয়েছে। মসজিদটিতে স্থানীয় বাসিন্দারা এখনো নামাজ আদায় করেন। একসাথে ২০০ মুসল্লী এই মসজিদে নামাজ আদায় করতে পারেন।স্থানীয় বাসিন্দা ও মসজিদের খাদেম রফিকুল ইসলাম চৌধুরী জানান, এটি অতি প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী মসজিদ। এই মসজিদ ও মসজিদের সাথে যাদুঘর ও জমিদারদের পুরোনো সংগ্রহশালাটি দেখতে প্রতিদিনই হাজার-হাজার মানুষ ভিড় জমান এখানে। তবে সরকারি পৃষ্টপোষকতা পেলে ও মসজিদটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হলে দীর্ঘ সময় মসজিদটির সৌন্দর্য টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে।  মসজিদ কমিটির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী জানান, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন থেকে এই মসজিদকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক হেরিটেজ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে শুনেছি।ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মো. সামসুজ্জামান বলেন, সদর উপজেলার জামালপুর গ্রামের ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ির মসজিদটি ইতিহাস, ঐতিহ্য ও কালের স্বাক্ষী হয়ে দীর্ঘকাল ধরে দাঁড়িয়ে আছে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে টুরিজম বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা করে এই ঐতিহাসিক মসজিদটিকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক হেরিটেজ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে কাজও চলমান রয়েছে। আশা করি, অনতি বিলম্বে প্রাচীন ও ঐতিহাসিক এ মসজিদটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণা করা হবে।তাছাড়া মসজিদ কমিটির মাধ্যম্যে মসজিদের উন্নয়ন ও এর ঐতিহ্য রক্ষায় বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
  • শেয়ার করুন-

সংশ্লিষ্ট

সৈয়দপুরে বিভিন্ন দাবিতে রংপুর বিভাগীয় ইটভাটা মালিক সমিতির সমাবেশ

সৈয়দপুরে বিভিন্ন দাবিতে রংপুর বিভাগীয় ইটভাটা মালিক সমিতির সমাবেশ

ফকিরহাটে সড়ক দুর্ঘটনায় বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী নিহত

ফকিরহাটে সড়ক দুর্ঘটনায় বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী নিহত

নেত্রকোনায় আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

নেত্রকোনায় আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

সাংবাদিক রিজুর ওপর হামলার প্রতিবাদে খোকসায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন

সাংবাদিক রিজুর ওপর হামলার প্রতিবাদে খোকসায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন

সৈয়দপুরে দৃষ্টিনন্দন চিনি মসজিদ প্রাচীন স্থাপত্যকলার নিদর্শন

সৈয়দপুরে দৃষ্টিনন্দন চিনি মসজিদ প্রাচীন স্থাপত্যকলার নিদর্শন

কেরানীগঞ্জে মাদক নির্মূলে পুলিশের মসজিদ কাউন্সিলিং

কেরানীগঞ্জে মাদক নির্মূলে পুলিশের মসজিদ কাউন্সিলিং

সিদ্ধিরগঞ্জে পিকাপের ধাক্কায় গর্ভবতী অনিরানী নিহত

সিদ্ধিরগঞ্জে পিকাপের ধাক্কায় গর্ভবতী অনিরানী নিহত

সীতাকুণ্ডে দুইশ’ বছরের পুরোনো গফুর শাহ গায়েবি মসজিদ

সীতাকুণ্ডে দুইশ’ বছরের পুরোনো গফুর শাহ গায়েবি মসজিদ

সীতাকুণ্ডে দুইশ’ বছরের পুরোনো গফুর শাহ গায়েবি মসজিদ

সীতাকুণ্ডে দুইশ’ বছরের পুরোনো গফুর শাহ গায়েবি মসজিদ

মন্তব্য করুন