পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছেন: এম এ আউয়াল
নিজস্ব প্রতিবেদক: পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখছেন উল্লেখ করে রিহ্যাবের প্রথম ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য লায়ন এম এ আউয়াল বলেছেন, নারীরা এখন আর পিছিয়ে নেই। পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিজেদের যোগ্যতা এবং দক্ষতার স্বাক্ষর রাখছেন।
১ মার্চ শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের অডিটরিয়ামে অপরাজিতার জাতীয় সম্মেলনে ‘নারী দিবস ও নারীদের অর্থনৈতিক মুক্তির কার্যকর পদক্ষেপ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এম এ আউয়াল বলেন, বাংলাদেশের পাঁচবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রজ্ঞায় বাংলাদেশ আজ বিশ্বের দরবারে অন্যতম রোল মডেল।
তিনি বলেন, নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বর্তমান সরকার সম্ভবনার প্লাটফর্ম তৈরি করে দিয়েছে। দেশের অধিকাংশ নারী এখন কর্মক্ষম। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে নারীদের ভূমিকা অগ্রগণ্য। অপরাজিতা বিজনেস সোসাইটির মাধ্যমে আমাদের নারীরা দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে, এটাই প্রত্যাশা।
অপরাজিতা বিজনেস সোসাইটির চেয়ারম্যান শাহিন আহমেদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন মাতৃভূমি গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এ বি এম হানিফ মাস্টার, ট্যাক্সস্যাভিওর কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা চেয়ারম্যান ও সিইও মেজবাউদ্দীন মো. জীবন চৌধুরী, রন্ধন শিল্পী নাজিয়া ফারহানা, রন্ধন শিল্পী হাসিনা আনছার প্রমুখ।
আলোচনা পর্ব শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মাধ্যমে অপরাজিতার জাতীয় সম্মেলন শেষ হয়।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিষয়ের ৩০ নারী উদ্যোক্তাকে ক্রেস্ট ও ট্রেনিং কোর্সের ওপর সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।
সংশ্লিষ্ট
বাকৃবি প্রতিনিধি: বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) বিশ্ব সাইকেল দিবস উদযাপন করেছে বাকৃবি উইমেন সাইক্লিং ক্লাব। দিবসটি উপলক্ষে বর্ণাঢ্য সাইকেল র্যালি, পায়রা উড়ানো, কেক কাটা, আলোচনা সভা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সংগঠনটি। উদযাপন অনুষ্ঠানের সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন বাকৃবি গ্রীন ভয়েস এবং ড্রিমিশন।৩ জুন সোমবার বিকাল সাড়ে ৫ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হ্যালিপ্যাডে পায়রা উড়ানোর মধ্য দিয়ে র্যালিটির উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আউয়াল।র্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলিপ্যাড থেকে শুরু হয়ে বোটানিক্যাল গার্ডেনের সামনে দিয়ে জব্বারের মোড় প্রদক্ষিণ করে শেষ হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা র্যালিতে অংশগ্রহণ করেন। র্যালি শেষে কেক কাটার আয়োজন করা হয় এবং পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিনি কন্ফারেন্স রুমে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় পূর্বে আয়োজিত একটি অনলাইন আর্ট এক্সিবেশন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ৮ জন শিক্ষার্থীর মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।আলোচনা সভায় বাকৃবি উইমেন সাইক্লিং ক্লাবের সভাপতি প্যারাসাইটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. শিরিন আক্তারের সভাপতিত্বে এবং ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সানজিনা তাসনুভা মিশুর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবি ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আউয়াল।বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণা কমিটির কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক ড. মো. আবু হাদী নূর আলী খান এবং ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ। এছাড়াও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ড. আব্দুল আওয়াল বলেন, সাইকেল একটি পরিবেশবান্ধব যানবাহন। বাকৃবি উইমেন সাইকেলিং ক্লাবের সহযোগিতায় মেয়েরা সহজেই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গা যেতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে মেয়েরা সাইকেল চালানোর সময় রাস্তা যাতে বাধা মুক্ত ও ঝুঁকি মুক্ত থাকে, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। মেয়েদের সাইকেলের জন্য বিশেষ রাস্তা রাখার ব্যবস্থা নিতে হবে।
রাজশাহী প্রতিনিধি: কর্মক্ষেত্রে নারীদের অনুপ্রবেশ অনেক আগে থেকে হলেও বাংলাদেশের মেয়েরা এখনও চ্যালেঞ্জিং পেশায় যেতে দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকেন। এর অন্যতম প্রধান কারণ নিজের ইচ্ছা শক্তির অভাব, পারিবারিক সহযোগিতার অভাব এবং বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সন্তান লালন পালনের সম্পূর্ণ দায়ভার। কারণ বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে যে পেশায় কিংবা যে অবস্থানেই নারী থাকুক না কেনো সন্তান লালন পালনের দায়িত্ব অনেকখানি মায়ের উপরে ন্যস্ত থাকে। আর তাই পিতা-মাতা আজও তার মেয়েকে শিক্ষক, ডাক্তার কিংবা তুলনামূলক কম চ্যালেঞ্জিং পেশায় ক্যারিয়ার গড়াতে চান। বিসিএসও এর ব্যতিক্রম নয়।তুলনামূলক কমসংখ্যক মেয়েরা চ্যালেঞ্জিং পেশা তথা বাংলাদেশ পুলিশে আসে এবং যারা আসেন তাদের অধিকাংশই নিজেদের অদম্য ইচ্ছা ও কর্মশক্তি থাকা সত্ত্বেও যথাযথ পারিবারিক সাপোর্টের অভাব ও সন্তান-সন্ততির কথা চিন্তা করে মাঠ পর্যায়ে কাজের পরিবর্তে ডেস্ক জব ও ঢাকা ভিত্তিক ক্যারিয়ার গড়ে তুলেন। অথচ বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ গ্রামে বাস করে এবং গ্রামের অশিক্ষিত, স্বল্পশিক্ষিত নির্যাতিত মহিলাদের একমাত্র আশ্রয়স্থল থানা। এক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী চিন্তাভাবনার অধিকারী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাবিনা ইয়াসমিন, তিনি ক্যারিয়ারের শুরু থেকে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন। গ্রামের সাধারণ নির্যাতিত জনমানুষকে সরাসরি আইনগত সহায়তা দিতে মাঠ পর্যায়ের কাজকে তিনি বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন।তিনি সার্কেল এএসপি হিসেবে বগুড়া জেলার গাবতলী সার্কেলে ও নওগাঁ সদরে প্রায় পাঁচ বছর কাজ করেছেন। বর্তমানে তিনি ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন হিসেবে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরত আছেন। কর্মক্ষেত্রে অসংখ্য মামলার রহস্য উদঘাটন, নির্যাতিত শিশু ও নারীকে আইনগত সহায়তা প্রদান, নির্যাতিত মানুষের পাশে থেকে আইনগত সহায়তা দেওয়া ও জনসংযোগের মাধ্যমে তিনি কর্মক্ষেত্রে প্রশংসনীয় অবদান রাখছেন। ব্যক্তিগত জীবনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাবিনা ইয়াসমিন বিবাহিত এবং দুই সন্তানের জননী। তাঁর ছেলের বয়স সাত বছর এবং মেয়ের বয়স মাত্র দেড় বছর। মা হিসেবে প্রায় এক হাতেই তাঁর সন্তানদের মানুষ করছেন। সেক্ষেত্রে সন্তান মানুষ করা এবং পুলিশের মত চ্যালেঞ্জিং পেশায় যেখানে কর্মক্ষেত্রে নারী পুরুষের মাঝে বিভেদ করা হয় না, সেখানে প্রতিযোগিতা নিয়ে কাজ করতে পুলিশ অফিসার সাবিনাকে ক্ষেত্রবিশেষে বিশেষত সন্তানের অসুস্থতার সময় কিছুটা চ্যালেঞ্জ নিতে হলেও সন্তানেরা কখনও তাঁর পেশা তথা কর্মজীবনে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়নি। বরং মাতৃত্বের শক্তিকে ধারণপোষণ করেই তিনি বারবার ঘুরে দাঁড়িয়েছেন।বিশেষত তিনি যখন বগুড়া জেলার গাবতলী সার্কেলে কর্মরত ছিলেন, তখন তাঁর বড় সন্তানের বয়স মাত্র দুই বছর। সার্কেলে কাজ করায় দায়িত্বের জায়গা থেকে প্রায় রাতে তিনি বাইরে ডিউটি তদারকি করতে যেতেন। স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি জানান, কোনো এক রাতে তাঁর বাচ্চা ভীষণ অসুস্থ, এরকম পরিস্থিতিতে গাবতলী থানার একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রতিমা ভাঙচুরকে কেন্দ্র করে হিন্দু মুসলিম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সূত্রপাত হয়। তিনি অসুস্থ দুধের বাচ্চাকে রেখে রাত দুইটার সময় সেখানে উপস্থিত হন এবং তাঁর পেশাদারিত্বের মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন। সেখানে শতশত মানুষের প্রাণনাশেরও হুমকি ছিল।এ পরিস্থিতি মোকাবেলা করে তিনি যখন ঘরে ফেরেন তখন প্রায় সকাল। ঘরে ফিরেই তিনি অসুস্থ সন্তানকে কোলে তুলে নেন আর সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলেন, “হয়ত মা হিসেবে তোমার প্রতি সর্বোচ্চ যতœশীল আমি হতে পারিনি, তবে তোমার মায়ের পেশাগত দায়িত্বশীল আচরণে আজ হাজার মায়ের কোল পরিপূর্ণ, সন্তান হারাতে হয়নি তাদের”। এরকম অনেক স্মৃতি রয়েছে যেখানে কর্মস্থলে এমনকি অপরাধ সংঘটিত হওয়া ঘটনাস্থলে ও সন্তানকে সাথে নিয়ে গিয়েছেন। সন্তানকে সাথে নিয়েই তিনি সুষ্ঠভাবে তাঁর কর্ম সম্পাদন করেছেন।তিনি আরও জানান, এমনও হয়েছে ইউনিফর্ম পরিধান করে মিশনের সাক্ষাৎকারে উপস্থিত হওয়ার জন্য বাচ্চা সাথে নিয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স, ঢাকা গিয়েছি, দূর থেকে যাওয়াতে বাচ্চা ক্লান্ত ও অসুস্থ হয়ে কোলে থাকা অবস্থায় বমি করে দিয়েছে। আর কোনো ইউনিফর্ম সাথে না থাকাতে ঐ ইউনিফর্মেই কোনোমতে একটু পরিস্কার করে নিয়ে সাক্ষাৎকার দিয়েছি। কিন্তু কখনও ভেঙ্গে পড়িনি কারণ আমি বিশ্বাস করি, মাতৃত্ব নিজেই একটি বিরাট শক্তি। তাইতো সন্তানের কাছেও তিনি আজ আদর্শ মা।
নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, অপরাজিতারা নারীর ক্ষমতায়নের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। সংগ্রামী পথচলাই অপরাজিতাদের সফলতার চাবিকাঠি। অপরাজিতারা তৃণমূল পর্যায়ের নারীর ক্ষমতায়নকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।২০ এপ্রিল শনিবার রাজধানী ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অপরাজিতা নেটওয়ার্কের উদ্যোগে আয়োজিত 'জাতীয় অপরাজিতা সম্মেলন' এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।বাগেরহাট জেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান ও বাগেরহাট জেলা অপরাজিতা নেটওয়ার্কের সভাপতি শরীফা খানমের সভাপতিত্বে খান ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট রোকসানা খন্দকারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন দিনাজপুর জেলা অপরাজিতা নেটওয়ার্কের সদস্য জেসমিন আক্তার রিভা এবং হেলভেটাস বাংলাদেশের প্রকল্প পরিচালক প্রশান্ত ত্রিপুরা।বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আসাদুজ্জামান নূর এমপি, আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী এমপি, আরমা দত্ত এমপি, নাছিমা জামান ববি এমপি এবং সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রেটো রেঙ্গলি।অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ঝালকাঠির উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও বরিশাল বিভাগীয় অপরাজিতা নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক ইসরাত জাহান সোনালী।ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারীদের এগিয়ে নিতে কার্যকর আইনগত মডেল ও পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে নারীদের প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন প্রনোদনা দেয়া হচ্ছে, যেন ডিজিটাল সুযোগ প্রাপ্তিতে কোন ধরনের বৈষম্য তৈরি না হয়।তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭২ এর সংবিধানে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসনের বিধান রেখেছিলেন। সংরক্ষিত আসনের সংখ্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫০ এ বৃদ্ধি করেছেন। নারীরা সরাসরি নির্বাচন এবং সংরক্ষিত আসনের মাধ্যমে সংসদ সদস্য হতে পারেন।স্পিকার বলেন, দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারী। তাই এদেশে মহিলা ভোটারের সংখ্যাও বেশি। নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে যা ইতিবাচক প্রভাব রাখতে পারে। রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের জন্য নারীদের জনগণের আস্থা অর্জনের লক্ষ্যে তাদের সেবায় কাজ করতে হবে। নারীর সহজাত বৃত্তির মাধ্যমেই নারীর ক্ষমতায়ন বিকশিত হয়। এভাবেই নারীরা ঘরে বাইরে দুই জায়গাতেই দক্ষতার সাথে কাজ করছেন।তিনি আরও বলেন, অপরাজিতা নেটওয়ার্ক ৯০০০ নারীর একটি সমন্বিত প্লাটফর্ম। একসাথে কাজ করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ, সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি ও ঐক্য বজায় রেখে এই নেটওয়ার্ককে এগিয়ে যেতে হবে। বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দিয়ে এই নেটওয়ার্ক নারীদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে, যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।এসময় ১৬ জেলার ১৬ জন নারীকে অগ্রগামী অপরাজিতা হিসেবে এবং ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যদের পথিকৃৎ অপরাজিতা হিসেবে সম্মাননা প্রদান করা হয়।জাতীয় অপরাজিতা সম্মেলনে দেশের ১৬টি জেলার ৩০০ জন অপরাজিতা, বিশিষ্ট নারী নেতৃবৃন্দ, আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
নিজস্ব প্রতিবেদক: এভিয়েশন খাতের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য এটিজেএফবি এভিয়েট্যুর উইমেন্স আইকন অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন এ খাতের ১০ নারীকর্মী।১৩ মার্চ বুধবার রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে নারীদের হাতে ‘এভিয়েট্যুর উইমেন্স আইকন অ্যাওয়ার্ড ২০২৪’ তুলে দেন বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান।এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন, বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোহাম্মদ মফিদুর রহমান, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের এমডি ও সিইও শফিউল আজিম, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের, এটিজেএফবি’র সভাপতি তানজিম আনোয়ার এবং সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) বাতেন বিপ্লব।অনুষ্ঠানে এভিয়েশন উদ্যোক্তা ক্যাটাগরিতে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর (ডিএমডি) দিলরুবা পারভীন, ট্যুরিজম উদ্যোক্তা ক্যাটাগরিতে বাটারফ্লাই পার্কের চেয়ারম্যান মনোয়ারা হাকিম আলী, লিডারশিপ ক্যাটাগরিতে আটাবের সাধারণ সম্পাদক আফসিয়া জান্নাত সালেহা, সাংবাদিক ক্যাটাগরিতে গ্রিন টিভির নির্বাহী সম্পাদক নাদিরা কিরণ, এভিয়েশন ট্রেইনার ক্যাটাগরিতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ট্রেনিং সেন্টারের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) রাশেদা কবির চৌধুরী, পাইলট ক্যাটাগরিতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের তাসমিন দোজা, ওটিএ উদ্যোক্তা ক্যাটাগরিতে শেয়ার ট্রিপের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী সাদিয়া হক, অ্যারোনোটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ক্যাটাগরিতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার সামিয়া হালিম কবির, কেবিন ক্রু ক্যাটাগরিতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কেবিন ক্রু ফারহানা ইসলাম নুসরাত, ক্যালিনারি ট্যুরিজম ক্যাটাগরিতে ন্যাশনাল হোটেল ও ট্যুরিজম টেনিং ইনস্টিটিউটের ট্রেইনার জাহেদা বেগম সম্মাননা পান।এ সময় বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, ‘নারীদের যখনই সুযোগ দেওয়া হয়েছে, তখনই তারা ভালো করেছে এবং এগিয়ে গিয়েছে। আজকের পদকটিও একটি ইউনিক অ্যাওয়ার্ড। এই আয়োজনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য যা যা প্রয়োজন, আমরা তা করবো। নারীদের কেউ দাবায় রাখতে পারবে না।’তিনি বলেন, ‘একটা সময় নারীদের অগ্রযাত্রায় প্রধান অন্তরায় ছিল সরকার এবং তার পরিবার। এখন সেটি কেটে গিয়েছে। নারীর ক্ষমতায়নে শেখ হাসিনার সরকার বদ্ধপরিকর। আমি প্রত্যাশা করি, এভিয়েশন সেক্টরে মেয়েরা আরও এগিয়ে যাবে। এজন্য যে ধরনের সুযোগ সুবিধা দেওয়া প্রয়োজন, সেটি আমরা দেবো।’বেবিচক চেয়ারম্যান মফিদুর রহমান বলেন, ‘এ ধরনের একটি সম্মাননার আয়োজন করায় এটিজেএফবি’কে ধন্যবাদ। প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের এভিয়েশন সেক্টরে প্রায় ৬ শতাংশ নারীকর্মী রয়েছে। পাশের দেশ ভারতে এই সেক্টরে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি নারীকর্মী কাজ করছে, যা প্রায় ১২ শতাংশ। বাংলাদেশে এই সেক্টরে নারীকর্মী আরও বাড়ানো উচিত বলে আমি মনে করি।’তিনি আরও বলেন, ‘শুধু পাইলট-ক্রু নয়, এভিয়েশন খাতের টেকনিশিয়ান, ইঞ্জিনিয়ার, কন্ট্রোলারের সংখ্যাও বাড়াতে হবে।’
পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছেন: এম এ আউয়াল
সংশ্লিষ্ট
বাকৃবি প্রতিনিধি: বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) বিশ্ব সাইকেল দিবস উদযাপন করেছে বাকৃবি উইমেন সাইক্লিং ক্লাব। দিবসটি উপলক্ষে বর্ণাঢ্য সাইকেল র্যালি, পায়রা উড়ানো, কেক কাটা, আলোচনা সভা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সংগঠনটি। উদযাপন অনুষ্ঠানের সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন বাকৃবি গ্রীন ভয়েস এবং ড্রিমিশন।৩ জুন সোমবার বিকাল সাড়ে ৫ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হ্যালিপ্যাডে পায়রা উড়ানোর মধ্য দিয়ে র্যালিটির উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আউয়াল।র্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলিপ্যাড থেকে শুরু হয়ে বোটানিক্যাল গার্ডেনের সামনে দিয়ে জব্বারের মোড় প্রদক্ষিণ করে শেষ হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা র্যালিতে অংশগ্রহণ করেন। র্যালি শেষে কেক কাটার আয়োজন করা হয় এবং পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিনি কন্ফারেন্স রুমে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় পূর্বে আয়োজিত একটি অনলাইন আর্ট এক্সিবেশন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ৮ জন শিক্ষার্থীর মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।আলোচনা সভায় বাকৃবি উইমেন সাইক্লিং ক্লাবের সভাপতি প্যারাসাইটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. শিরিন আক্তারের সভাপতিত্বে এবং ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সানজিনা তাসনুভা মিশুর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবি ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আউয়াল।বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণা কমিটির কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক ড. মো. আবু হাদী নূর আলী খান এবং ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ। এছাড়াও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ড. আব্দুল আওয়াল বলেন, সাইকেল একটি পরিবেশবান্ধব যানবাহন। বাকৃবি উইমেন সাইকেলিং ক্লাবের সহযোগিতায় মেয়েরা সহজেই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গা যেতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে মেয়েরা সাইকেল চালানোর সময় রাস্তা যাতে বাধা মুক্ত ও ঝুঁকি মুক্ত থাকে, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। মেয়েদের সাইকেলের জন্য বিশেষ রাস্তা রাখার ব্যবস্থা নিতে হবে।
রাজশাহী প্রতিনিধি: কর্মক্ষেত্রে নারীদের অনুপ্রবেশ অনেক আগে থেকে হলেও বাংলাদেশের মেয়েরা এখনও চ্যালেঞ্জিং পেশায় যেতে দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকেন। এর অন্যতম প্রধান কারণ নিজের ইচ্ছা শক্তির অভাব, পারিবারিক সহযোগিতার অভাব এবং বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সন্তান লালন পালনের সম্পূর্ণ দায়ভার। কারণ বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে যে পেশায় কিংবা যে অবস্থানেই নারী থাকুক না কেনো সন্তান লালন পালনের দায়িত্ব অনেকখানি মায়ের উপরে ন্যস্ত থাকে। আর তাই পিতা-মাতা আজও তার মেয়েকে শিক্ষক, ডাক্তার কিংবা তুলনামূলক কম চ্যালেঞ্জিং পেশায় ক্যারিয়ার গড়াতে চান। বিসিএসও এর ব্যতিক্রম নয়।তুলনামূলক কমসংখ্যক মেয়েরা চ্যালেঞ্জিং পেশা তথা বাংলাদেশ পুলিশে আসে এবং যারা আসেন তাদের অধিকাংশই নিজেদের অদম্য ইচ্ছা ও কর্মশক্তি থাকা সত্ত্বেও যথাযথ পারিবারিক সাপোর্টের অভাব ও সন্তান-সন্ততির কথা চিন্তা করে মাঠ পর্যায়ে কাজের পরিবর্তে ডেস্ক জব ও ঢাকা ভিত্তিক ক্যারিয়ার গড়ে তুলেন। অথচ বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ গ্রামে বাস করে এবং গ্রামের অশিক্ষিত, স্বল্পশিক্ষিত নির্যাতিত মহিলাদের একমাত্র আশ্রয়স্থল থানা। এক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী চিন্তাভাবনার অধিকারী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাবিনা ইয়াসমিন, তিনি ক্যারিয়ারের শুরু থেকে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন। গ্রামের সাধারণ নির্যাতিত জনমানুষকে সরাসরি আইনগত সহায়তা দিতে মাঠ পর্যায়ের কাজকে তিনি বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন।তিনি সার্কেল এএসপি হিসেবে বগুড়া জেলার গাবতলী সার্কেলে ও নওগাঁ সদরে প্রায় পাঁচ বছর কাজ করেছেন। বর্তমানে তিনি ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন হিসেবে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরত আছেন। কর্মক্ষেত্রে অসংখ্য মামলার রহস্য উদঘাটন, নির্যাতিত শিশু ও নারীকে আইনগত সহায়তা প্রদান, নির্যাতিত মানুষের পাশে থেকে আইনগত সহায়তা দেওয়া ও জনসংযোগের মাধ্যমে তিনি কর্মক্ষেত্রে প্রশংসনীয় অবদান রাখছেন। ব্যক্তিগত জীবনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাবিনা ইয়াসমিন বিবাহিত এবং দুই সন্তানের জননী। তাঁর ছেলের বয়স সাত বছর এবং মেয়ের বয়স মাত্র দেড় বছর। মা হিসেবে প্রায় এক হাতেই তাঁর সন্তানদের মানুষ করছেন। সেক্ষেত্রে সন্তান মানুষ করা এবং পুলিশের মত চ্যালেঞ্জিং পেশায় যেখানে কর্মক্ষেত্রে নারী পুরুষের মাঝে বিভেদ করা হয় না, সেখানে প্রতিযোগিতা নিয়ে কাজ করতে পুলিশ অফিসার সাবিনাকে ক্ষেত্রবিশেষে বিশেষত সন্তানের অসুস্থতার সময় কিছুটা চ্যালেঞ্জ নিতে হলেও সন্তানেরা কখনও তাঁর পেশা তথা কর্মজীবনে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়নি। বরং মাতৃত্বের শক্তিকে ধারণপোষণ করেই তিনি বারবার ঘুরে দাঁড়িয়েছেন।বিশেষত তিনি যখন বগুড়া জেলার গাবতলী সার্কেলে কর্মরত ছিলেন, তখন তাঁর বড় সন্তানের বয়স মাত্র দুই বছর। সার্কেলে কাজ করায় দায়িত্বের জায়গা থেকে প্রায় রাতে তিনি বাইরে ডিউটি তদারকি করতে যেতেন। স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি জানান, কোনো এক রাতে তাঁর বাচ্চা ভীষণ অসুস্থ, এরকম পরিস্থিতিতে গাবতলী থানার একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রতিমা ভাঙচুরকে কেন্দ্র করে হিন্দু মুসলিম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সূত্রপাত হয়। তিনি অসুস্থ দুধের বাচ্চাকে রেখে রাত দুইটার সময় সেখানে উপস্থিত হন এবং তাঁর পেশাদারিত্বের মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন। সেখানে শতশত মানুষের প্রাণনাশেরও হুমকি ছিল।এ পরিস্থিতি মোকাবেলা করে তিনি যখন ঘরে ফেরেন তখন প্রায় সকাল। ঘরে ফিরেই তিনি অসুস্থ সন্তানকে কোলে তুলে নেন আর সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলেন, “হয়ত মা হিসেবে তোমার প্রতি সর্বোচ্চ যতœশীল আমি হতে পারিনি, তবে তোমার মায়ের পেশাগত দায়িত্বশীল আচরণে আজ হাজার মায়ের কোল পরিপূর্ণ, সন্তান হারাতে হয়নি তাদের”। এরকম অনেক স্মৃতি রয়েছে যেখানে কর্মস্থলে এমনকি অপরাধ সংঘটিত হওয়া ঘটনাস্থলে ও সন্তানকে সাথে নিয়ে গিয়েছেন। সন্তানকে সাথে নিয়েই তিনি সুষ্ঠভাবে তাঁর কর্ম সম্পাদন করেছেন।তিনি আরও জানান, এমনও হয়েছে ইউনিফর্ম পরিধান করে মিশনের সাক্ষাৎকারে উপস্থিত হওয়ার জন্য বাচ্চা সাথে নিয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স, ঢাকা গিয়েছি, দূর থেকে যাওয়াতে বাচ্চা ক্লান্ত ও অসুস্থ হয়ে কোলে থাকা অবস্থায় বমি করে দিয়েছে। আর কোনো ইউনিফর্ম সাথে না থাকাতে ঐ ইউনিফর্মেই কোনোমতে একটু পরিস্কার করে নিয়ে সাক্ষাৎকার দিয়েছি। কিন্তু কখনও ভেঙ্গে পড়িনি কারণ আমি বিশ্বাস করি, মাতৃত্ব নিজেই একটি বিরাট শক্তি। তাইতো সন্তানের কাছেও তিনি আজ আদর্শ মা।
নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, অপরাজিতারা নারীর ক্ষমতায়নের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। সংগ্রামী পথচলাই অপরাজিতাদের সফলতার চাবিকাঠি। অপরাজিতারা তৃণমূল পর্যায়ের নারীর ক্ষমতায়নকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।২০ এপ্রিল শনিবার রাজধানী ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অপরাজিতা নেটওয়ার্কের উদ্যোগে আয়োজিত 'জাতীয় অপরাজিতা সম্মেলন' এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।বাগেরহাট জেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান ও বাগেরহাট জেলা অপরাজিতা নেটওয়ার্কের সভাপতি শরীফা খানমের সভাপতিত্বে খান ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট রোকসানা খন্দকারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন দিনাজপুর জেলা অপরাজিতা নেটওয়ার্কের সদস্য জেসমিন আক্তার রিভা এবং হেলভেটাস বাংলাদেশের প্রকল্প পরিচালক প্রশান্ত ত্রিপুরা।বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আসাদুজ্জামান নূর এমপি, আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী এমপি, আরমা দত্ত এমপি, নাছিমা জামান ববি এমপি এবং সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রেটো রেঙ্গলি।অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ঝালকাঠির উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও বরিশাল বিভাগীয় অপরাজিতা নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক ইসরাত জাহান সোনালী।ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারীদের এগিয়ে নিতে কার্যকর আইনগত মডেল ও পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে নারীদের প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন প্রনোদনা দেয়া হচ্ছে, যেন ডিজিটাল সুযোগ প্রাপ্তিতে কোন ধরনের বৈষম্য তৈরি না হয়।তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭২ এর সংবিধানে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসনের বিধান রেখেছিলেন। সংরক্ষিত আসনের সংখ্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫০ এ বৃদ্ধি করেছেন। নারীরা সরাসরি নির্বাচন এবং সংরক্ষিত আসনের মাধ্যমে সংসদ সদস্য হতে পারেন।স্পিকার বলেন, দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারী। তাই এদেশে মহিলা ভোটারের সংখ্যাও বেশি। নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে যা ইতিবাচক প্রভাব রাখতে পারে। রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের জন্য নারীদের জনগণের আস্থা অর্জনের লক্ষ্যে তাদের সেবায় কাজ করতে হবে। নারীর সহজাত বৃত্তির মাধ্যমেই নারীর ক্ষমতায়ন বিকশিত হয়। এভাবেই নারীরা ঘরে বাইরে দুই জায়গাতেই দক্ষতার সাথে কাজ করছেন।তিনি আরও বলেন, অপরাজিতা নেটওয়ার্ক ৯০০০ নারীর একটি সমন্বিত প্লাটফর্ম। একসাথে কাজ করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ, সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি ও ঐক্য বজায় রেখে এই নেটওয়ার্ককে এগিয়ে যেতে হবে। বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দিয়ে এই নেটওয়ার্ক নারীদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে, যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।এসময় ১৬ জেলার ১৬ জন নারীকে অগ্রগামী অপরাজিতা হিসেবে এবং ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যদের পথিকৃৎ অপরাজিতা হিসেবে সম্মাননা প্রদান করা হয়।জাতীয় অপরাজিতা সম্মেলনে দেশের ১৬টি জেলার ৩০০ জন অপরাজিতা, বিশিষ্ট নারী নেতৃবৃন্দ, আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
নিজস্ব প্রতিবেদক: এভিয়েশন খাতের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য এটিজেএফবি এভিয়েট্যুর উইমেন্স আইকন অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন এ খাতের ১০ নারীকর্মী।১৩ মার্চ বুধবার রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে নারীদের হাতে ‘এভিয়েট্যুর উইমেন্স আইকন অ্যাওয়ার্ড ২০২৪’ তুলে দেন বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান।এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন, বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোহাম্মদ মফিদুর রহমান, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের এমডি ও সিইও শফিউল আজিম, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের, এটিজেএফবি’র সভাপতি তানজিম আনোয়ার এবং সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) বাতেন বিপ্লব।অনুষ্ঠানে এভিয়েশন উদ্যোক্তা ক্যাটাগরিতে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর (ডিএমডি) দিলরুবা পারভীন, ট্যুরিজম উদ্যোক্তা ক্যাটাগরিতে বাটারফ্লাই পার্কের চেয়ারম্যান মনোয়ারা হাকিম আলী, লিডারশিপ ক্যাটাগরিতে আটাবের সাধারণ সম্পাদক আফসিয়া জান্নাত সালেহা, সাংবাদিক ক্যাটাগরিতে গ্রিন টিভির নির্বাহী সম্পাদক নাদিরা কিরণ, এভিয়েশন ট্রেইনার ক্যাটাগরিতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ট্রেনিং সেন্টারের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) রাশেদা কবির চৌধুরী, পাইলট ক্যাটাগরিতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের তাসমিন দোজা, ওটিএ উদ্যোক্তা ক্যাটাগরিতে শেয়ার ট্রিপের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী সাদিয়া হক, অ্যারোনোটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ক্যাটাগরিতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার সামিয়া হালিম কবির, কেবিন ক্রু ক্যাটাগরিতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কেবিন ক্রু ফারহানা ইসলাম নুসরাত, ক্যালিনারি ট্যুরিজম ক্যাটাগরিতে ন্যাশনাল হোটেল ও ট্যুরিজম টেনিং ইনস্টিটিউটের ট্রেইনার জাহেদা বেগম সম্মাননা পান।এ সময় বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, ‘নারীদের যখনই সুযোগ দেওয়া হয়েছে, তখনই তারা ভালো করেছে এবং এগিয়ে গিয়েছে। আজকের পদকটিও একটি ইউনিক অ্যাওয়ার্ড। এই আয়োজনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য যা যা প্রয়োজন, আমরা তা করবো। নারীদের কেউ দাবায় রাখতে পারবে না।’তিনি বলেন, ‘একটা সময় নারীদের অগ্রযাত্রায় প্রধান অন্তরায় ছিল সরকার এবং তার পরিবার। এখন সেটি কেটে গিয়েছে। নারীর ক্ষমতায়নে শেখ হাসিনার সরকার বদ্ধপরিকর। আমি প্রত্যাশা করি, এভিয়েশন সেক্টরে মেয়েরা আরও এগিয়ে যাবে। এজন্য যে ধরনের সুযোগ সুবিধা দেওয়া প্রয়োজন, সেটি আমরা দেবো।’বেবিচক চেয়ারম্যান মফিদুর রহমান বলেন, ‘এ ধরনের একটি সম্মাননার আয়োজন করায় এটিজেএফবি’কে ধন্যবাদ। প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের এভিয়েশন সেক্টরে প্রায় ৬ শতাংশ নারীকর্মী রয়েছে। পাশের দেশ ভারতে এই সেক্টরে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি নারীকর্মী কাজ করছে, যা প্রায় ১২ শতাংশ। বাংলাদেশে এই সেক্টরে নারীকর্মী আরও বাড়ানো উচিত বলে আমি মনে করি।’তিনি আরও বলেন, ‘শুধু পাইলট-ক্রু নয়, এভিয়েশন খাতের টেকনিশিয়ান, ইঞ্জিনিয়ার, কন্ট্রোলারের সংখ্যাও বাড়াতে হবে।’
মন্তব্য করুন