গোয়ালন্দে রাস্তা নির্মাণ কাজে অনিয়মের অভিযোগ
রাজবাড়ী প্রতিনিধি: রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের রাস্তা নির্মাণ কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার বেড়িবাঁধ গোধুলি বাজার হতে নবুওসি মদ্দিনপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত ৬০ লাখ ৪৩ হাজার টাকা ব্যয়ে ৩ কিলো ৪৪৬ মিটার রাস্তার কাজে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার ও যথাযথভাবে কাজ করা হয়নি বলে দাবি করেছে স্থানীয়রা। তাদের দাবি, স্থানীয় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স ডিপ এন্টারপ্রাইজ ও গোয়ালন্দ উপজেলার এলজিইডির কর্মকর্তার যোগসাজসে এ অনিয়ম হয়েছে।সরেজমিন গিয়ে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, সদ্য তৈরি করা রাস্তাটিতে গাড়ি চলাচল করা তো দূরের কথা, পথচারীদের পায়ের ছোঁয়ায় ও ঝাড়ুর মাথায় উঠে যাচ্ছে রাস্তার কার্পেটিংয়ের পাথর। এছাড়াও কার্পেটিং নিচে যে ইটের খোয়া ব্যবহার করা হয়েছে, তা খুবই নিম্নমানের। শুধু তাই নয়, রাস্তার দুইপাশের ২ ফিট করে ৪ ফিট রাস্তা রোলার দিয়ে সমান পর্যন্ত করা হয়নি। আর কার্পেটিংয়ের কাজে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের ভিটুমিন ও রাবিশ কোয়ালিটির বড় বড় পাথর। এছাড়াও কার্পেটিং যে পরিমাণ ভিটুমিন ব্যবহার করা হয়েছে, তা পরিমাণে খুবই নগন্য। যার কারণে রাস্তার কাজ শেষ করার মাত্র ৪ থেকে ৫ দিনের মাথায় অন্তত ২০ থেকে ২৫টি জায়গা থেকে উঠে যাচ্ছে কার্পেটিংয়ের পাথর।এবিষয় সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে স্থানীয় দারোগ আলি নামে এক ব্যক্তি বলেন, চোখের সামনে দেখা চলছে এই রাস্তার কাজ। মোটেও ভালো হয়নি। এখনই কার্পেটিং ওঠে যাচ্ছে। দীর্ঘ কয়েক বছর অপেক্ষা করার পর রাস্তাটি কাজ হয়েছে। তাও আবার লামছাম। গাড়ি চলাচল করলে ৩ মাসও টিকার সম্ভবনা নাই।মিরাজ আলি, সমছের, কাদেরসহ আরও কয়েকজন গ্রামবাসী বলেন, তাড়াহুড়ো করার কারণে রাস্তার দুইপাশে অন্তত দুইফিড করে রাস্তা রোলার দিয়ে সমান পর্যন্ত করার সময় পায়নি এলজিইডি ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের লোকেরা। এসময় আমরা এলাকাবাসীরা বাঁধা দিলে আমদের উপর ক্ষিপ্ত হয় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের লোকেরা।আবুল মৃধা নামক আরেকজন বলেন, পায়ের নখের গুঁতায় ওঠে যাচ্ছে কার্পেটিংয়ের পাথর। যারা রাস্তার কাজ করছে, তারা প্রভাবশালী হওয়া ভয়ে আমরা কিছুই বলতে পারি না।এবিষয়ে উজানচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গুলজার হোসেন মৃধার সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান জাতীয় সংসদ নির্বাচন চলাকালীন সময়ে পোড়ামাটিরর মত ইটের খোয়া ও রাবিস আইটেমের পাথর কুচি ব্যবহার করে রাতের অন্ধকারে কোন রকমে এব্রো থেব্রোভাবে কাজটা করে চলে গেছে। আমি তো অত্র ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, আমার কাছে জিজ্ঞাসা পর্যন্ত করেনি।অন্যদিকে সিডিউল অনুসারে কাজ করা হয়েছে বলে দাবি করছেন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ডিপ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী সেলিম। পরে প্রশ্ন করা হয়েছিলো, রাস্তা কাজ শেষ করার মাত্র ৪ থেকে ৫ দিনের মাথায় কার্পেটিংয়ের পাথর উঠে যাচ্ছে কেন? এমন প্রশ্নের সঠিক উত্তর না দিয়ে ফোনটি কেটে দেন তিনি।এদিকে এলজিইডি’র গোয়ালন্দ উপজেলার ইঞ্জিনিয়ার বিদ্যুৎ কুমার দাসের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি প্রতিবেদককে নিউজ না করার শর্তে আর্থিক সুবিধা দেয়ার প্রস্তাব দেন। প্রতিবেদক তার এমন প্রস্তাবে রাজি না হওয়ার কারণে তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে অকথ্য ভাষায় কথা বলেন ওই ইঞ্জিনিয়ার। পরে প্রতিবেদককে বলেন, আমি সাংবাদিকদের মানি না।এবিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) প্রধান প্রকৌশলী আলি আখতার হোসেনকে মুঠোফোনে বিষয়টি অবগত করা হলে তিনি প্রতিবেদককে বলেন, বিষয়টি নিয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।