সিলেট প্রতিনিধি: হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাংলাদেশ বিমানের কানাডাগামী ৪৫ জন যাত্রীকে ফ্লাইট না দিয়ে বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় সিলেটজুড়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে। এরই মধ্যে এ ঘটনায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল উদ্দিনকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী।নোটিশে ৭ দিনের মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের চেয়ারম্যান মোস্তাফা কামাল উদ্দিনকে জবাব দিতে অনুরোধ করা হয়েছে। অন্যথায় যাত্রীদের ব্যক্তিগত হয়রানি, মানহানি এবং আর্থিক ক্ষতির পরিপ্রেক্ষিতে মামলা দায়ের করা হবে বলে জানানো হয়েছে।জালালাবাদ কল্যাণ পরিষদ, সিলেটের উদ্যোগে ১৪ নভেম্বর মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কাজী মোশাররফ রাশেদ অ্যাডভোকেট এই আইনি নোটিশ প্রদান করেন।নোটিশে উল্লেখ করা হয়, পর্যটক ভিসায় কানাডা রওয়ানা দেওয়া সিলেটের ৪৫ জন যাত্রীকে ৬ নভেম্বর ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটকে দেয় বাংলাদেশ বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। আমন্ত্রণপত্র সঠিক না থাকার অভিযোগে ওই ৪৫ যাত্রীকে অফলোড করে ফেরত পাঠায় বিমান কর্তৃপক্ষ। বৈধ ভিসা থাকা সত্ত্বেও বিমান কর্তৃপক্ষ কেন যাত্রীদের আটকাবে? এ নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন।এই ঘটনায় বিমানের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ সুবিধা আদায়ের জন্য যাত্রী হয়রানি ও জিম্মি করারও অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে বিমান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ক্ষোভ প্রকাশ করছেন অনেকে।আইনজীবী কাজী মোশাররফ রাশেদ আইনি নোটিশে আরও উল্লেখ করেন, কানাডা হাইকমিশন কর্তৃক ওই যাত্রীদের সংশ্লিষ্ট ভিসা আবেদন ও আমন্ত্রণপত্রটি বিশ্বাসযোগ্য মনে করেই ইতোমধ্যে প্রত্যেককে বৈধ ভিসা ইস্যু করেছে। প্রত্যেক যাত্রী কানাডা যাওয়ার জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নির্ধারিত তারিখের নির্ধারিত মূল্যের আসা-যাওয়ার বিমান টিকিট কিনেছিলেন। পরবর্তীতে সিলেট ওসমানী বিমান বন্দরে তাদের ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ঢাকা এসে ট্রানজিট লাউঞ্জে টরন্টোগামী বিমানের কানেকটিং ফ্লাইটের অপেক্ষায় ছিলেন।হজরত শাহজালাল (রহ.) বিমানবন্দরের একটি সূত্র জানায়, ৬ নভেম্বর রাতে ওই ৪৫ জন ট্রানজিটে অপেক্ষা করার সময় বিমানের পাসপোর্ট চেকিং ইউনিটের সদস্যদের সন্দেহ হয়। তারা দেখতে পান, ওই যাত্রীদের প্রায় সবার পাসপোর্টে পূর্বে অন্য কোনো দেশে ভ্রমণের ভিসা না থাকলেও কানাডার ভিজিট ভিসা লাগানো। এতে তাদের সন্দেহ আরও বাড়ে। এসময় বিমান কর্মকর্তারা তাদের আমন্ত্রণপত্র ও হোটেল বুকিং দেখতে চান। তখন তারা দেখতে পান, ওই যাত্রীদের সবাই একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে কানাডা যাচ্ছেন। আর হোটেল বুকিংয়ের পরিবর্তে তারা কিছু বাড়ি ভাড়ার কাগজপত্র দেখান।
১৫ নভেম্বর ২০২৩ ০৬:৪৪ এএম
জবি প্রতিনিধি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে বিবাহিত ও অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রীদের হল ছাড়ার নির্দেশনা প্রত্যাহার করতে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. সোলায়মান তুষার। ২৭ সেপ্টেম্বর বুধবার তিনি জবি প্রশাসনকে এ নোটিশটি পাঠিয়েছেন। নোটিশের অনুলিপি বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, প্রক্টর ও হল প্রভোস্টকে পাঠানো হয়।নোটিশে তিনি উল্লেখ করেন, সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারি, বিবাহিত ও গর্ভবতী হওয়ার কারণে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে ছাত্রীরা আবাসিক সিট পাবে না বলে নোটিশ দেয়া হয়েছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে ‘আবাসিকতা লাভ ও বসবাসের শর্তাবলি এবং আচরণ ও শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালা ২০২১’-এর ১৭ নম্বর ধারা অনুযায়ী বিবাহিত ও গর্ভবতী ছাত্রীরা আবাসিক সিট পাবে না বিধায় তারা দ্রুত হলের সিট ছেড়ে দেবেন। অন্যথায়, তাদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে মর্মে গত ২৫ সেপ্টেম্বর বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে নোটিশ দেয়া হয়েছে।এই বিধানের ফলে কার্যত বিবাহিত ও গর্ভবতী ছাত্রীরা হলের আবাসিক সুবিধা গ্রহণ করে উচ্চশিক্ষা অর্জনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে। বিষয়টি নিয়ে বর্তমানে ছাত্রীদের মধ্যে মারাত্মক অসন্তোষ এবং ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। দেশের একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন বৈষম্যমূলক বিধান থাকার বিষয়ে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় গুরুত্বের সঙ্গে সংবাদ প্রকাশ করেছে।নোটিশে উল্লেখ করা হয় বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, ‘সব নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং ২৮ (১) (২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোনও নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন করবে না। রাষ্ট্র ও গণজীবনের সর্বস্তরে নারী-পুরুষের সমান অধিকার লাভ করবেন।' বিবাহিত ও গর্ভবতী ছাত্রীদের জন্য এমন নিয়ম নারীদের উচ্চশিক্ষা অর্জনের পথে অন্তরায় এবং বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭ ও ২৮ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক।ব্যারিস্টার মো. সোলায়মান তুষার আরও বলেন, নোটিশ প্রাপ্তির ৫ কার্যদিবসের মধ্যে নারী শিক্ষার্থীদের প্রতি বৈষম্যমূলক বিধানটি বাতিল করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। অন্যথায় উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হতে বাধ্য হব।এই নোটিশের বিষয়ে হল প্রভোস্ট ড. দীপিকা রানী সরকার বলেন, এখনো নোটিশ হাতে পাইনি, যারা এই ধরনের কাজ করতেছে তারা ভুল করতেছেন। আমাদের হল একটা, আমরা চাই যারা একেবারে অস্বচ্ছল তাদের সুযোগ করে দিতে। বিবাহিত মেয়েরা অবিবাহিত মেয়েদের সামনে বিভিন্নভাবে কথা বলে, রাতে কান্নাকাটি করে, এতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় সমস্যা হয়। এমনকি আমাদের হলে মেডিকেল সেবা নেই অন্তঃসত্ত্বা কারো যদি হঠাৎ কঠিন কোনো সমস্যা দেখা দেয় তখন কি অবস্থা হবে। তাদের কে দেখবে। আরেকটা বিষয় হলো যারা বিবাহিত তাদের স্বামী স্বচ্ছল, আর ২ একজন যদি বেশি সমস্যাগ্রস্থ থাকে সেটা আমরা দেখব বলেছি। নোটিশের বিষয়ে আমাদের আইনজীবী জবাব দিবেন।"
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৯:২৯ এএম