রংপুর ব্যুরো: পুলিশের বাধার মুখে রংপুরে কৃষক সমিতির 'তিস্তা কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। তিস্তা নদীর ন্যায্য হিস্যা আদায় ও বরেন্দ্র অঞ্চলে সেচের পানি বিতরণে বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষের অনিয়ম-হয়রানি-দুর্নীতি বন্ধসহ ৮ দফা দাবিতে সমাবেশটির আয়োজন করে বাংলাদেশ কৃষক সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটি।৯ মার্চ শনিবার দুপুরে রংপুরের পাবলিক লাইব্রেরির সামনে পুলিশের বাধার মুখে পণ্ড হওয়ার পর নগরীর শাপলা চত্তরে অনুষ্ঠিত হয় 'তিস্তা কৃষক সমাবেশ'। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল রংপুর শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।তিস্তা কৃষক সমাবেশ থেকে কৃষক জনগোষ্ঠী নিম্নোক্ত দাবিসমূহ উত্থাপন করেছেন:• সারাবছর তিস্তা নদীর স্বাভাবিক পানি প্রবাহ নিশ্চিত কর।• ভারতের সঙ্গে দ্রুত পানি চুক্তি করে পানির হিস্যা আদায় কর। তিস্তা নদীকে মেরে ফেলার হাত থেকে রক্ষা কর।• তিস্তাসহ অন্যান্য নদী, খাল, বিল, জলাশয় পরিকল্পিতভাবে খনন করে তলদেশের নাব্যতা বজায় রাখার উদ্যোগ নিতে হবে।• দেশ প্রেমিক নদী গবেষকদের পরামর্শের ভিত্তিতে তিস্তার পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা নিতে হবে।• তিস্তা নদীর দুই পাড়ের মানুষের যাতায়াত ও কৃষিপণ্য দ্রুত হাট-বাজারে নেওয়ার জন্য সড়ক ব্যবস্থার উন্নয়ন কর।• নদী ভাঙন, কৃষকের ফসল, গবাদিপশু, ঘরবাড়ি রক্ষার জন্য পরিকল্পিত স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ কর।• নদী ভাঙনে (সিকস্তি) ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের ক্ষতিপূরণ দাও। জেগে উঠা জমি (পয়স্তি জমি) প্রকৃত মালিকদের ফিরিয়ে দাও। ভূমিহীন মানুষকে খাসজমি বরাদ্দ দাও।• বরেন্দ্র অঞ্চলে সেচের পানি বিতরণে ও গভীর নলকূপের অপারেটর নিয়োগে অনিয়ম-হয়রানি-দুর্নীতি বন্ধ কর। অপারেটরদের দৌরাত্ম্য রোধ কর।কৃষক সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আলতাফ হোসাইনের সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আবিদ হোসেন অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।সমাবেশে বক্তৃতা করেন- কৃষক সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন, সহ-সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হোসেন খান, নির্বাহী কমিটির সদস্য রাগীব আহসান মুন্না, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও রংপুর জেলা কমিটির সভাপতি আমজাদ হোসেন সরকার, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও রংপুর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও গাইবান্ধা জেলা কমিটির সভাপতি মো. সাদেকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অ্যাড. মহসিন রেজা, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো. তাজুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও ঠাকুরগাঁও জেলা কমিটির সভাপতি মো. ইয়াকুব হোসেন, ঠাকুরগাঁও জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোর্তুজা আলম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও কুড়িগ্রাম জেলা কমিটির সভাপতি নূর মোহাম্মদ আনসার, দিনাজপুর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হাসান সিদ্দিকী, কুড়িগ্রাম জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার রায়, লালমনিরহাট জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মধুসূদন রায়সহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।এতে সংহতি বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি রংপুর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড কাফী সরকার। এতে কুড়িগ্রাম লালমনিরহাট রংপুর নীলফামারী গাইবান্ধা ও ঠাকুরগাঁও জেলার কয়েক হাজার কৃষক অংশগ্রহণ করেন।সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের বিশেষভাবে কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, রংপুর, নীলফামারীসহ অন্যান্য জেলার কৃষকসহ সাধারণ জনগোষ্ঠী এবং এই জেলাসমূহের পরিবেশ, প্রকৃতি, প্রাণ ও জীববৈচিত্র্য তিস্তা নদীর উপর নির্ভরশীল। শুষ্ক মৌসুমে বিশেষভাবে ডিসেম্বর থেকে মে মাস পর্যন্ত তিস্তা নদী প্রায় পানিশুন্য হয়ে শুকনো বালুর রাশিতে পরিনত হয়। এই সময়কালে নদী মাছ শুন্য হয়ে যাওয়ার মৎস্যজীবীরা চরম সঙ্কটের মুখোমুখি হয়।নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ৫৭টি আন্তঃসীমান্ত নদী প্রবাহিত হয়েছে। এরমধ্যে ৫৪ টি নদী ভারত- বাংলাদেশে যৌথভাবে প্রবাহিত। তিস্তা নদী একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এবং দীর্ঘতর নদী।ভারতের মধ্যে পানির প্রবাহ বণ্টন ও নদী ব্যবস্থাপনার জন্য যৌথ নদী কমিশন আছে। গঙ্গা নদী পানি চুক্তিও বিদ্যমান থাকলেও চুক্তিভঙ্গ করে তিস্তা নদীর উপর ভারতের গজলডোবায় বাধ নির্মাণ করে বাংলাদেশের প্রাপ্য পানি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। এরফলে তিস্তাসহ তিস্তা থেকে প্রবাহিত প্রায় ২৪ টি নদী পানিশুন্যতায় মৃতপ্রায়।আগামী দিনে তিস্তা নদীসহ মানবদেহের শিরা-উপশিরার মতো প্রবাহিত নদীসমূহকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচাতে, পরিবেশ-প্রকৃতি-প্রাণ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে, জীবন-জীবিকার নিরন্তর সংগ্রামে উত্তর জনপদের কৃষি ও কৃষকদের বাঁচাতে অবিলম্বে কার্যকর ব্যাবস্থা গ্রহণ ও তা বাস্তবায়ন না করলে বাংলাদেশ কৃষক সমিতি উত্তরবঙ্গের ১৬টি জেলার কৃষকদের সাথে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন পালন করবে।
১০ মার্চ ২০২৪ ০৬:০৩ এএম
নওগাঁ প্রতিনিধি: ‘সোনালী আঁশের সোনার দেশ, জাতির পিতার বাংলাদেশ’ এই প্রতিপাদ্যে পাট চাষে উদ্বুদ্ধ করতে নওগাঁয় পাটচাষী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।৪ মার্চ সোমবার দুপুর ১২ টায় সদর উপজেলা হলরুমে উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর পাট ও পাটবীজ উৎপাদন এবং সম্প্রসারণ প্রকল্প ও উপজেলা প্রশাসন পাট অধিদফত এ আয়োজন করে।অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নওগাঁ সদর আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার নিজাম উদ্দিন জলিল জন।এ সময় বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) শওকত মেহেদী সেতুর সভাপতিত্বে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ, পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা আখতারুজ্জামান, জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবু বকর সিদ্দীক ও সাবেক সভাপতি কায়েস উদ্দিন।পাট চাষে চাষীদের উদ্বুদ্ধ করতে জেলার চারটি (নওগাঁ সদর, মান্দা, বদলগাছী ও ধামইরহাট) উপজেলার ২০০ জন চাষিদের নিয়ে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। পরে চাষিদের প্রণোদনা প্রদান করে প্রধান অতিথি।পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা আখতারুজ্জামান বলেন, পাটচাষে উদ্বুদ্ধ করতে চারটি উপজেলার ২০০ জন চাষিদের নিয়ে সমাবেশ করা হয়। এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হবে। এর ফলে অর্থনৈতিকভাবে সফলতা বয়ে নিয়ে আসবে। জেলার ১০ হাজার ৫০০ জন চাষিকে উন্নত জাতের পাট বীজ দিয়ে সহযোগিতা করা হবে। এছাড়া বিনামূল্যে সার প্রদান করা হবে।নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, প্রতি বছর জমিতে একই ফসল না করে পর্যায়ক্রমে (পরিবর্তন) ভিন্ন ভিন্ন ফসলের আবাদ করা প্রয়োজন। এতে জমির স্বাস্থ্য ভাল থাকবে এবং রোগ বালাই কম হবে। পাট চাষে জমির উর্বরতা বাড়ে।
০৪ মার্চ ২০২৪ ০৩:২৪ পিএম
কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: কলাপাড়ায় ৪০ কেজিতে মণ ও ধানের লাভজনক দাম নির্ধারণসহ নানা দাবিতে কৃষক সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে। এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ কৃষক সমিতি কলাপাড়া উপজেলা শাখা।১২ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে কৃষক সমিতি উপজেলা শাখার আয়োজনে শহীদ সুরেন্দ্র মোহন চৌধুরী সড়কে কলাপাড়া প্রেসক্লাবের সামনে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা শাখার সভাপতি জি. এম মাহবুবুর রহমান। এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি খেপুপাড়া শাখার সম্পাদক এবং কৃষক সমিতি কলাপাড়া উপজেলা শাখা সদস্য কমরেড নাসির তালুকদার, বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতি কলাপাড়া উপজেলা শাখার আহবায়ক মো. রফিকুল ইসলাম, কৃষক সমিতি কলাপাড়া উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. আতাজুল ইসলাম প্রমুখ ।এসময় বক্তারা আন্তর্জাতিক মাপ ৪০ কেজিতে মন নির্ধারণসহ নানা দাবি তুলে ধরেন।এছাড়াও কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন, কৃষকরা উৎপাদিত ফসলের লাভজনক দাম না পেয়ে প্রতিবছর ঋণগ্রস্ত হয়ে এ পেশা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে।সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি পৌর শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা পরিষদ চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।এরপর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে স্মারকলিপি দেয়া হয়। এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন উপজেলার সকল ব্যাবসায়ীকে ৪০ কেজিতে ধানের মন নির্ধারণ করে ক্রয় করার নির্দেশ প্রদান করেন। নির্দেশ অমান্য করে ধান ক্রয় করলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান তিনি।
১২ ডিসেম্বর ২০২৩ ১২:৪২ পিএম