মাহবুব জুয়েল, তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোরে আলুর দাম নিয়ে আলু চাষিরা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। আলু চাষিরা জানান, মৌসুমের শুরুর দিকে আলুর ভালো দাম পেলেও ভরা মৌসুমে বাজার ভালো নয়। অধিকাংশক্ষেত্রে বর্তমান বাজার মূল্যে আলু বিক্রি করে উৎপাদন খরচও উঠছে না।উপজেলার তালন্দ ইউনিয়নের নারায়নপুর গ্রামের আলু চাষী মইফুল ইসলাম ও শরিফুল ইসলাম জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার আলুর ভালো চাহিদা ও দাম থাকায় লাভের আশায় আলু চাষে ঝুঁকে ছিলেন। কিন্তু যখন মাঠ থেকে আলু উত্তোলন শুরু হবে, এমন সময় ভারত থেকে আলু আমদানি করায় দেশি আলুর দাম কমে গেছে। এতে কৃষকেরা লোকসানের মুখে পড়বে।আলু চাষী সেলিম বলেন, এবার মৌসুমের শুরুতে বাজারে আগাম আলুর দাম উঠেছিল আশি থেকে একশ’ টাকা কেজি। সেই হিসাব করে আমরা আশা করে ছিলাম এবার আলু আবাদ করে বেশ লাভবান হতে পারবো। যে কারণে আগের বছরের তুলনায় এবার বীজ, সার, সেচ, হাল, শ্রমিক, কীটনাশক ইত্যাদির খরচ কিছুটা বেশি হলেও আলু আবাদ করেছিলাম।তিনি আরও বলেন, শুরুর দিকে আবহাওয়া ভালো থাকায় আলুর গাছও ভালো হয়েছিল। কিন্তু মাঝে এমন শীত আর কুয়াশা পড়লো, এতে গাছে পচন ধরে অনেক গাছ নষ্ট হয়ে গেছে। কয়েকবার ওষুধ স্প্রে করে সেই আলুর গাছ রক্ষা করা হয়েছে। কিন্তু তারপরও আলুর ফলন ব্যাহত হয়েছে। গতবার এক বিঘা জমিতে একশ’ মন আলুর ফলন হলেও এবারে বৈরি আবহাওয়ার কারণে ৭০ থেকে ৮০ বস্তার বেশি হচ্ছে না।আলু চাষী মইফুল ইসলাম বলেন, তিনি এবার একশ’ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি। প্রতি বিঘায় আমার খরচ হবে প্রায় ৬০ হাজার টাকা। মাঘের শীতে দিনব্যাপী বৃষ্টির কারণে বোঝার উপায় নেই শীতকাল, না বর্ষাকাল। মাঘের শীতে আষাঢ়ের মতো এমন টানা বৃষ্টিতে ডুবে গেছে আলু ক্ষেত। এতে ক্ষেতে পানি জমে থাকার কারণে আলুর ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করছেন তিনি।জানা গেছে, তানোরে চলতি মৌসুমে প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে- যা দেশের তৃতীয়। এবার এক বিঘা আলু চাষে খরচ প্রায় ৬০ হাজার টাকা এবং এক কেজি আলু উৎপাদনে খরচ প্রায় ১৫ টাকা। এর মধ্যে জমির ভাড়া ২০ হাজার, জমি প্রস্তুতি প্রায় আড়াই হাজার, বীজ প্রায় ১৬ হাজার, সার প্রায় ৬ হাজার, কীটনাশক প্রায় ৩ হাজার, রোপণ ব্যয় প্রায় ৩ হাজার, টপকরণ প্রায় ৩ হাজার, সেচ প্রায় দেড় হাজার, দেখভাল ব্যয় প্রায় ২ হাজার ও উত্তোলন ব্যয় প্রায় ৫ হাজার টাকা।প্রতি বিঘায় গড় উদপাদন ৭০ বস্তা বা সাড়ে ৪ হাজার কেজি। এছাড়াও আলু স্টোরজাতকরণে প্রতি কেজির খরচ প্রায় ৮ টাকা। তাছাড়া ৬০ কেজি ওজনের বস্তা স্টোরে রাখা হলে বের করার সময় ৫০ কেজি আলু পাওয়া যায়।আলু চাষী আব্দুর রশিদ বলেন, এবার লাভের আশায় আলু চাষ করেছিলাম। কিন্তু সেই আশায় তো আমাদের গুড়েবালি। ভারত থেকে আলু আমদানির ফলে দাম কমে এসেছে। বর্তমানে ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা মণ দরে আলু বিক্রি করতে হচ্ছে। যে হারে খরচ বেড়েছে, বিশেষ করে সার, বীজ, হালচাষ, এককথায় সবকিছুর দাম বেশি কিন্তু আলুর দাম কম। যার কারণে আলু চাষ করে এবার লাভের আশা করা যাচ্ছে না।এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মেদ বলেন, এবার উপজেলায় প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে- যা দেশের তৃতীয়। নিয়মিত মনিটরিং করার জন্য রোগবালাই কম ছিল।তিনি আরও বলেন, দাম নির্ধারণ বা নিয়ন্ত্রণ করা তো কৃষি অফিসের কাজ না। এজন্য বিপণন বিভাগ রয়েছে। তবে বাজারে যে দাম আছে হিমাগারে রাখলে পরে দাম পাবে বলে তিনি মনে করেন।
২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ১২:২৩ পিএম
মাহবুব জুয়েল, তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোরে আলুর দাম নিয়ে আলু চাষিরা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। আলু চাষিরা জানান, মৌসুমের শুরুর দিকে আলুর ভালো দাম পেলেও ভরা মৌসুমে বাজার ভালো নয়। অধিকাংশক্ষেত্রে বর্তমান বাজার মূল্যে আলু বিক্রি করে উৎপাদন খরচও উঠছে না।উপজেলার তালন্দ ইউনিয়নের নারায়নপুর গ্রামের আলু চাষী মইফুল ইসলাম ও শরিফুল ইসলাম জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার আলুর ভালো চাহিদা ও দাম থাকায় লাভের আশায় আলু চাষে ঝুঁকে ছিলেন। কিন্তু যখন মাঠ থেকে আলু উত্তোলন শুরু হবে, এমন সময় ভারত থেকে আলু আমদানি করায় দেশি আলুর দাম কমে গেছে। এতে কৃষকেরা লোকসানের মুখে পড়বে।আলু চাষী সেলিম বলেন, এবার মৌসুমের শুরুতে বাজারে আগাম আলুর দাম উঠেছিল আশি থেকে একশ’ টাকা কেজি। সেই হিসাব করে আমরা আশা করে ছিলাম এবার আলু আবাদ করে বেশ লাভবান হতে পারবো। যে কারণে আগের বছরের তুলনায় এবার বীজ, সার, সেচ, হাল, শ্রমিক, কীটনাশক ইত্যাদির খরচ কিছুটা বেশি হলেও আলু আবাদ করেছিলাম।তিনি আরও বলেন, শুরুর দিকে আবহাওয়া ভালো থাকায় আলুর গাছও ভালো হয়েছিল। কিন্তু মাঝে এমন শীত আর কুয়াশা পড়লো, এতে গাছে পচন ধরে অনেক গাছ নষ্ট হয়ে গেছে। কয়েকবার ওষুধ স্প্রে করে সেই আলুর গাছ রক্ষা করা হয়েছে। কিন্তু তারপরও আলুর ফলন ব্যাহত হয়েছে। গতবার এক বিঘা জমিতে একশ’ মন আলুর ফলন হলেও এবারে বৈরি আবহাওয়ার কারণে ৭০ থেকে ৮০ বস্তার বেশি হচ্ছে না।আলু চাষী মইফুল ইসলাম বলেন, তিনি এবার একশ’ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি। প্রতি বিঘায় আমার খরচ হবে প্রায় ৬০ হাজার টাকা। মাঘের শীতে দিনব্যাপী বৃষ্টির কারণে বোঝার উপায় নেই শীতকাল, না বর্ষাকাল। মাঘের শীতে আষাঢ়ের মতো এমন টানা বৃষ্টিতে ডুবে গেছে আলু ক্ষেত। এতে ক্ষেতে পানি জমে থাকার কারণে আলুর ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করছেন তিনি।জানা গেছে, তানোরে চলতি মৌসুমে প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে- যা দেশের তৃতীয়। এবার এক বিঘা আলু চাষে খরচ প্রায় ৬০ হাজার টাকা এবং এক কেজি আলু উৎপাদনে খরচ প্রায় ১৫ টাকা। এর মধ্যে জমির ভাড়া ২০ হাজার, জমি প্রস্তুতি প্রায় আড়াই হাজার, বীজ প্রায় ১৬ হাজার, সার প্রায় ৬ হাজার, কীটনাশক প্রায় ৩ হাজার, রোপণ ব্যয় প্রায় ৩ হাজার, টপকরণ প্রায় ৩ হাজার, সেচ প্রায় দেড় হাজার, দেখভাল ব্যয় প্রায় ২ হাজার ও উত্তোলন ব্যয় প্রায় ৫ হাজার টাকা।প্রতি বিঘায় গড় উদপাদন ৭০ বস্তা বা সাড়ে ৪ হাজার কেজি। এছাড়াও আলু স্টোরজাতকরণে প্রতি কেজির খরচ প্রায় ৮ টাকা। তাছাড়া ৬০ কেজি ওজনের বস্তা স্টোরে রাখা হলে বের করার সময় ৫০ কেজি আলু পাওয়া যায়।আলু চাষী আব্দুর রশিদ বলেন, এবার লাভের আশায় আলু চাষ করেছিলাম। কিন্তু সেই আশায় তো আমাদের গুড়েবালি। ভারত থেকে আলু আমদানির ফলে দাম কমে এসেছে। বর্তমানে ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা মণ দরে আলু বিক্রি করতে হচ্ছে। যে হারে খরচ বেড়েছে, বিশেষ করে সার, বীজ, হালচাষ, এককথায় সবকিছুর দাম বেশি কিন্তু আলুর দাম কম। যার কারণে আলু চাষ করে এবার লাভের আশা করা যাচ্ছে না।এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মেদ বলেন, এবার উপজেলায় প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে- যা দেশের তৃতীয়। নিয়মিত মনিটরিং করার জন্য রোগবালাই কম ছিল।তিনি আরও বলেন, দাম নির্ধারণ বা নিয়ন্ত্রণ করা তো কৃষি অফিসের কাজ না। এজন্য বিপণন বিভাগ রয়েছে। তবে বাজারে যে দাম আছে হিমাগারে রাখলে পরে দাম পাবে বলে তিনি মনে করেন।
২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ১২:২৩ পিএম
সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি: নীলফামারী জেলার বিভিন্ন স্থানের ছোট বড় নদীগুলো এখন পানি শূন্য। অনেকটা নদীগুলো যেন মরা খালে পরিণত হয়েছে। যার কারণে নদীর বুকে হচ্ছে চাষাবাদ। বিভিন্ন ফসলে নদীর বুক ভরে গেছে।এক সময় সারা বছর ধরে এ অঞ্চলের নদীগুলোতে পানি থাকতো। হঠাৎ কোনো কোনো নদী শুকিয়ে যেতে দেখা যেত। তবে বেশীর ভাগ নদীতে থাকত পানি। ওই নদীর পানি সেচ কাজে ব্যবহার করা হতো। নদীর দুই পাশের উঁচু নিচু জমিতে পানি সেচ দিয়ে বিভিন্ন ফসলের চাষ করতো চাষিরা। ফাল্গুন মাস আসার আগেই নদী পানিশূন্য হয়ে পড়ে। পানির অভাবে চাষিরা জমিতে সেচ দিতে পারে না।ডিমলা উপজেলার বুড়ি তিস্তা, পাঙ্গা নদী, তিস্তা, কিশোরগঞ্জ উপজেলার বাহাগিলি নদী, সৈয়দপুর উপজেলার খড়খড়িয়া নদী, চিকলী নদী আজ পানিশূন্য। এ নদীগুলোর বুকে এখন বেশীর ভাগ হচ্ছে ধান ও ভুট্টা চাষ। প্রশাসনের হস্তক্ষেপ না থাকায় দখল ও দূষণের কবলে পড়েছে নদী সমুহ। আবার কোনো কোনো নদী চাষাবাদের নামে দখলের চেষ্টা করা হয়ে থাকে। এলাকার কতিপয় ব্যক্তি মাছ ও ধান চাষের নামে দখলবাজীতে মেতে উঠেছেন। ফলে নদীর উপকারিতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।নদী পাড়ের কৃষক সুমন মিয়া ও উজ্জল হোসেন জানান, এক সময় নদী সমুহে পর্যাপ্ত পানি প্রবাহ ছিল। নদীর পানি দিয়ে চাষাবাদ করার পাশাপাশি নিত্য প্রয়োজনীয় সব কাজ করা যেতো। আমন ও বোরো ধানের মৌসুমে জমিতে সেচ দেওয়ার কোনো চিন্তা করতে হতো না। এখন আর জমিতে সেচ দেয়ার মতো পানি নেই। নদী শুকিয়ে হচ্ছে ফসল চাষ। নদী সমুহে দীর্ঘদিন ধরে খনন ও ড্রেজিং না করায় নদীর তলদেশে পলি জমে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। নদীর দুই তীরে যাদের জমি আছে তারাই নদী দখলের সাথে জড়িত। কৈমারী ইউনিয়নের গাবরোল এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা মকবুল হোসেন বলেন, নদীকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন হাট বাজার ও শহর গড়ে উঠেছে। নদীর যেটুকু অস্তিত্ব রয়েছে তা এখন দখল ও দূষণের কবলে। পুরো নদীগুলো ধানের জমিতে পরিণত হয়েছে।নদী রক্ষা কমিটির সাইদুল ইসলাম নামে একজন বলেন, উপজেলার ভিতর দিয়ে প্রবাহিত নদী সমুহ পুনঃখনন ও ড্রেজিং করা না হলে আগামী দুই যুগ পর হয়ত আগামী প্রজন্ম বিশ্বাসই করতে চাইবে না জলঢাকায় বিভিন্ন নদী ছিল।এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবিএম সারোয়ার রাব্বী জানান, নদী দখলের জায়গাগুলোতে আমরা উচ্ছেদের ব্যবস্থা করছি। শুকনো মৌসুমে নদীতে ধান চাষ করে দখলে নিলেও বর্ষায় পানি হলে তা দখল মুক্ত হয়ে যায়। নদী রক্ষায় সরকারের নানা মুখী পরিকল্পনা রয়েছে। যারা দখলের সাথে জড়িত তাদেরকে অবশ্যই আইনের আওতায় এনে জবাবদিহিতা করতে হবে।
২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ০২:৩৫ এএম