সাদুল্লাপুর (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি: রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর জোনাল অফিসে বৃদ্ধি পেয়েছে দালালের দৌরাত্ম্য। এ অফিসকে ঘিরে গড়ে উঠছে তদবিরকারী ও দালালচক্রের বিশাল নেটওয়ার্ক। তারা নতুন লাইন দেওয়ার কথা বলে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এরই মধ্যে সুমন মিয়া নামের এক ইলেকট্রিশিয়ান সেচ লাইন দেওয়ার নাম করে প্রতিবন্ধী জহুরুল ইসলামকে ভুয়া রশিদ দিয়ে ১ লাখ ৪৪ হাজার ১১৫ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে।জানা যায়, সাদুল্লাপুর উপজেলার ইদিলপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ লক্ষীপুর গ্রামের মোফাজ্জল হোসেনের ছেলে প্রতিবন্ধী জহুরুল ইসলাম সেচের জন্য গত বছরের ফেব্রয়ারি মাসে বরেন্দ্র থেকে লাইসেন্স প্রাপ্ত হয়। এরপর পল্লী বিদ্যুতের সাদুল্লাপুর জোনাল অফিসে লাইন নির্মাণের আবেদন করতে গেলে ধাপেরহাট ইউনিয়নের আরাজী ছত্রগাছা গ্রামের (আমবাগান) আবু বক্করের ছেলে সুমন মিয়া নিজেকে ইলেকট্রিশিয়ান পরিচয় দেয়। তারপর জহুরুলের কাছে ১ লাখ ৪৪ হাজার ১১৫ টাকা হাতিয়ে নিয়ে একটি রশিদ দেয়। এরপর থেকে লাইন নির্মাণে সুমন মিয়া নানা টালবাহানা করলে গ্রাহক জহুরুলের সন্দেহ হয়। পরবর্তীতে সাদুল্লাপুর জোনাল অফিসে গিয়ে জানতে পারেন ওই রশিদটি ভুয়া দিয়েছে সুমন মিয়া। এভাবে কথিত সুমন মিয়া বিদ্যুৎ অফিসের কর্তাদের নাম ভাঙ্গিয়ে আরও বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা নিয়ে প্রতারণা করে আসছে বলে একাধিক সুত্রে জানা গেছে।শুধু সুমন মিয়াই নয়, জাকারিয়া নামের দালালসহ আরও বেশ কিছু দালাল চক্র সাধারণ মানুষের নতুন মিটার ও লাইন দেওয়ার নামে প্রতারণায় তুঙ্গে ওঠেছে। এখানে দালালচক্র বৃদ্ধি পেলেও অফিসের কর্মকর্তাগণ নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন।খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাদুল্লাপুর পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে নিয়োগপ্রাপ্ত ইলেকট্রিশিয়ানদের সঙ্গে চিহ্নিত দালালদের রয়েছে গভীর সম্পর্ক। উপজেলার যেকোনো গ্রাম থেকে কোনো গ্রাহক মিটার কিংবা নতুন লাইনের আবেদন করা মাত্র অফিস থেকে ফাইল হাওয়া হয়ে যায় ইলেকট্রিশিয়ানদের ব্যাগে।ফাইলের সূত্র ধরে ইলেকট্রিশিয়ান ও দালাল যোগসাজশে সাধারণ গ্রাহকরা জিম্মি হয়ে পড়ে তাদের কাছে। দালালদের শর্তানুযায়ী মোটা অংকের টাকা দিলে ফাইলপত্র অফিসে পাওয়া যায়, নয়তো গায়েব। এতে মাসের পর মাস কিংবা বছরের পর বছর ঘুরতে হয় গ্রাহকদের। বিদ্যুৎ যেন তাদের কাছে সোনার হরিণ। এতে করে অফিসের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। অন্যদিকে গ্রাহকরা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।ভুক্তভোগি জহুরুল ইসলাম বলেন, অফিসের ইলেকট্রিশিয়ান পরিচয় দিয়ে সুমন মিয়া আমার কাছ থেকে ভুয়া রশিদ দিয়ে ১ লাখ ৪৪ হাজার ১১৫ টাকা নিয়েছে। প্রায় এক বছর ঘুরেও এখনও আমার সেচের লাইন নির্মাণ হয়নি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা দাবি করছি।এ বিষয়ে অভিযুক্ত সুমন মিয়া বলেন, জহুরুল ইসলামের কাছ থেকে ১ লাখ ৪৪ হাজার ১১৫ টাকা নিয়েছি। তা ফেরৎ দেওয়া হবে।সাদুল্লাপুর জোনাল অফিসের এলাকা পরিচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রতিবন্ধী জহুরুল ইসলামকে ভুয়া রশিদ দিয়ে সুমন মিয়া ১ লাখ ৪৪ হাজার ১১৫ টাকা গ্রহণের বিষয়টি শুনেছি।এ ব্যাপারে সাদুল্লাপুর জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার নুরুজ্জামান জানান, অফিসের বাইরে কে কার কাছে টাকা লেন-দেন করবে সেটি আমার দেখার বিষয় নয়। সেই সাথে অভিযুক্ত সুমন মিয়ার প্রতারণার ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হবে।
০৫ জানুয়ারী ২০২৪ ০৭:১৭ এএম
রংপুর ব্যুরো: রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে দালাল বিরোধী অভিযানে ৩ নারীসহ ছয়জনকে আটক করেছে পুলিশ। আটক ব্যক্তিদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালতে।২৪ আগস্ট বৃহস্পতিবার দুপুরে রমেক হাসপাতালে আসা রোগী ও সেবাগ্রহীতাদের কাঙ্খিত সেবা নিশ্চিতে যৌথভাবে এ অভিযান পরিচালনা করে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ ও জেলা প্রশাসন।আটকরা হলো, রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার রসুলপুর গ্রামের আজগর আলীর মেয়ে জেসমিন আক্তার (২৫), নগরীর খটখটিয়া দোলাপাড়ার মোহসীন আলীর মেয়ে জেসমিন বেগম (৩৫), ধাপ হাজীপাড়ার হাসেন আলীর ছেলে আতাউর রহমান আতা (২৮), নীলফামারীর দরবেশপাড়ার মতিয়ার রহমানের মেয়ে রুনা আক্তার (৩৫), মিঠাপুকুরের পশ্চিম বড়বালা এলাকার মোসলেম উদ্দিনের ছেলে হাফিজুর রহমান (৩৬) ও গঙ্গাচড়ার খানাটারির নুর ইসলামের ছেলে শাকির হোসেন।জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দেওয়ান আসিফ পেলে জানান, দুই নারীকে ১৫ দিন, আতাউর রহমান আতাকে ১ মাস ও শাকির হোসেনকে ৩ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও হাফিজুর রহমানকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা ও রুনা আক্তার নামে একজনকে ৫০ হাজার টাকার মুচলেকা বণ্ডের মাধ্যমে শাস্তি প্রদান করা হয়েছে।রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) উৎপল কুমার রায় বলেন, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে যেন কেউ দালালদের খপ্পরে পড়ে সর্বশান্ত না হয়, এজন্য এই অভিযান। হাসপাতালের পরিবেশ ঠিক রাখতে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে ৬ জনকে শাস্তির আওতায় আনা হয়। এই স্বাস্থ্যসেবা খাতকে জনসাধারণের জন্য নির্বিঘ্ন করতে এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
২৪ আগস্ট ২০২৩ ০১:২৭ পিএম