নবাবগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি: সারাদেশের মত ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও পেয়েছে আধুনিকতার ছোঁয়া। কিন্তু এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের ভোগান্তি কমেনি। সম্প্রতি সময়ে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীরা হয়রানির শিকার হচ্ছে ঔষধ কোম্পানি প্রতিনিধিদের কাছ থেকে। দীর্ঘদিন ধরে রোগী ঔষধ কোম্পানি প্রতিনিধিদের কাছ থেকে এভাবে হয়রানি হলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়নি বিশেষ কোন উদ্যোগ। তবে, হাসপাতালের দেয়ালে টাঙানো রয়েছে দুপুর ১২টার পর কোন ঔষধ কোম্পানি প্রতিনিধি হাসপাতালে প্রবেশ করতে পারবে না এবং বৃহস্পতিবার ছাড়া ডাক্তারদের কক্ষে গিয়ে ভিজিট করতে পারবে না। এসব লেখা থাকলেও নেই পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন।৬ মার্চ বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রবেশ করলে দেখা মিলে এমন চিত্র। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত হাসপাতালে অবস্থান নেয় এশিয়ান টেলিভিশনের প্রতিবেদক। দেখা যায় রোগীদের প্রেসকিপশন নিয়ে টানাটানি করছে। কে কার আগে ছবি তুলবে তা নিয়ে ব্যস্ত বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানি প্রতিনিধিরা। এতে রোগীরাও অনেকটা বিরক্তবোধ করেন।সকাল সাড়ে ১০টায় হাসপাতালের দোতলায় গেলে দেখা মিলে আরও ভিন্ন চিত্র। ২ নম্বর (আবাসিক মেডিকেল অফিসার) কক্ষের সামনে দাড়িয়ে আছে বেশ কিছু কোম্পানি প্রতিনিধি। ভর্তি রোগীদের ফাইল ডা. দেখার পর কক্ষের সহকারী ফাইল নিয়ে যাওয়ার সময় টানাটানি শুরু করে কোম্পানি প্রতিনিধিরা। এতে, পাশ থেকে ভর্তি রোগীদের কিছু স্বজনরা এমন কাণ্ড দেখে বিরক্তবোধ হয়ে সংবাদকর্মীদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন এবং এর সমাধানের দাবি করেন কর্তৃপক্ষের নিকট।এর আগে দেখা যায়, নিচতলায় ১৭, ১৯ ও ২০ নম্বর কক্ষের সামনে রোগীদের ভিড়। ভিড়ের মধ্যে রোগীদের ঠেলাঠেলি করে বারান্দার ভিতর দিকে প্রবেশ করতে দেখা যায় ঔষধ কোম্পানি প্রতিনিধের। বিশেষ করে শিশু ডা. এর ১৭ নম্বর কক্ষের সামনে ও ভিতরে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর পর্যন্ত দেখা যায় বেশ কয়েকজন দুধ কোম্পানি প্রতিনিধিদের। রোগীদের সিরিয়াল ম্যান্টেন করে ডাক্তারদের সাথে হাত করে সেখানে দায়িত্ব পালন করেন তারা। এতে, লাভবান হচ্ছে ওই সব দুধ কোম্পানিরা৷ তাদের প্রতিনিধি রুমের ভিতরে থাকায় ডাক্তার তাদের কোম্পানির দুধ লিখে প্রেসকিপশন করে থাকে। এভাবে বছরের পর বছর এই কক্ষে কোম্পানি প্রতিনিধি ভীতরে ও রুমের সামনে দাড়িয়ে থাকলেও কোন প্রতিকার হয়নি। অথচ স্বাস্থ্য কর্মকর্তার রুম থেকে ১৭ নম্বর কক্ষটি অনেকটাই কাছাকাছি।এদিকে জরুরি বিভাগে গেলেও দেখা মিলে একই চিত্র। সেখানে কোন জরুরি রোগী আসলে ঔষধ কোম্পানি প্রতিনিধিদের ভিড়ে রোগীরা আরও রোগী হয়ে যায়। জরুরি মুহূর্তে কোন ঔষধ লিখলে তা ছবি তুলতে ভিড় করে তারা।একাধিক রোগী অভিযোগ করে এশিয়ান টিভি অনলাইনকে বলেন, ‘ ডাক্তার ঔষধ লেখার পর রুম থেকে বের হওয়ার সঙে সঙে প্রেসকিপশন টানাটানি শুরু হয়ে যায়৷ ডাক্তার টেস্ট লিখে দিয়েছে তাদের টানাটানিতে সময় চলে যায়। টেস্ট করিয়ে সেদিন আর ডাক্তার দেখানোর সুযোগ হয় না।এ বিষয়ে ঢাকা জেলা সিভিল সার্জন আবুল মো. ফজল মুঠোফোনে এশিয়ান টিভি অনলাইনকে বলেন, ‘অফিস সময়ে দুপুর ১টার আগে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোন ঔষধ কোম্পানি প্রতিনিধি প্রবেশ করে প্রেসকিপশনের ছবি তুলতে পারবে না। প্রেসকিপশন নিয়ে টানাটানি করে রোগীদের হয়রানি করার কোন সুযোগ নেই। অফিস সময়ে যেন কোন কোম্পানি প্রতিনিধি হাসপাতালে প্রবেশ না করতে পারে সেজন্য দ্রুত পদক্ষেপ দেওয়া হবে৷
০৬ মার্চ ২০২৪ ০৮:০৩ এএম