মো. জহিরুল ইসলাম খান লিটন, স্টাফ রিপোর্টার (সাভার): সাভারে লাল টুকটুকে ভালবাসার স্নিগ্ধতা মেশানো স্বপ্নরাজ্য বিরুলিয়ার গোলাপগ্রাম। যেখানে শত শত হেক্টর জমিতে ফুটে আছে ভালবাসার লাল গোলাপ। এসব গোলাপ ভালবাসা দিবসের জন্য পরম আদরে প্রস্তুত করেছে গোলাপ গ্রামের ফুল চাষিরা।এক দিন পরই বিশ্ব ভালবাসা দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও বেশ ঘটা করেই পালিত হবে এ দিবসটি। আর লাল টুকটুকে গোলাপ ছাড়া ভালবাসা দিবস উদযাপন তো কল্পনাই করা যায় না। গোলাপ দিয়েই দিবসটিতে অনেকেই ভালবাসা নিবেদন করবেন প্রিয়জনকে। তাই ফুল উৎপাদনে চেষ্টার যেন কমতি ছিল না গোলাপ চাষিদের।১৩ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার সকালে বিরুলিয়ার গোলাপ গ্রামে গিয়ে চাষির সাথে কথা বলে জানা যায়, ভালবাসা দিবস ছাড়াও পাশাপাশি আরও বেশ কয়েকটি দিবস রয়েছে। যেমন পহেলা ফাল্গুন, ২১ ফেব্রুয়ারি ও পহেলা বৈশাখ। সারা বছরের মধ্যে এই সময়েই ফুলের চাহিদা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। চাষিরা তাই এই সময়টাকেই ফুল বিক্রির সেরা মৌসুম মনে করে থাকেন। তাই এই সময়কে প্রাধান্য দিয়ে বাগানে বাড়তি পরিচর্যা করেন গোলাপ চাষিরা। আর সে কারণেই দৃষ্টিজুড়ে শুধু লাল টুকটুকে গোলাপ আর গোলাপ।ব্যস্ততা বেড়েছে গোলাপ চাষিদের। ভালবাসা দিবস, পহেলা ফাল্গুন, ২১ ফেব্রুয়ারি ও পহেলা বৈশাখ সামনে রেখে যেন দম ফেলানোর ফুরসত নেই গোলাপ চাষিদের। বাগানের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। বাগান পরিচর্যায় অনেকেই নিয়োগ করছেন দিনমজুর। কেউ পরিষ্কার করছেন বাগানের আগাছা, কেউ বাগান থেকে অপসারণ করছেন রোগা ফুল গাছ, কেউবা গোলাপের বাগানে দিচ্ছেন সার বা কীটনাশক। বাগান থেকে ফুল সংগ্রহ করে বাজারজাত করতে ব্যস্তসময় পার করছেন। এছাড়া চুরি রোধে রাতের পর রাত জেগে বাগান পাহারা দিচ্ছেন চাষিরা।গোলাপ গ্রামের চাষিরা বলেন, আমরা ছত্রাক ও করোনার ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার জোরালো প্রচেষ্টা করছি। এইবারও অনেকের বাগানে ছত্রাকের সংক্রমণ হয়েছে। ফুল পঁচে ঝড়ে পরেছে। তবে বেশিরভাগ বাগানেই ফুলের ভাল ফলন হয়েছে। আমরা ভালবাসা দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসেকে টার্গেট করে ফুল বাগানের পরিচর্যা করেছি। আশা করি বাজার ভাল পাবো। তবে বাজারে প্লাস্টিকের ফুলের সাথে আমরা পারছি না। আমাদের পুরো বাজার নষ্ট করে দিচ্ছে প্রাস্টিকের ফুল। এসব ফুল আমদানি বন্ধ না করা হলে ধীরে ধীরে ফুল চাষিরা হুমকির মুখে পড়বে। এবছর ফলন ভালো হওয়া এবং গোলাপের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এবার ফুলের দাম একটু বেশি পাওয়া যাচ্ছে।গোলাপ চাষি ওহাব বলেন, আজ প্রতি পিছ গোলাপ বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। আগামিকাল বুধবার বেড়ে প্রতি পিছ ফুলের দাম হতে পারে ৫০ থেকে ১০০ টাকা। এবার আমরা গত কয়েক বছরের লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারবো বলে আশা করছি।দর্শনার্থীরা বলেন, আমরা দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ফুলের টানে গোলাপ রাজ্য বিরুলিয়াতে ঘুরতে এসেছি। আসলে এতো গোলাপ আর এতো ফুল আমরা কোথাও একসাথে দেখি নাই। সত্যিই যেন একটা ফুলের রাজ্য। শহরের কৃত্রিমতার বেড়াজাল থেকে মুক্ত হতে এখানে সবারই একবার হলেও আসা উচিত।একমি ঔষধ কোম্পানিতে কর্মরত শ্রাবণী আক্তার নামে ঘুরতে আসা এক দর্শনার্থী বলেন, এখানে অনেক দূর-দুরান্ত থেকে গোলাপের টানে আসে মানুষ। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষের পদচারণা এখানে। তাদের মধ্যে নারীই বেশি। কিন্তু নারীদের জন্য একটা ওয়াশরুমও নেই। যেহেতু এখানে আমাদের মত অনেক লোকই আসেন এবং যাওয়ার সময় গোলাপ ক্রয় করে নিয়ে যান। ক্রেতা ভেবেও নারীদের জন্য একটা ওয়াশরুম করা উচিত।তিনি আরও বলেন, এছাড়া সব ঠিক ছিল। নিরাপত্তার সেরকম ব্যবস্থা না থাকলেও এ অঞ্চলের মানুষ অনেক ভাল এবং সহায়ক। সর্বপরি এখানে এসে অনেক ভাল লেগেছে। ফুলের রিং মাথায় দিয়ে অনেক অনেক ছবি ও সেলফি তুলেছি।রাজধানীর উত্তরা থেকে বিক্রির উদ্দেশ্যে ফুল ক্রয় করতে এসেছেন ফুল ব্যবসায়ী জামাল। তিনি বলেন, আমাদের ফুলের দোকান রয়েছে। ভালবাসা দিবস উপলক্ষে দোকানের জন্য আজ ফুল কিনতে এসেছি। আমরা আগে শাহবাগ থেকে ফুল কিনতাম। কিন্তু এখন পাশেই বাগানের তাজা ফুল পাচ্ছি। তাই সরাসরি বাগান থেকে ফুল সংগ্রহ করছি।তিনি আরও বলেন, এখানে তুননামুলক কম দামে ফুল পাওয়া যায়। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী আমরা ফুল সংগ্রহ করছি। তবে গত বছরের তুলনায় এবার ফুলের দাম বেড়েছে প্রতি পিছে প্রায় ১০ টাকা। আগে ১৫ থেকে ১৮ টাকায় আমরা গোলাপ ফুল পেতাম। এবার তা বেড়ে দাড়িয়েছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়।গোলাপ গ্রামে যত ফুল, নাম গোলাপ গ্রাম হলেও সময় ও চাহিদার সাথে সাথে আরও বেশ কয়েকটি প্রজাতির ফুল এখানে উৎপাদন শুরু হয়েছে। প্রায় ৫০ হেক্টর জমিতে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হচ্ছে জারবেরা। এছাড়া সাদা গোলাপ, হলুদ গাঁদা, জিপসি, গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধা, ক্যালেন্ডিয়া, মাম্প, জিনিয়া, চন্দ্রমল্লিকাসহ আরও বেশ কিছু প্রজাতীর ফুল চাষ হচ্ছে। গোলাপের মধ্যে রয়েছে- চায়না গোলাপ, মিরিন্ডা গোলাপ, ইরানি গোলাপসহ বেশ কয়েক প্রজাতীর গোলাপ।এ বিষয়ে সাভার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা. শারমিন সুলতানা বলেন, বিরুলিয়ার গ্রামগুলোর প্রায় ৩০৫ হেক্টর জমিতে বছরজুড়ে গোলাপের বাণিজ্যিক চাষ হয়। তাই গোলাপগ্রাম নামেই খ্যাত এ ইউনিয়ন। দেশের বেশিরভাগ চাহিদা পূরণ হয় এখানকার ফুলে। আর ফেব্রুয়ারিতে নানা দিবস কেন্দ্র করে চাহিদার সঙ্গে ফুলের দাম বাড়ে কয়েকগুণ। তাই এ সময়টা বেশি মুনাফার আশায় থাকেন চাষিরা।তিনি আরও বলেন, এ বছর ৩৯ কোটি ৩৬ লাখ টাকার ফুল বিক্রির লক্ষ্যমাত্রার পাশাপাশি ভালো মুনাফার আশায় সাভারের ফুলচাষিদের। যা গত বছর ফুল বিক্রির লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিল প্রায় ২০ কোটি টাকা। এক বছর পরই লক্ষমাত্রা বেড়ে দাড়িয়েছে প্রায় দ্বিগুণ।উল্লেখ্য, ১৯৮৯ সালে বিরুলিয়ার সাদুল্লাপুর গ্রামে সর্বপ্রথম বাণিজ্যিকভাবে গোলাপ চাষ শুরু হয়। এখন ইউনিয়নের ১৫ থেকে ২০টি গ্রামে প্রায় দেড় হাজার চাষি বাণিজ্যিকভাবে গোলাপের চাষ করছেন।
১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ১২:১৭ পিএম
মো. জহিরুল ইসলাম খান লিটন, স্টাফ রিপোর্টার (সাভার): সাভারে লাল টুকটুকে ভালবাসার স্নিগ্ধতা মেশানো স্বপ্নরাজ্য বিরুলিয়ার গোলাপগ্রাম। যেখানে শত শত হেক্টর জমিতে ফুটে আছে ভালবাসার লাল গোলাপ। এসব গোলাপ ভালবাসা দিবসের জন্য পরম আদরে প্রস্তুত করেছে গোলাপ গ্রামের ফুল চাষিরা।এক দিন পরই বিশ্ব ভালবাসা দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও বেশ ঘটা করেই পালিত হবে এ দিবসটি। আর লাল টুকটুকে গোলাপ ছাড়া ভালবাসা দিবস উদযাপন তো কল্পনাই করা যায় না। গোলাপ দিয়েই দিবসটিতে অনেকেই ভালবাসা নিবেদন করবেন প্রিয়জনকে। তাই ফুল উৎপাদনে চেষ্টার যেন কমতি ছিল না গোলাপ চাষিদের।১৩ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার সকালে বিরুলিয়ার গোলাপ গ্রামে গিয়ে চাষির সাথে কথা বলে জানা যায়, ভালবাসা দিবস ছাড়াও পাশাপাশি আরও বেশ কয়েকটি দিবস রয়েছে। যেমন পহেলা ফাল্গুন, ২১ ফেব্রুয়ারি ও পহেলা বৈশাখ। সারা বছরের মধ্যে এই সময়েই ফুলের চাহিদা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। চাষিরা তাই এই সময়টাকেই ফুল বিক্রির সেরা মৌসুম মনে করে থাকেন। তাই এই সময়কে প্রাধান্য দিয়ে বাগানে বাড়তি পরিচর্যা করেন গোলাপ চাষিরা। আর সে কারণেই দৃষ্টিজুড়ে শুধু লাল টুকটুকে গোলাপ আর গোলাপ।ব্যস্ততা বেড়েছে গোলাপ চাষিদের। ভালবাসা দিবস, পহেলা ফাল্গুন, ২১ ফেব্রুয়ারি ও পহেলা বৈশাখ সামনে রেখে যেন দম ফেলানোর ফুরসত নেই গোলাপ চাষিদের। বাগানের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। বাগান পরিচর্যায় অনেকেই নিয়োগ করছেন দিনমজুর। কেউ পরিষ্কার করছেন বাগানের আগাছা, কেউ বাগান থেকে অপসারণ করছেন রোগা ফুল গাছ, কেউবা গোলাপের বাগানে দিচ্ছেন সার বা কীটনাশক। বাগান থেকে ফুল সংগ্রহ করে বাজারজাত করতে ব্যস্তসময় পার করছেন। এছাড়া চুরি রোধে রাতের পর রাত জেগে বাগান পাহারা দিচ্ছেন চাষিরা।গোলাপ গ্রামের চাষিরা বলেন, আমরা ছত্রাক ও করোনার ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার জোরালো প্রচেষ্টা করছি। এইবারও অনেকের বাগানে ছত্রাকের সংক্রমণ হয়েছে। ফুল পঁচে ঝড়ে পরেছে। তবে বেশিরভাগ বাগানেই ফুলের ভাল ফলন হয়েছে। আমরা ভালবাসা দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসেকে টার্গেট করে ফুল বাগানের পরিচর্যা করেছি। আশা করি বাজার ভাল পাবো। তবে বাজারে প্লাস্টিকের ফুলের সাথে আমরা পারছি না। আমাদের পুরো বাজার নষ্ট করে দিচ্ছে প্রাস্টিকের ফুল। এসব ফুল আমদানি বন্ধ না করা হলে ধীরে ধীরে ফুল চাষিরা হুমকির মুখে পড়বে। এবছর ফলন ভালো হওয়া এবং গোলাপের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এবার ফুলের দাম একটু বেশি পাওয়া যাচ্ছে।গোলাপ চাষি ওহাব বলেন, আজ প্রতি পিছ গোলাপ বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। আগামিকাল বুধবার বেড়ে প্রতি পিছ ফুলের দাম হতে পারে ৫০ থেকে ১০০ টাকা। এবার আমরা গত কয়েক বছরের লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারবো বলে আশা করছি।দর্শনার্থীরা বলেন, আমরা দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ফুলের টানে গোলাপ রাজ্য বিরুলিয়াতে ঘুরতে এসেছি। আসলে এতো গোলাপ আর এতো ফুল আমরা কোথাও একসাথে দেখি নাই। সত্যিই যেন একটা ফুলের রাজ্য। শহরের কৃত্রিমতার বেড়াজাল থেকে মুক্ত হতে এখানে সবারই একবার হলেও আসা উচিত।একমি ঔষধ কোম্পানিতে কর্মরত শ্রাবণী আক্তার নামে ঘুরতে আসা এক দর্শনার্থী বলেন, এখানে অনেক দূর-দুরান্ত থেকে গোলাপের টানে আসে মানুষ। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষের পদচারণা এখানে। তাদের মধ্যে নারীই বেশি। কিন্তু নারীদের জন্য একটা ওয়াশরুমও নেই। যেহেতু এখানে আমাদের মত অনেক লোকই আসেন এবং যাওয়ার সময় গোলাপ ক্রয় করে নিয়ে যান। ক্রেতা ভেবেও নারীদের জন্য একটা ওয়াশরুম করা উচিত।তিনি আরও বলেন, এছাড়া সব ঠিক ছিল। নিরাপত্তার সেরকম ব্যবস্থা না থাকলেও এ অঞ্চলের মানুষ অনেক ভাল এবং সহায়ক। সর্বপরি এখানে এসে অনেক ভাল লেগেছে। ফুলের রিং মাথায় দিয়ে অনেক অনেক ছবি ও সেলফি তুলেছি।রাজধানীর উত্তরা থেকে বিক্রির উদ্দেশ্যে ফুল ক্রয় করতে এসেছেন ফুল ব্যবসায়ী জামাল। তিনি বলেন, আমাদের ফুলের দোকান রয়েছে। ভালবাসা দিবস উপলক্ষে দোকানের জন্য আজ ফুল কিনতে এসেছি। আমরা আগে শাহবাগ থেকে ফুল কিনতাম। কিন্তু এখন পাশেই বাগানের তাজা ফুল পাচ্ছি। তাই সরাসরি বাগান থেকে ফুল সংগ্রহ করছি।তিনি আরও বলেন, এখানে তুননামুলক কম দামে ফুল পাওয়া যায়। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী আমরা ফুল সংগ্রহ করছি। তবে গত বছরের তুলনায় এবার ফুলের দাম বেড়েছে প্রতি পিছে প্রায় ১০ টাকা। আগে ১৫ থেকে ১৮ টাকায় আমরা গোলাপ ফুল পেতাম। এবার তা বেড়ে দাড়িয়েছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়।গোলাপ গ্রামে যত ফুল, নাম গোলাপ গ্রাম হলেও সময় ও চাহিদার সাথে সাথে আরও বেশ কয়েকটি প্রজাতির ফুল এখানে উৎপাদন শুরু হয়েছে। প্রায় ৫০ হেক্টর জমিতে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হচ্ছে জারবেরা। এছাড়া সাদা গোলাপ, হলুদ গাঁদা, জিপসি, গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধা, ক্যালেন্ডিয়া, মাম্প, জিনিয়া, চন্দ্রমল্লিকাসহ আরও বেশ কিছু প্রজাতীর ফুল চাষ হচ্ছে। গোলাপের মধ্যে রয়েছে- চায়না গোলাপ, মিরিন্ডা গোলাপ, ইরানি গোলাপসহ বেশ কয়েক প্রজাতীর গোলাপ।এ বিষয়ে সাভার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা. শারমিন সুলতানা বলেন, বিরুলিয়ার গ্রামগুলোর প্রায় ৩০৫ হেক্টর জমিতে বছরজুড়ে গোলাপের বাণিজ্যিক চাষ হয়। তাই গোলাপগ্রাম নামেই খ্যাত এ ইউনিয়ন। দেশের বেশিরভাগ চাহিদা পূরণ হয় এখানকার ফুলে। আর ফেব্রুয়ারিতে নানা দিবস কেন্দ্র করে চাহিদার সঙ্গে ফুলের দাম বাড়ে কয়েকগুণ। তাই এ সময়টা বেশি মুনাফার আশায় থাকেন চাষিরা।তিনি আরও বলেন, এ বছর ৩৯ কোটি ৩৬ লাখ টাকার ফুল বিক্রির লক্ষ্যমাত্রার পাশাপাশি ভালো মুনাফার আশায় সাভারের ফুলচাষিদের। যা গত বছর ফুল বিক্রির লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিল প্রায় ২০ কোটি টাকা। এক বছর পরই লক্ষমাত্রা বেড়ে দাড়িয়েছে প্রায় দ্বিগুণ।উল্লেখ্য, ১৯৮৯ সালে বিরুলিয়ার সাদুল্লাপুর গ্রামে সর্বপ্রথম বাণিজ্যিকভাবে গোলাপ চাষ শুরু হয়। এখন ইউনিয়নের ১৫ থেকে ২০টি গ্রামে প্রায় দেড় হাজার চাষি বাণিজ্যিকভাবে গোলাপের চাষ করছেন।
১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ১২:১৭ পিএম
যশোর (দক্ষিণ) প্রতিনিধি: যশোরের অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি ফুলের রাজধানী বা ফুলের রাজ্য ঝিকরগাছা উপজেলায় ৪ দিনব্যাপী ফুল উৎসব উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদার।প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, এমন ফুলের মেলা দেশের আর কোথাও নেই। এই মেলাকে কেন্দ্র করে ফুল চাষ ও ফুল উৎসবের ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য আপনাদের এগিয়ে আসতে হবে। প্রশ্নবিদ্ধ হবে এমন কোনো কাজ করা যাবে না। বাইরে থেকে যে অতিথি বা পর্যটকবৃন্দ আসবে তাদের সাথে সদয় ও ভালো ব্যবহার করে তাদের উৎসাহিত করতে হবে এই এলাকায় আবারও আসার জন্য। মনে রাখতে হবে, কোনো ভালো জিনিস তৈরি করতে অনেক সময় লাগে, কিন্তু সেটা নষ্ট করতে বেশি সময় লাগে না।বৈচিত্র্যময় এ ফুলের রাজ্যকে সকলের সামনে তুলে ধরার লক্ষ্যে যশোরের জেলা প্রশাসকের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ও ঝিকরগাছা উপজেলা প্রশাসন’র আয়োজনে ৩১ জানুয়ারি বুধবার বিকাল সাড়ে ৪টার সময় পানিসারা ফুল মোড়ে ৪ দিনব্যাপী ফুল উৎসবের সভাপতিত্বে করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিতান কুমার মন্ডল।তিনি তার বক্তব্যে বলেন, আমাদের যশোর জেলার ট্যাগে রয়েছে নানান রঙের ফুলের মেলা, খেজুর গুড়ের যশোর জেলা। আমাদের এই ঝিকরগাছার অঞ্চলকে ঘিরেই কথাটা এসেছে। আর এই কথাকে ধরেই আমাদের আজকের মেলা। এখানে বিভিন্ন জাতের ফুল চাষ হচ্ছে। কিন্তু ফুলের বিপণন হয়ে আসছে। কিন্তু এখানে একটা সমন্বয়ের উদ্যোগ প্রয়োজন। আমাদের কাছেই রয়েছে বেনাপোল স্থল বন্দর ও রেল লাইন রয়েছে। আমরা একটা উদ্যোগ নিতে পারি, ট্রেনে একটা বগি ফুলের জন্য বরাদ্দের। যেটার মাধ্যমে এই অঞ্চলের ফুলে কম সময়ের মধ্যে ঢাকাতে পৌঁছাতে পারে এবং সেখান থেকে দেশের বাইরে রফতানি করা সহজ হয়ে যাবে। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, যশোর জেলার স্থানীয় সরকারের উপ পরিচালক মো. রফিকুল হাসান, নাভারণ সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার নিশাত আল নাহিয়ান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) কেএম মামুনুর রশিদ, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. রশিদুল আলম, উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মাসুদ হোসেন পলাশ, থানার অফিসার ইনচার্জ মো. কামাল হোসেন ভূঁইয়া, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. সেলিম রেজা, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লুবনা তাক্ষী, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কামরুজ্জামান মো. জাহাঙ্গীর হুসাইন মিঞা, উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মেজবাহ উদ্দীন প্রমুখ।
০১ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ০২:১৬ এএম
সরোয়ার আমিন বাবু, চট্টগ্রাম: যান্ত্রিক সভ্যতার মাঝেও হারিয়ে যায়নি মানুষের আবেগ অনুভূতি। আধুনিক যান্ত্রিক জীবনযাপনেও মানুষ এখনো ভালোবাসতে চায় প্রকৃতির অপরূপ সৃষ্টি ও অনাবিল সৌন্দর্যকে। ফুলকে ভালবেসে করতে চায় সুন্দরের আরাধনা। ফুলের সৌরভে তাই তো তারা ছুটে এসেছে ফুলের রাজ্যে। মেতে উঠেছে ফুলের মেলা ফ্লাওয়ার ফেস্টিভ্যালে। হাজারও মানুষের আগমনে ও ফুলের সৌরভে পৃথিবী যেন হয়ে উঠেছে কাব্যময়। ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, ম্যাগনলিয়া, শিউলি, হাসনাহেনা, অপরাজিতা, চেরী, জাকারান্ডা, উইলো, উইস্টেরিয়া সহ হাজারো ফুলের সৌরভে সুরভিত হয়ে উঠেছে চট্টগ্রামে ডিসি পার্কে শুরু হওয়া এই ফ্লাওয়ার ফেস্টিভ্যাল। নানা প্রজাতির দেশী-বিদেশী ১২৭ প্রজাতির কয়েক লক্ষ ফুলের সমারোহে ইতোমধ্যে সেজেছে ডিসি পার্ক। আরও থাকছে নেদারল্যান্ডস হতে আনা বাল্ব হতে জেলা প্রশাসনের নিজেদের ব্যবস্থাপনায় ফুটানো সাড়ে পাঁচ হাজার টিউলিপ। এ সকল ফুলের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে প্রত্যেক প্রজাতির ফুলের পাশেই লেখা থাকবে তাদের নাম ও বৃত্তান্ত। ২৬ জানুয়ারি শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় ডিসি পার্কের এই ফুলের রাজ্যে ঢল নেমেছে হাজারও দর্শনার্থীর। ফুলের সৌন্দর্য ও সৌরভ যেন টেনে এনেছে শিশু-কিশোর এমনকি বড়দেরও। চট্টগ্রাম জেলা জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ২৫ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় ডিসি পার্কে এই মাসব্যাপী ফুল উৎসব উদ্বোধন করা হয়। ফুল উৎসব চলবে আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। 'ফুলের মতো আপনি ফুটাও গান' প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বেলুন উড়িয়ে ও ফিতা কেটে ফুল উৎসবের শুভ উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মন্ত্রী পরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। চট্টগ্রাম জেলা জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ফুল উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো: তোফায়েল ইসলাম। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, ১৯৪ একর জমি মাদকের আখড়া থেকে ফুলের আখড়াতে রূপান্তরকরণে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ভূমিকা প্রশংসনীয়। অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেও ফ্লাওয়ার ফেস্টিবলের জমকালো আয়োজন করা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী ইশতেহারে পর্যটনকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এই ফুল উৎসবের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর চিন্তা চেতনাকে সামনে নিয়ে যাওয়ার অবারিত সুযোগ রয়েছে। সামনের প্রজন্মের জন্য আমাদেরকেই পরিবেশ ও সুযোগ তৈরি করতে হবে। পাশাপাশি প্রশাসনের একজন প্রতিনিধি হিসেবে অন্যান্য জেলা প্রশাসকগণকেও এই ধরনের আয়োজন করার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানান তিনি। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, অবৈধ দখল, মাদক অভয়ারণ্যকে ফুলের বাগিচা বানানো হয়েছে। পর্যটনকে কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলে অর্থনৈতিক বিকাশে ভূমিকা রাখার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন তিনি। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বলেন, এই উদ্যোগ যেন ক্ষণিকের উদ্যোগ না হয় এবং এর ধারাবাহিকতা যাতে বজায় থাকে সেই আহবানে সংশ্লিষ্ট সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। বাইরে থেকে যারা ডিসি পার্কে আসবে, তাদের জন্য হাউজিং ব্যবস্থা করার কথাও উল্লেখ করেন তিনি। অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি চট্টগ্রাম বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, পরবর্তী প্রজন্মকে সুন্দর ও জঙ্গিবাদকে সমূলে নির্মূল করতে এই ধরনের কালচারাল আয়োজন বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। ভূমিদস্যুদের হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, সরকারি জায়গা কেউ দখলে রাখতে পারবে না। জায়গা ক্রমান্বয়ে উদ্ধার করে জনগণের কল্যাণে ব্যবহার করা হবে। অনুষ্ঠানের সভাপতি জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ দিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী ডিসি পার্ক, নৌকা জাদুঘর, পর্যটন বাস ও ফুল ডে ট্যুর, স্কুল বাস, বার্ড পার্ক; এই ৬টি প্রকল্পের শুভ উদ্বোধন করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। এছাড়াও প্রতি উপজেলায় পার্ক, খেলার মাঠ করার মহাপরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। সরকারি জমি উদ্ধার করে এই সব প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। পাশাপাশি তিনি সকল এমপি ও সচিবকে ধন্যবাদ জানান যারা এসে উক্ত অনুষ্ঠান সাফল্যমন্ডিত ও বৃক্ষরোপণ করেছেন। মাসব্যাপী এ আয়োজনকে আরও আকর্ষণীয় করতে ফুলের প্রদর্শনীর পাশাপাশি কয়েকটি সেল্ফি জোন করা হয়েছে। পর্যটকদের জন্য থাকছে সাম্পান বাইচের আয়োজন। আবহমান বাংলার ঐতিহ্য রক্ষার্থে থাকবে বিভিন্ন সময়ের ১৫টি নৌকা প্রদর্শনী। চট্টগ্রাম জেলার চিত্রশিল্পীদের প্রায় ২০০টি চিত্রকর্ম প্রদর্শনীর জন্য থাকবে। আগত দর্শনার্থীদের নিজেদের ছবির ক্যারিকেচার আঁকার ব্যবস্থা থাকবে। বিনোদন প্রেমীদের জন্য থাকবে সানসেট ভিউ পয়েন্ট, পিজিওন কর্ণার, স্যুভেনির শপ, দিঘীতে কায়াকিং এর ব্যবস্থা, লোনা পানির ঝর্ণা। আগত দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে ট্যুরিস্ট শেড, নামাজের ব্যবস্থা, বিভিন্ন ধরনের খাবারের স্টল সহ পর্যাপ্ত শৌচাগারের ব্যাবস্থা থাকবে। শিশু- কিশোরদের বিনোদনের জন্য নাগরদোলা, দোলনা, সীসঅ, স্প্রিং টয়, মেরিগো রাউন্ড, দোলনা, প্লে পেন, ফুট ট্রাম্পোলাইন সহ থাকবে নানা আয়োজন। পুরো ফুল উৎসবকে জাঁকজমকপূর্ণ করতে আয়োজন করা হবে বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতির অংশগ্রহণে মাল্টি কালচারাল বিশেষ আয়োজন, ঘুড়ি উৎসব, ফায়ার ওয়ার্কস, ভায়োলিন শো, পুতুল নাচ, জাদু প্রদর্শনী। এছাড়া প্রতিদিন বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার শিল্পীদের পরিবেশনায় থাকবে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা। প্রসংগত গত বছরের ৪ জানুয়ারি চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ডের সলিমপুরে মাদকের আস্তানা গুঁড়িয়ে দিয়ে জেলা প্রশাসন ১৯৪.১৩ একর খাস জায়গা অবৈধ দখলদারদেরকে উচ্ছেদ করে উদ্ধার করে। উদ্ধার করা জায়গায় মাত্র একমাসের মধ্যে ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১০ দিনব্যাপী চট্টগ্রামে প্রথম ফুল উৎসবের আয়োজন করা হয়। সে সময় ১২২ প্রজাতির ফুলের চমকপ্রদ প্রদর্শনীর মাধ্যমে উদযাপন করা হয়েছিলো ফুল উৎসব ২০২৩। দশদিন ব্যাপী এ ফুল উৎসবে প্রতিদিন গড়ে চল্লিশ হাজার পর্যটক ভ্রমন করেন ডিসি পার্ক। মানুষের এমন স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ জেলা প্রশাসনকে অনুপ্রেরণা যোগায়। এমন অনুপ্রেরণা থেকেই প্রতিবছর এ আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
২৬ জানুয়ারী ২০২৪ ০১:৫৫ পিএম
সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট ডিসি পার্কে আগামী ২৫ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে ফুল উৎসব। আর এই ফুল উৎসব চলবে ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।এ উৎসবের উদ্বোধন করবেন সরকারের মন্ত্রী পরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।‘ফুলের মতো আপনি ফুটাও গান’ এ প্রতিপাদ্যে এ ফুল উৎসবে ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, ম্যাগনলিয়া, শিউলি, হাসনাহেনা, অপরাজিতা, চেরী, জাকারান্ডা, উইলো, উইস্টেরিয়াসহ দেশি-বিদেশি ১২৭ প্রজাতির কয়েক লাখ ফুলের সমারোহে সেজেছে সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট ডিসি পার্ক।জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ফুল উৎসবে দর্শনার্থীদের জন্য বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে থাকবে নেদারল্যান্ডস থেকে বীজ এনে জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় ফুটানো সাড়ে পাঁচ হাজার টিউলিপ। ফুলের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে প্রত্যেক ফুলের পাশে লেখা থাকবে তাদের নাম ও বৃত্তান্ত। মাসব্যাপী এ আয়োজনকে আরও আকর্ষণীয় করতে ফুলের প্রদর্শনীর পাশাপাশি কয়েকটি সেলফি জোন ও পর্যটকদের জন্য থাকবে সাম্পান বাইচের আয়োজন।আবহমান বাংলার ঐতিহ্য রক্ষার্থে থাকবে বিভিন্ন সময়ের পনেরোটি নৌকা প্রদর্শন। চট্টগ্রাম জেলার চিত্রশিল্পীদের প্রায় ২০০টি চিত্রকর্ম প্রদর্শনীর জন্য থাকবে। আগত দর্শনার্থীদের নিজেদের ছবির ক্যারিকেচার আঁকার ব্যবস্থা থাকবে। বিনোদন প্রেমিদের জন্য থাকবে সানসেট ভিউ পয়েন্ট, পিজিওন কর্ণার, স্যুভেনির শপ, দিঘীতে কায়াকিংয়ের ব্যবস্থা, লোনা পানির ঝর্ণা। থাকবে ট্যুরিস্ট শেড, নামাজের ব্যবস্থা, বিভিন্ন ধরনের খাবারের স্টলসহ পর্যাপ্ত শৌচাগারের ব্যবস্থা।শিশু-কিশোরদের বিনোদনের জন্য নাগরদোলা, দোলনা, স্প্রিং টয়, মেরিগো রাউন্ড, দোলনা, প্লে পেন, ফুট ট্রাম্পোলাইনসহ থাকবে নানা আয়োজন। পুরো ফুল উৎসবকে জাঁকজমকপূর্ণ করতে আয়োজন করা হবে মাল্টি কালচারাল বিশেষ আয়োজন ঘুড়ি উৎসব, ফায়ার ওয়ার্কস, ভায়োলিন শো, পুতুল নাচ, জাদু প্রদর্শনী। এছাড়া প্রতিদিন বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার শিল্পীদের পরিবেশনায় থাকবে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা।সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার কে এম রফিকুল ইসলাম বলেন, ডিসি মহোদয় এবারের ফুল উৎসবে ভিন্ন মাত্রা আনতে নানান পদক্ষেপ নিয়েছেন। ইতোমধ্যে কোটি কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ হয়েছে। যারা গতবার এসেছিলেন তারা এবার আসলে পার্থক্যটা স্পষ্টতই বুঝতে পারবেন।সীতাকুণ্ড উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলাউদ্দিন বলেন, সব মিলিয়ে এবারের মাসব্যাপী উৎসবটি অনেক বেশী উপভোগ্য হবে। তিনি বলেন, ডিসি পার্কে দ্বিতীয়বারের মতো ফুল উৎসবের আয়োজন করেছে। আমরা পার্কটিকে সুস্বজ্জিত করতে কাজ করছি। যারা গতবার এসেছিলেন তারা এবার এলে পার্থক্য স্পষ্টই বুঝতে পারবেন। সব মিলিয়ে এবারের মাসব্যাপী উৎসবটি অনেক বেশী উপভোগ্য হবে।চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাকিব হাসান বলেন, এই ফুলের রাজ্যে দ্বিতীয়বারের মতো হতে যাচ্ছে ফুল উৎসব। মেলায় সব শ্রেণি-পেশার মানুষের পছন্দ হয় এমন সব অনুষঙ্গ যোগ করা হচ্ছে। আশা করি, সবার ভালো লাগবে এই উৎসব।চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, মাসব্যাপী ফুল উৎসব ঘিরে নানা আয়োজন চলছে। ডিসি পার্কটিকে আকর্ষণীয় করে গড়ে তুলতে নানা কাজ করা হয়েছে। চিরায়ত বাংলার ঐতিহ্যকে উপজীব্য করেই সাজানো হয়েছে অনুষঙ্গগুলো। তবে গতবারের চেয়ে আরও অনেক বেশি আড়ম্বরপূর্ণ হবে এবারের উৎসব।উল্লেখ্য যে, গত বছরের ৪ জানুয়ারি সীতাকুণ্ডের সলিমপুরে মাদকের আস্তানা গুঁড়িয়ে দিয়ে জেলা প্রশাসন কর্তৃক ১৯৪ একর খাস জায়গা অবৈধ দখলদারদেরকে উচ্ছেদ করে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার করা জায়গায় মাত্র একমাসের মধ্যে ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দশ দিনব্যাপী চট্টগ্রামে প্রথম ফুল উৎসবের আয়োজন করা হয়। সে সময় ১২২ প্রজাতির ফুলের চমকপ্রদ প্রদর্শনীর মাধ্যমে উদযাপন করা হয়েছিল ফুল উৎসব-২০২৩। দশ দিনব্যাপী এ ফুল উৎসবে প্রতিদিন গড়ে চল্লিশ হাজার পর্যটক ভ্রমণ করেন ডিসি পার্ক। মানুষের এমন স্বতঃস্ফূর্ত অংশ গ্রহণ জেলা প্রশাসনকে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। এমন অনুপ্রেরণা থেকেই প্রতিবছর এ আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
২৩ জানুয়ারী ২০২৪ ০৬:৩৫ এএম