বাগেরহাট প্রতিনিধি: পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনক) উদ্যোগে বাগেরহাটের বেদে পল্লীতে ছিন্নমূল মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র (কম্বল) বিতরণ করা হয়েছে।৮ জানুয়ারি সোমবার রাতে শহরতলীর মুনিগঞ্জ ব্রিজ এলাকায় অস্থায়ী পল্লীতে শতাধিক নারী-পুরুষ ও শিশুদের মাঝে এ শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়।শীতবস্ত্র বিতরণকালে জেলা পুনকের সভানেত্রী ডা. জান্নাতুল ফেরদৌস চৌধুরী জিনিয়াসহ অন্যান্য নেত্রীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।এ সময় কম্বল পেয়ে বেদেপল্লীর মানুষেরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
০৯ জানুয়ারী ২০২৪ ০৭:৫৮ এএম
মতলব উত্তর (চাঁদপুর) প্রতিনিধি: আমাদের খবর নিয়া কী করবেন? কেউ কি আমাদের খবর রাখে? বলছিলেন বেদে বধূ কুহিনুর (২২)।নদীর তীরে নৌকার মধ্যেই রান্না করছিলেন তিনি। চোখে-মুখে কিছুটা চিন্তা আর আতঙ্কের ছাপ। মুখে হাসি নেই, জীবন-জীবিকার দুশ্চিন্তায়। কুহিনুর বলেন, নদী আমাগো জীবন, এই নদীই আমাগোর মরণ। নদীতে মাছ ধইরা যেমন খাবার জুটে, হেই নদীতেই আবার সন্তানদের মৃত্যু হয়। বহু চেষ্টা করি, তাদের বাঁচিয়ে রাখতে। কিন্তু কখনও কখনও পানিতে ডুবে মারা যায়। অনেক সময় মরদেহ খুঁজেও পাওয়া যায় না।বেদে নারী কুহিনুর জীবন সংগ্রাম আর কষ্টের গল্প তুলে ধরে বলেন, এক বছর আগে আমার একমাত্র সন্তান পানিতে পড়ে মারা যায়। সেই থেকে কষ্ট নিয়ে বেঁচে আছি। কিন্তু তবুও পানিতেই বাস করতে হবে। এতো সতর্ক থাকি, তবুও বাঁচাতে পারিনি তাকে।জীবন-জীবিকার তাগিদে পানির ওপরে নৌকায় বসবাসকারী বেদে সম্প্রদায়ের দৈনন্দিন জীবন-জীবিকা ঠিক এমনই। নৌকার মাঝে সুখ-হাসি-আনন্দ খুঁজে পেলেও হারানোর বিয়োগ ব্যথায় কাঁদতেও হয় তাদের। অবহেলিত-বঞ্চিত এসব মানুষ নদীতে সারাদিন জাল বুনে মাছ শিকার করেন। ওই মাছ স্থানীয় মাছ ঘাটে বিক্রি করে খাবারের ব্যবস্থা করেন। নৌকাতেই ঘর-সংসার তাদের, একমাত্র সহায়-সম্বলও। স্বাভাবিক জীবন থেকে আলাদা জীবনযুদ্ধে তাদের সঙ্গী কেবল নৌকা আর জাল। নৌকায় বসবাস করতে গিয়ে মাঝে মধ্যেই তাদের হারাতে হয় শিশু সন্তানদের।বেদে সর্দার জসিম বলেন, কয়েক বছর আগে নাছির ও মমিনের দু’টি মেয়ে নৌকা থেকে পড়ে গিয়ে মারা যায়। এমন অনেক ঘটনা রয়েছে। গত কয়েক বছরেই তাদের বহরের ৫টি শিশু মারা গেছে। কঠিন জীবনযুদ্ধের মাঝেও সন্তানদের কথা মনে করে আজো কাঁদেন তারা।চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলা সমাজসেবা দপ্তর সূত্রে জানা যায়, মতলব উত্তর উপজেলায় ১৬ জন বেদেকে ভাতার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া শিক্ষাভাতা হিসেবে তাদের ৪ শিক্ষার্থী ভাতা পাচ্ছে। মতলবের মেঘনা নদীতে বসবাসকরা এসব জেলে জানান, তাদের পূর্ব পুরুষরাও যুগ যুগ ধরে নৌকাতেই বসবাস করেছেন। তাদের নৌকাতেই জন্ম, নৌকাতেই মৃত্যু। জলে ভাসা তাদের জীবন।উপজেলার মেঘনা-ধনাগোদা নদীতে এমন পরিবার রয়েছে ২০০ টিরও বেশি। মাছ ধরা আর বাজারে নিয়ে বিক্রি করাই তাদের কাজ। নৌকাতেই কাটে তাদের দিন-রাত। জন্মের পর থেকেই তারা এখানে আছেন। তাদের আকাঙ্ক্ষা সমাজের আর দশজন মানুষের মতো ঘর-বাড়িতে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করার। তারাও স্বপ্ন দেখেন, তাদের সন্তান লেখাপড়া শিখে সমাজের বড় হবে। ভাগ্যের চাকা ঘুরবে তাদের। কিন্তু কখনোই তাদের এ স্বপ্ন পূরণ হয়নি। সেই স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়। তাদের ভাগ্যের পরিবর্তনের জন্য আজও এগিয়ে আসেনি সরকার বা কোনো বেসরকারি সংস্থা। রোদ-ঝড়-বৃষ্টি আর মহাদুর্যোগেও জীবন কাটে নৌকাতেই।মতলব উত্তর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আনিসুর রহমান তপু বলেন, বেদে সম্প্রদায়ের জীবনমান উন্নয়নে বর্তমান সরকার বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। তাদের ভাতা ও শিক্ষা ভাতার অন্তর্ভুক্ত করা এ সরকারের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। বেদে সম্প্রদায়ের যুবকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও রয়েছে সাবলম্বী হওয়ার জন্য।
২৫ অক্টোবর ২০২৩ ০৬:৪৮ এএম
মতলব উত্তর (চাঁদপুর) প্রতিনিধি: আমাদের খবর নিয়া কী করবেন? কেউ কি আমাদের খবর রাখে? বলছিলেন বেদে বধূ কুহিনুর (২২)।নদীর তীরে নৌকার মধ্যেই রান্না করছিলেন তিনি। চোখে-মুখে কিছুটা চিন্তা আর আতঙ্কের ছাপ। মুখে হাসি নেই, জীবন-জীবিকার দুশ্চিন্তায়। কুহিনুর বলেন, নদী আমাগো জীবন, এই নদীই আমাগোর মরণ। নদীতে মাছ ধইরা যেমন খাবার জুটে, হেই নদীতেই আবার সন্তানদের মৃত্যু হয়। বহু চেষ্টা করি, তাদের বাঁচিয়ে রাখতে। কিন্তু কখনও কখনও পানিতে ডুবে মারা যায়। অনেক সময় মরদেহ খুঁজেও পাওয়া যায় না।বেদে নারী কুহিনুর জীবন সংগ্রাম আর কষ্টের গল্প তুলে ধরে বলেন, এক বছর আগে আমার একমাত্র সন্তান পানিতে পড়ে মারা যায়। সেই থেকে কষ্ট নিয়ে বেঁচে আছি। কিন্তু তবুও পানিতেই বাস করতে হবে। এতো সতর্ক থাকি, তবুও বাঁচাতে পারিনি তাকে।জীবন-জীবিকার তাগিদে পানির ওপরে নৌকায় বসবাসকারী বেদে সম্প্রদায়ের দৈনন্দিন জীবন-জীবিকা ঠিক এমনই। নৌকার মাঝে সুখ-হাসি-আনন্দ খুঁজে পেলেও হারানোর বিয়োগ ব্যথায় কাঁদতেও হয় তাদের। অবহেলিত-বঞ্চিত এসব মানুষ নদীতে সারাদিন জাল বুনে মাছ শিকার করেন। ওই মাছ স্থানীয় মাছ ঘাটে বিক্রি করে খাবারের ব্যবস্থা করেন। নৌকাতেই ঘর-সংসার তাদের, একমাত্র সহায়-সম্বলও। স্বাভাবিক জীবন থেকে আলাদা জীবনযুদ্ধে তাদের সঙ্গী কেবল নৌকা আর জাল। নৌকায় বসবাস করতে গিয়ে মাঝে মধ্যেই তাদের হারাতে হয় শিশু সন্তানদের।বেদে সর্দার জসিম বলেন, কয়েক বছর আগে নাছির ও মমিনের দু’টি মেয়ে নৌকা থেকে পড়ে গিয়ে মারা যায়। এমন অনেক ঘটনা রয়েছে। গত কয়েক বছরেই তাদের বহরের ৫টি শিশু মারা গেছে। কঠিন জীবনযুদ্ধের মাঝেও সন্তানদের কথা মনে করে আজো কাঁদেন তারা।চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলা সমাজসেবা দপ্তর সূত্রে জানা যায়, মতলব উত্তর উপজেলায় ১৬ জন বেদেকে ভাতার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া শিক্ষাভাতা হিসেবে তাদের ৪ শিক্ষার্থী ভাতা পাচ্ছে। মতলবের মেঘনা নদীতে বসবাসকরা এসব জেলে জানান, তাদের পূর্ব পুরুষরাও যুগ যুগ ধরে নৌকাতেই বসবাস করেছেন। তাদের নৌকাতেই জন্ম, নৌকাতেই মৃত্যু। জলে ভাসা তাদের জীবন।উপজেলার মেঘনা-ধনাগোদা নদীতে এমন পরিবার রয়েছে ২০০ টিরও বেশি। মাছ ধরা আর বাজারে নিয়ে বিক্রি করাই তাদের কাজ। নৌকাতেই কাটে তাদের দিন-রাত। জন্মের পর থেকেই তারা এখানে আছেন। তাদের আকাঙ্ক্ষা সমাজের আর দশজন মানুষের মতো ঘর-বাড়িতে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করার। তারাও স্বপ্ন দেখেন, তাদের সন্তান লেখাপড়া শিখে সমাজের বড় হবে। ভাগ্যের চাকা ঘুরবে তাদের। কিন্তু কখনোই তাদের এ স্বপ্ন পূরণ হয়নি। সেই স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়। তাদের ভাগ্যের পরিবর্তনের জন্য আজও এগিয়ে আসেনি সরকার বা কোনো বেসরকারি সংস্থা। রোদ-ঝড়-বৃষ্টি আর মহাদুর্যোগেও জীবন কাটে নৌকাতেই।মতলব উত্তর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আনিসুর রহমান তপু বলেন, বেদে সম্প্রদায়ের জীবনমান উন্নয়নে বর্তমান সরকার বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। তাদের ভাতা ও শিক্ষা ভাতার অন্তর্ভুক্ত করা এ সরকারের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। বেদে সম্প্রদায়ের যুবকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও রয়েছে সাবলম্বী হওয়ার জন্য।
২৫ অক্টোবর ২০২৩ ০৬:৪৮ এএম