‘আমারে আমার মায়ের লগে একটু কথা কইবারও দিছে না’
স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর: ‘আমার মারে মাইরা ফেলছে। আমারে আমার মায়ের লগে একটু কথা কইবারও দিছে না। আমার মা আমার লগে একটু কথা কইতে চাইছিলো। তারা আমার মাকে, আমার লগে একটুও কথা কইতে দিছে না। ওরা আমার মারে মাইরা ফেলছে।’৩১ মার্চ রোববার রাত সাড়ে ৯টায় দিকে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা চৌরাস্তা এলাকার লাইফ কেয়ার হাসপাতালে শিশুটির মা ইয়াসমিন আক্তার (২৮) সিজার করতে এসে মারা যাওয়ার পর এভাবেই বিলাপ করছিল শিশুটি।নিহত ইয়াসমিন আক্তার, শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের ইন্দ্রপুর গ্রামের আসাদুল্লাহর স্ত্রী।নিহত ইয়াসমিনের স্বামী আসাদুল্লাহ বলেন, ‘আমি আমার স্ত্রীকে লাইফ কেয়ার নামক হাসপাতালে নিয়ে আসি সিজার করানোর জন্য। যখন হাসপাতালে আসছে, তখন সুস্থ ছিলো। অপারেশন রুমে নিয়ে যাওয়ার পর ঘণ্টার পর ঘণ্টা আমাদের অপেক্ষা করিয়েছে। তারা কিছু জানায়নি, শুধু বলছে অতিরিক্ত রক্ত বের হচ্ছে। আমরা বাইরে থেকে দেখতেছি, তারা দুই মিনিট পর পর মেডিসিন আনছে। অতিরিক্ত রক্ত গেছে, রক্ত যাওয়ার কারণে মারা গেছে। কী ঘটনা তার প্রকৃত কারণ জানতে হবে। তারা হাসপাতাল ছেড়ে পালাইয়া গেছে। হেরা আমার স্ত্রীকে মাইরা ফেলছে।’প্রসূতির মা রাজিয়া আক্তার অভিযোগ করে বলেন, দুপুর ১২টার দিকে মেয়েকে হাসপাতালে ভর্তি করি। তখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁদের জানায়, মাগরিবের নামাজের পরপরই সিজার করা হবে। এই বলে হাসপাতাল থেকে স্বজনদের বিদায় দেয়। শুধু তিনি হাসপাতালের বাইরে অপেক্ষায় ছিলেন। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তাকে জানানো হয়, মেয়ের ছেলে সন্তান হয়েছে। দৌড়ে মেয়ের কাছে গিয়ে দেখেন প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছে। তখন স্বজনদের খবর দিলে তারা হাসপাতালে ছুটে আসেন। তারা চিকিৎসককে অনুরোধ করলেও কোনো গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। রাত সাড়ে ৯টার দিকে মেয়ের অবস্থার অবনতি হলে তারা রেফার্ডের নাম করে অ্যাম্বুলেন্সে মরদেহ তুলে দিয়ে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান।লাইফ কেয়ার হাসপাতালের ব্যবস্থাপক মো. পারভেজ হোসেনের ব্যক্তিগত ফোন নম্বরে কয়েকবার কল করে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।শ্রীপুর থানার এস আই সুজন পন্ডিত জানান, প্রসূতির অপারেশনের পরে মারা গেছেন। মারা যাওয়ার পর উত্তেজিত জনতা হাসপাতাল ভাংচুর করেছে। আমি এখনো ঘটনাস্থলে আছি।শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শোভন রাংসা বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।