নিজস্ব প্রতিবেদক: খুব শীঘ্রই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিট থেকে ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৫ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বিকেলে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইউরেনিয়াম হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন। এ সময়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।তিনি আরও বলেন, ২০২৩ সালের মধ্যে আমরা রুপপুরের প্রথম ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে যেতে পারবো, আর দ্বিতীয় ইউনিট প্রস্তুত হবে ২০২৪ সালের মধ্যে। সে লক্ষ্যেই আমরা আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনার জন্য পৃথক আইন প্রণয়ণ করে ‘নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি গঠন করা হয়েছে। যে কোনো দুর্যোগে এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে দিকে খেয়াল রেখে এ প্ল্যান্টের ডিজাইন ও নির্মাণকাজ করা হচ্ছে। এছাড়া ব্যবহৃত পারমানবিক জ্বালানি (স্পেন্ট ফুয়েল) ব্যবস্থাপনায় রাশান ফেডারেশনের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে। তারা এসব স্পেন্ট ফুয়েল তাদের নিজেদের দেশে ফেরত নিয়ে যাবে। বাংলাদেশ আজকের দিনে আরেক ধাপ এগিয়ে গেলো।শেখ হাসিনা বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের গ্রাজুয়েশন অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলকে আমি আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। বাংলাদেশের জনগণের জন্য আজকের দিনটি অত্যন্ত গর্বের ও আনন্দের । সরকারের নিরলস চেষ্টায় পারমাণবিক জ্বালানি গ্রহণের মধ্য দিয়ে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র আজকে সফল পরিণতি লাভ করলো। আমি কৃতজ্ঞতা জানাই বন্ধু প্রতিম রাশান ফেডারেশনের সরকার এবং তাদের জনগণের প্রতি। তারা আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে ও যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনে অসামান্য সহযোগিতা করেছিলেন। আবারও তারা আমাদের আরেকটি স্বপ্নের প্রকল্প বাস্তবায়নে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।তিনি আরও বলেন, আমরা ‘রূপকল্প-২০২১’ এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ‘পাওয়ার সেক্টর মাস্টার প্ল্যান-২০১০’ প্রণয়ন করি। এসময় রূপপুর প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। রাশিয়া এটি বাস্তবায়নে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়। আইএইএ শুরু থেকে আমাদের নানাভাবে সহায়তা করছে। আমি রাশিয়ান ফেডারেশন সরকার, আইএইএ এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ব্যক্তিগতভাবে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। ২০১৩ সালের ২ অক্টোবর প্রকল্পটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর থেকে এখন পর্যন্ত আপনার সর্বাত্মক সহযোগিতায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি সফলতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে।আরও পড়ুন: ইউরেনিয়াম হস্তান্তর: পারমাণবিক শক্তির যুগে বাংলাদেশস্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে রূপপুর সহায়ক ভূমিকা রাখবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা নিউক্লিয়ার যুগে প্রবেশ করেছি। আমাদের বন্ধু দেশ রাশান ফেডারেশন ও এর প্রেসিডেন্ট এখানে উপস্থিত থেকে আমাদেরকে সম্মানিত করেছেন, আমরা আনন্দিত।
০৫ অক্টোবর ২০২৩ ০২:০৭ পিএম
নিজস্ব প্রতিবেদক: আজ ৫ অক্টোবর বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের কাছে নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎ উৎপাদনের জ্বালানি ইউরেনিয়াম হস্তান্তর করবে রাশিয়া।ইউরেনিয়াম হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি।এ উপলক্ষে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গ্রাজুয়েশন সেরিমনির আয়োজন করেছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।এর আগে গত ২৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে এসে পৌঁছায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের জ্বালানির প্রথম চালান। ২৯ সেপ্টেম্বর বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় জ্বালানি নেওয়া হয় প্রকল্প এলাকায়।রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের 'ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল' বা ইউরেনিয়াম হস্তান্তর অনুষ্ঠানকে ঘিরে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে প্রকল্প এলাকায়।এ উৎসবের ছোঁয়া লেগেছে পাবনার ঈশ্বরদীতেও। বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে প্রকল্প ও গ্রিনসিটি এলাকা। দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে ফেস্টুন, দেয়াল অঙ্কনসহ নানা সাজসজ্জা হয়েছে সেখানে।পারমাণবিক জ্বালানি হস্তান্তর উপলক্ষে রূপপুর গ্রিনসিটির সামনের দেওয়ালে চিত্রশিল্পী টিপু সুলতানের বিশেষ চিত্রকর্মের মাধ্যমে নিউক্লিয়ার নিয়ে সাধারণ মানুষের বিভ্রান্তি দূর করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক সংস্থা রোসাটমের মহাপরিচালক আলেস্কি লিখাচেভ সশরীরে উপস্থিত থেকে ইউরেনিয়াম হস্তান্তর করবেন। বাংলাদেশের পক্ষে ইউরেনিয়াম গ্রহণ করবেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান।এর আগে স্থপতি ইয়াফেস ওসমান সাংবাদিকদের বলেছেন, স্বাধীনতার পরে এত বড় প্রাপ্তি এর আগে দেশের জন্য হয়নি। আমরা এখন বিশ্বের ৩৩তম পারমাণবিক দেশের মর্যাদা অর্জনের পাশাপাশি এ ধরনের প্রযুক্তি নিয়ে কাজের সক্ষমতা অর্জন করেছি।
০৫ অক্টোবর ২০২৩ ০৩:০২ এএম