বাগেরহাট প্রতিনিধি: এবার গোয়াল ঘর ছেড়ে কবুতর, হাঁস ও মুরগীর ঘরে শিশুদের ক্লাস করাচ্ছেন এনজিও সুখী মানুষ । পারিবারিক নানা প্রতিকূলতার কারণে যে সব শিশু শৈশবেই স্কুল পরিত্যাগ করেছে, লেখাপড়া বন্ধ হয়ে গেছে, তাদের লেখাপড়া শেখানোর প্রধানমন্ত্রীর যে প্রকল্প চালু করা হয়েছিল তা পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে বাগেরহাট জেলায়। ওই শিশু শিক্ষা প্রকল্পের প্রায় ১২ কোটি টাকা জালিয়াতির মাধ্যমে লোপাট করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে “সুখী মানুষ” নামের একটি বেসরকারি সংস্থার বিরুদ্বে ।বাগেড়রহাট জেলার চিতলমারী উপজেলার কাঠিপাড়া গ্রামের শিখন কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, একই ঘরের মধ্যে তিনটি ভাগ করে এক পাশে হাঁস, এক পাশে শিশুরা পড়ছে, মাঝখানে মুরগী আর ঘরের মাচায় কবুতরের বসবাস। এ বিষয় জানতে চাইলেন ক্ষেপে যান শিখন কেন্দ্রের শিক্ষক দিপালী । ঘর ভাড়া নিয়ে আলাদা ক্লাস করানোর কথা খাকলেও দেখা যায় ঘরের বারান্দা ভাড়া নিয়ে ক্লাস করাচ্ছেন এনজিও সুখী মানুষ ।৭ ফেব্রুয়ারি বুধবার ষাট গম্বুজ ইউনিয়নের বোয়ালমারী শিখন কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, মাদ্রসায় ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে আর এখানে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ছে । এ কেন্দ্রর এক অভিভাবক বলেন রুম ভাড়া নিয়মিত দেয় না। চাকুরি টিকিয়ে রাখার জন্য শিক্ষক লোন তুলে মালিককে ভাড়ার টাকা পরিশোধ করেছে । এ রকম দৃশ্য জেলার প্রায় সব জায়গায়ই । সুখী মানুষ এনজিওর বিরুদ্ধে ব্যাংক জালিয়াতি, পার্টনার বা সহযোগী এনজিওদের পাওনা অর্থ বুঝিয়ে না দেওয়া, স্কুল শিক্ষক, উপজেলা ম্যানেজার, সুপারভাইজার নিয়োগে নগদ অর্থ গ্রহণ, বিধিবহির্ভূতভাবে ব্যাংক থেকে ক্যাশ টাকা তুলে আত্মসাৎ করা, বেতন না দিয়ে হুমকি-ধামকি প্রদান, শিশু শিক্ষার্থীদের স্কুল ড্রেস, বই-খাতা, পেন্সিল, শ্লেটসহ বিভিন্ন প্রকার শিক্ষা সরঞ্জাম যথাযথভাবে প্রদান না করে সেই টাকা তুলে আত্মসাৎ করা হয়।শিখন কেন্দ্রের ভাড়া বকেয়া রেখে শিক্ষকদের হয়রানি করার অভিযোগ রয়েছে । এ বিষয়ে শিক্ষিকা সুমি আক্তার ও পলি আক্তারসহ একাধিক শিক্ষিকারা জানান, প্রকল্পের শুরু থেকে জরিপ থেকে শুরু করে ১২ মাস ক্লাস করানোর পর আমাদের কোন বেতন ভাতা, শিখন কেন্দ্র ভাড়া না দিয়েই আমাদের চাকুরী চ্যুত করেছে সুখী মানুষ এনজিও । তারা তাদের বেতন ভাতা জরিপের টাকা প্রদানের জন্য কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।৪ ফেব্রুয়ারি বাগেরহাট জেলা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর সহকারী পরিচালক, মহাপরিচালক বরাবরে একটি চিঠি দিয়েছেন । ওই চিঠিতে তিনি কীভাবে বাগেরহাটে এই শিশু শিক্ষা প্রকল্পটি কার্যকর হয়নি এবং লীড এনজিও “সুখী মানুষ” কীভাবে চরম অসহযোগিতা করেছে, সেই অনিয়মের বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন । “সুখী মানুষ” এনজিওটির এই প্রকল্পে কাজ করার কেনো সক্ষমতা নেই বলেও তিনি ওই চিঠিতে মন্তব্য করেন ।সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, দুদক, স্মারক নং-০০.০১.০০০০.৫০৩.২৬.২২৯.২২-২৩৬৪৮, তাং: ২৩/০৬/২০২২ইং ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, স্মারক নং- ৩৮.০০.০০০০.০১০.২৭.০০১.২০১৯-৬৮, তাংঃ ২০/০৭/২০২২ ইং ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, স্মারক নং- ৩৮.০০.০০০০.০১০.২৭.০০১.২০১৯-৫৮, তাংঃ ১৩/০৭/২০২২ ইং ও উশিব্যু, স্মারক নং-৩৮.০০.০০০০.৪০০.২০(অংশ-০২).৩৮৮.২২-৩১০ তাংঃ ২৩/০৬/২০২২ ইং এবং উশিব্যু, স্মারক নং-৩৮.০০.০০০০.৩০৪.১৪.৪৩৪.২০২০-২৪০ তাংঃ ১৪/০৭/২০২২ ইং ) বেশ কিছু তদন্ত চলমান থাকার মধ্যেই বড় ধরণের দুর্নীতি করেছে প্রতিষ্ঠানটি।সিটিজেন ভয়েসের সমন্বয়ক সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী মারুফ মোর্শেদ রানা মনে করেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একান্ত ইচ্ছা দেশের সকল গরিব অসহায় ঝরে পড়া শিশুদের লেখাপড়া শেখাবেন। তেমন একটি প্রকল্পে চরম আর্থিক দুর্নীতি হবে, শিশুরা শিক্ষা বঞ্চিত হবে এটা আসলে মেনে নেওয়াটা কঠিন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। নয়তো আগামী প্রজন্ম আরো বেশি শিক্ষা বঞ্চিত হবে।দেশের অন্যতম আইন গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর ল’ অ্যান্ড পলিসি এ্যাফেয়ার্স পরিচালক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেছেন, শিক্ষা নিয়ে জালিয়াতি কোনোভাবেই টলারেট না। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, শিশুদের শিক্ষা নিয়ে দুর্নীতি করলে, ভবিষ্যতে শিক্ষিত জাতি গড়ে উঠবে কীভাবে ? সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এটা কঠোরভাবেই দেখা উচিৎ।এদিকে বৃহস্পতিবার সন্ধা ৬টা ৫৩ মিনিটে সুখী মানুষ এনজিওর নির্বাহী পরিচালক নাফিজা আফরোজ বর্ণের ০১৭১২৫৫৫৭৮৮ নম্বর মোবাইলে ফোন দিরেও তিনি ফোন ধরেনি । তবে সুখী মানুষের প্রকল্প পরিচালক ও সুখী মানুষ এনজিওর নির্বাহী পরিচালক নাফিজা আফরোজের আপন ভাই শেখ সোহেল আহম্মেদ রাতে মুঠোফোনে এই প্রতিবেদককে বলেন, সুখী মানুষের বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ মিথ্যা বানোয়াট।এ বিষয়ে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহা. খালিদ হোসেন বলেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো কর্তৃক পরিচালিত “আউট অব স্কুল চিলড্রেন এডুকেশন প্রকল্প” “সুখী মানুষ”এনজিও বাগেরহাট জেলায় বাস্তবায়ন করছে। এদের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ আমার কাছে এসেছে যেমন শিখন কেন্দ্রে ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা কম, যে সকল ছাত্র ছাত্রী এখানে দেখানো হয়েছে তারা প্রকৃত এখানের ছাত্র ছাত্রী না।
০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ০৫:১৫ এএম
রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: বাংলাদেশ শিশু একাডেমি আয়োজিত জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতা ২০২২ এ রবীন্দ্র সংগীতে ‘ক’ বিভাগে তৃতীয় স্থানের পুরষ্কার গ্রহণ করেছে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার অপ্সরী বড়ুয়া ফ্লোরা।৮ ফেব্রুয়ারি বৃহষ্পতিবার সকালে ঢাকা ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে পুরষ্কার গ্রহণ করে সে।অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সভাপতিত্ব করেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমি এমপি।এতে স্বাগত বক্তব্য দেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারেক। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান লাকী ইনাম।রাঙ্গুনিয়া আদর্শ বহুমুখী পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী ফ্লোরা এর আগেও জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ উপলক্ষে নজরুল সংগীত ও দেশাত্ববোধক গানে জাতীয় পর্যায়ে দ্বিতীয় স্থানের পুরষ্কার অর্জন করে। তার বাড়ি রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড সৈয়দবাড়ি এলাকায়। তার বাবা রানা বড়ুয়া তবলাবাদক, মা ফুলকি বড়ুয়া বাংলাদেশ বেতারের তালিকাভুক্ত সংগীতশিল্পী।
০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ০১:৫৩ এএম