কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামে গরিব ও অসচ্ছল মানুষের মধ্যে সাত টাকায় ব্যাগ ভর্তি সবজি বিক্রি করছে ‘ফাইট আনটিল লাইট’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। ২০ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার সকালে ফুলবাড়ী উপজেলা পরিষদের সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিব্বির আহমেদ।জেলার সদর উপজেলা, ফুলবাড়ী উপজেলা এবং রাজারহাট উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে পর্যায়ক্রমে এই সাত টাকার সবজি বিক্রির কার্যক্রম চালানো হবে বলে সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক আবদুল কাদের জানান।উদ্বোধনী দিনে ফুলবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রায় শতাধিক দরিদ্র মানুষের মধ্যে এক কেজি করে শিম, এক কেজি আলু, এক কেজি বেগুন, একটি ফুলকপি, দুই আঁটি করে ধনে পাতা, পালংশাক এবং একটি করে ডিম দেওয়া হয়। পুরো প্যাকেজটির বাজার মূল্য তিন’শ টাকার বেশি হলেও দরিদ্র মানুষেরা পেয়েছেন মাত্র সাত টাকায়।সাত টাকার বাজার কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সোহেলী পারভীন, ফুলবাড়ী উপজেলা সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মজিবর রহমান, উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মাহবুব হোসেন লিটু এবং ফুল সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক আবদুল কাদের।সাত টাকার বাজারে সবজি কিনতে আসা রাণী আক্তার জানান, দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত দাম বাড়ায় কৃষক স্বামীর পক্ষে এক সাথে এতো বাজার করা অসম্ভব। মাত্র সাত টাকায় তিনশত টাকার কাঁচা বাজার পেলাম। পরিবারে চারজন সদস্য নিয়ে এ বাজার দিয়ে পাঁচ দিন নিশ্চিন্তে খাইতে পারবো।তিনি আরও বলেন, সংগঠন রিলিফ দেয় নাই। তারা কম দামে বিক্রি করলো আর হামরা কিনি নিলাম। কমদামে এতো বাজার পেয়ে আমার খুব উপকার হইল।আরেকজন ক্রেতা রিনা রাণী বলেন, হামার স্বামীর কোন আবাদী জমাজমি নাই, হাতের কামাই দিয়ে কোনো রকমে চাল কিনে ভাত খাই। বাজারে সবজির দাম চড়া, ভালমন্দ সবজি, মাছ, ডিম খামো তার সামর্থ্য নাই।আজ সাত টাকা দিয়ে এক কেজি শিম, এক ক্রজি আলু, এক কেজি বেগুন, একটি ফুলকপি, এক কেজি বেগুন, দুই আঁটি ধনে পাতা, দুই আটি পালংশাক এবং একটি ডিম কিনেছি। আমার ছাওয়াটা ডিম পায়া খুব খুশি হবে বলেও তিনি জানান।ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিব্বির আহমেদ জানান, বেসরকারি সংগঠন ফুল এর অর্থায়নে উপজেলার অভাবী মানুষের মাঝে মাত্র সাত টাকায় ব্যাগ ভর্তি বাজার করার সুযোগ পেলো। ফুল সংগঠন ত্রাণ না দিয়ে নামমাত্র টাকায় গরীব মানুষের বাজারের সুযোগ দিয়েছে। ফুল সংগঠনের এই মহৎ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক আবদুল কাদের বলেন, দীর্ঘদিন থেকে ফাইট আনটিল লাইট(ফুল) সংগঠন গরীব মানুষের জন্য বিভিন্ন সেবামূলক কাজ করে আসছে। আমরা ত্রাণ প্রথা থেকে মানুষকে বেড়িয়ে এসে সম্মানের সাথে বাঁচবার জন্য সাত টাকা করে নিচ্ছি।তিনি আরও বলেন, এছাড়াও আমাদের সংগঠন থেকে নাগেশ্বরী উপজেলা, ফুলবাড়ী উপজেলা, রাজারহাট উপজেলায় গরীব ও অসহায় মানুষদের মাঝে ফ্রি চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছে।
২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ১১:১৭ এএম
বরিশাল প্রতিনিধি: বরিশালে পাইকারি বাজারে যে দামে সবজি বিক্রি হচ্ছে তার দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। এতে বাজার করতে এসে চরম বিপত্তিতে পড়ছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। ২০ জানুয়ারি শনিবার রাতে বরিশাল নগরীর একমাত্র পাইকারি কাঁচামালের বাজার বহুমুখী সিটি মার্কেট ও নগরীর বেশ কয়টি খুচরা বাজারে গিয়ে দেখা গেছে এমন চিত্র।পাইকারি ও খুচরা বাজারের মূল্যে দ্বিগুণ পার্থক্যের বিষয়ে জানতে চাইলে নগরীর বাংলাবাজার এলাকার সবজি বিক্রেতা মনিরুল ইসলাম বলেন, পাইকারি মোকাম থেকে সবজি কেনার পর পরিবহন ব্যয় ও শ্রমিক মজুরি দিয়ে আনতে হয়। তারপর বাজারে সবজি নিয়ে বসলে সেজন্য ভাড়া দিতে হয়। লাইটের জন্য আলাদা টাকা দিতে হয়। অনেক সময় সবজি নষ্ট হয়ে গেলে আমাদের লোকসান গুনতে হয়। তাই খুচরা বাজারের সঙ্গে পাইকারি দরের তুলনা করে লাভ নেই।বহুমুখী সিটি মার্কেট পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা যায়, ফুলকপি ৩৫-৪০ টাকা কেজি, শালগম ২০-২৫ টাকা কেজি, টমেটো ২০-২৫ টাকা কেজি, বেগুন ৫০ টাকা কেজি, বাঁধাকপি ১০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া (দেশি) ২৫-৩০ টাকা, গাজর ২৫ টাকা কেজি, শিম ৩৫-৪০ টাকা কেজি, শসা ১৫-২০ টাকা কেজি, কাঁচামরিচ ৫০-৬০ টাকা কেজি, করোল্লা ৬০ টাকা কেজি, চিচিঙ্গা ২৫-৩০ টাকা কেজি, বরবটি ৫০-৬০ টাকা কেজি, পেঁপে ১৫ টাকা কেজি, লাউ প্রতি পিস ৪০-৬০ টাকা, লেবু প্রতি হালি ১২-১৫ টাকা ও কাঁচকলা ১০-১৫ টাকা হালি বিক্রি হচ্ছে।একই সবজি খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে প্রায় দ্বিগুণ দামে। এর মধ্যে ফুলকপি ৫০ টাকা কেজি, শালগম ৪০ টাকা কেজি, টমেটো ৪০ টাকা কেজি, বেগুন ৭০ টাকা কেজি, বাঁধাকপি ৩০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া (দেশি) ৪০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা কেজি, শিম ৭০ টাকা কেজি, শসা ৪০ টাকা কেজি, কাঁচামরিচ ১২০ টাকা কেজি, করোল্লা ৮০ টাকা কেজি, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা কেজি, বরবটি ৮০ টাকা কেজি, পেঁপে ৪০-৫০ টাকা কেজি, লাউ প্রতি পিস আকার ভেদে ৮০ টাকা পর্যন্ত, লেবু প্রতি হালি ২০ টাকা ও কাঁচকলা ৩০ টাকা করে হালি বিক্রি হচ্ছে।নগরীর নথুল্লাবাদে বাজার করতে আসা তামান্না জাহান নিসা বলেন, যে হারে সব জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে আমাদের মতো মানুষের না খেয়ে থাকার অবস্থা হয়েছে। প্রতি সপ্তাহেই নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। কোনো সবজি ৮০ টাকার নিচে নেই।আরেক ক্রেতা নাইমুল ইসলাম নকিব বলেন, কোনো কিছুই আমাদের নাগালের মধ্যে নেই। মাছ-মাংসের দাম যে হারে মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে তা এখন ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। সবজি একটু ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে ছিল, তাও এখন দিন দিন নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। এক হাজার টাকা নিয়ে বাজারে গেলে সবকিছু কিনে বাড়ি ফিরতে পারি না।নগরীর বহুমুখী সিটি মার্কেট পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ী মেসার্স দুলাল বাণিজ্যালয়ের প্রোপাইটর আমিন শুভ বলেন, পাইকারি বাজারে গত এক সপ্তাহ ধরেই সব ধরনের সবজি একই দামে বিক্রি হচ্ছে। শুধু দু’একটা সবজির দাম ৫ টাকা থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এছাড়া সব সবজি আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে।খুচরা বাজারে দ্বিগুণ মূল্যে বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে এ বিক্রেতা বলেন, ব্যবসায়ীরা পাইকারি বাজার থেকে পণ্য কিনে গাড়িভাড়া দিয়ে খুচরা বাজারে বিক্রি করেন। সেক্ষেত্রে কিছুটা লাভ রাখতে পারেন। কিন্তু প্রায় সময় দেখি পাইকারি বাজার থেকে পণ্য কিনে নিয়ে দ্বিগুণ-তিনগুণ দামে বিক্রি করছেন।
২১ জানুয়ারী ২০২৪ ০২:৩৩ পিএম
হাকিমপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: এক সপ্তাহের ব্যবধানে দিনজপুরের হিলিতে বেগুনের দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা। আর পাইকারী বাজারে আলুর দাম কেজিতে ১৫ টাকা কমেছে। এক সপ্তাহ আগে ৪০ টাকা কেজির বেগুন আজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়।বিক্রেতারা বলছেন, ঘণ কুয়াশা আর ঠান্ডার কারণে কৃষকরা ক্ষেত থেকে বেগুন তুলতে পারছেন না। তাই মোকামে বেগুন পাওয়াই যাচ্ছে না। পাঁচবিবি ও বিরামপুর মোকামে বেগুনের সরবরাহ কমে গেছে। তাই দাম বেড়েছে। ২১ জানুয়ারি রোববার দুপুরে হিলি সবজির বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে বেগুন ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। আজ সেই বেগুন ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে শিম ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও আজ ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ফুলকপি ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও আজ তা ৪০ টাকা কেজি দরে, করলা ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও আজ তা ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, টমেটো ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও আজ তা ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, মুলা ১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও আজ তা ১৫ টাকা কেজি দরে, পাতা পেঁয়াজ ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও তা আজ ৫০ টাকা কেজি দরে, আর দেশি পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।এদিকে পাইকারী বাজারে কেরেস আলু ২৫ টাকা কেজি দরে, আর গুটি লাল আলু ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর খুচরা বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৭ থেকে ৪০ টাকায়। সব ধরণের সবজির দামও কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে।হিলি বাজারে বেগুন কিনতে আসা মোহাম্মদ আলী বলেন, গত সপ্তাহে প্রতিকেজি বেগুন কিনেছি ৪০ টাকা কেজি দরে। আর আজ প্রতিকেজি বেগুন কিনতে হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে বেগুনের দাম কেজিতে বেড়েছে ২০ থেকে ৩০ টাকা।আরেক ক্রেতা আবু সাইদ বলেন, এখন তো বেগুনের ভরা মৌসুম তার পরেও বেগুনের দাম বাড়ার কারণ খুঁজে পাচ্ছি না। এক কেজি বেগুন কিনলাম ৭০ টাকায়।হিলি বাজারের সবজি বিক্রেতা তারেক রহমান বলেন, আজ আমি বিরামপুর পাইকারী বাজার থেকে বেগুন কিনেছি। বিরামপুর পাইকারী বাজারেই বেগুন সরবরাহ কমে গেছে। শনিবার বিরামপুর হাটের পাইকারী মোকামেই প্রতি মণ ২ হাজার ৪০০ টাকা হলে কিনতে পড়ছে ৬০ টাকা কেজি। তারপরও বেগুন নেই। তাই আমরা যেটুকু বেগুন পাচ্ছি ৬০ টাকা কেজি দরে কিনে ৭০ টাকা দরে বিক্রি করছি। মোকামে সরবরাহ বেড়ে গেলে দাম হয়তো কমে আসবে। তখন স্থানীয় বাজারেও দাম আগের মতোই কমে আসবে।হিলি বাজারের পাইকারী আলু বিক্রেতা বলেন, আজ পাইকারী আলু বিক্রি করছি কেরেস ২৫ থেকে ২৬ টাকায় আর গুটি লাল আলু ৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। গত এক সপ্তাহের তুলুনায় আজ রোববার কেজিতে ১৫ টাকা আলুর দাম কমছে। আর কয়েক দিন পর দাম আরও কমে আসবে।
২১ জানুয়ারী ২০২৪ ১১:১৮ এএম
সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি: নীলফামারীর সৈয়দপুর পৌর সবজি বাজার, পাশে রেলওয়ে গেট বাজার এবং শহরের বাইপাস মহাসড়কের কোল ঘেঁষে কাঁচামালের পাইকারী আড়ৎ। একই পণ্যের দাম তিন বাজারে তিন রকম। মেইন আড়তে যত দাম তার চেয়ে বেশি খুচরা দোকানে। আবার খুচরা দোকানের চেয়ে আরও বেশি দাম মহল্লার দোকানে। ৯ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে সৈয়দপুর পৌর সবজি বাজার গেলে দেখা যায়, দেশি আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি, বড় আলুর কেজি কমে হয়েছে ৪০ টাকা। বেগুন বিক্রি হচ্ছে (লম্বা) ৫০ টাকা কেজি ও গোল বেগুন ৩০ টাকা কেজি। শিমের কেজি এখনও ৬০ টাকা। যেকোনো শাক কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা। লাউ ছোট আকারের একটির দাম ৩০ টাকা। এছাড়াও করল্লার কেজি ৬০ টাকা, মূলার কেজি ৫০ টাকা, ঢেঁড়শের কেজি ৭০ টাকা, পেঁপের কেজি ৩০ টাকা, ফুলকপির কেজি ৪০ টাকা, বাঁধা কপি ৫০ টাকা, কাঁচা কলার হালি ৩০ টাকা, কাঁচা মরিচ কেজি ১৬০ টাকা ও দেশি পেঁয়াজ বাজার থেকে উধাও হয়ে গেছে তবে, বারো মিশালী পেঁয়াজের কেজি এখনও ১৪০ টাকা।বিভিন্ন সবজির দাম কিছুটা কমলেও বেড়েছে আদা ও রসুনের দাম। সৈয়দপুর বাজারে এক কেজি রসুন বিক্রি করা হচ্ছে ৩০০ টাকা আর আদার কেজি ৩২০ টাকা।সৈয়দপুর কাঁচামাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জয়নুল হক বলেন, দাম বাড়লে আমরা কী করবো। আমরা মূল আড়ত থেকে পণ্য ক্রয় করি বেশি দামে, তাই খুচরা বাজারে আমাদের বেশি দামে বিক্রি করতে হয়। তারপরও দিনের মাল দিনে বিক্রি করতে না পারলে আমাদের লোকসান গুনতে হয়। কারণ কাঁচা মাল বেশি সময় থাকলে পঁচে নষ্ট হয়ে যায়।বাজার করতে আসা ক্রেতা সামিউল হক বলেন, কী আর করবো, বাজার এলে মাথা কাজ করে না। দুই হাজার টাকা দিয়েও ছোট একটি কাপড়ের ব্যাগ ভর্তি হয় না।
১০ নভেম্বর ২০২৩ ০৪:২০ এএম
নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর বাজারে উঠতে শুরু করেছে আগাম শীতকালীন সবজি। সরবরাহের তুলনায় উৎপাদন কম হওয়ায় দাম বেশ চড়া। বেশি দামে বিক্রি করতে পেরে খুশি চাষীরা। তবে দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় অস্বস্থিতে ক্রেতারা। সবজির বাজার স্বাভাবিক হতে আরও প্রায় এক মাসের অধিক সময় লাগবে বলে ধারণা করছে সংশ্লিষ্টরা।জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় প্রায় ৮ হাজার ৫৮৫ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের শাকসবজির চাষ হয়েছে। যা থেকে প্রায় ১ লাখ ৭৫ হাজার ৪০ মেট্রিক টন সবজি উৎপাদনের সম্ভবনা রয়েছে। তবে আগাম শীতকালীন সবজির চাষ হয়েছে ২ হাজার ৫০ হেক্টর।ভোরের কুয়াশা শাক-সবজির ফুল ও লতায় পড়লেও সকালের সূর্যের আলোয় তা বিলিন হয়ে যাচ্ছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে বাড়ছে তাপমাত্রা। অনাবৃষ্টিতে শাকসবজির আবাদের কৃষকদের যেমন দূর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। আবার সেপ্টেম্বর মাসের শুরুর দিকে অতিবৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতি হয়েছে। অনাবৃষ্টি এবং অতিবৃষ্টিতে শাকসবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে শাকসবজির উৎপাদন ব্যহৃত হচ্ছে। প্রয়োজনের তুলনায় উৎপাদনের পরিমাণ কম হওয়ায় বেড়েছে সবজির দাম।নওগাঁ সদর উপজেলার বর্ষাইল ইউনিয়নের সাপ্তাহিত হাটবার সোমবার। এ হাটে ভোর থেকে চাষীরা তাদের উৎপাদিত শাক-সবজি বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন। সকাল ৯টা পর্যন্ত চলে পাইকারি বেচা-কেনা।হাট ঘুরে দেখা গেছে, পাইকারিতে সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে সিম ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা কেজি। এছাড়া বেগুন ও করলা ৯০ টাকা, মুলা ও বরবটি ৫০ টাকা, পটল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, পেঁপে ১৫ থেকে ২০ টাকা, ওল ৩৫-৪০ টাকা কেজি, কাঁচা মরিচ ১২০ টাকা কেজি, ফুলকপি ৪০ টাকা পিস এবং লাউ ২০ থেকে ২৬ টাকা পিস। ব্যবসায়িরা এ হাট থেকে সবজি কিনে প্রতি কেজিতে ১৫-২০ টাকা লাভে তারা খুচরা পর্যায়ে বিক্রি করে।চকআতিতা গ্রামের সবজি চাষী ইসরাফিল বলেন, এক বিঘা জমিতে ৪ হাজার পিস ফুলকপির চারা লাগিয়েছিলাম। কিছুদিন আগের বৃষ্টিতে বেশকিছু চারা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। হাটে ৭০ পিস ফুলিকপি নিয়ে এসেছি। প্রতি পিস ৪০ টাকা করে বিক্রি করলাম। গত হাটেও ১৫ পিস বিক্রি করেছি। দিন যত যাবে ফুলকপি তত বড়ো হবে।বর্ষাইল গ্রামের সিম চাষী আনোয়ার হোসেন বলেন, দুই কাঠা জমিতে সিমের আবাদ করেছি। গাছে ফুল আসলেও ফল আসতে দেরি হয়েছে। দুই বার ৭ কেজি সিম বিক্রি করেছি। পাইকারিতে ১৮০ টাকা দরে বিক্রি করেছি। সিমের উৎপাদন কম হওয়ায় দাম বেশি পেয়ে লাভবান হচ্ছি। তবে উৎপাদনের পরিমাণ যখন বেশি হবে, তখন দাম কমে আসবে।পাইকারি ব্যবসায়ি মাসুদ রানা বলেন, সবজির দাম অতিরিক্ত। কিছুদিন আগে বৃষ্টি হওয়ায় অনেক সবজিখেত নষ্ট হয়েছে। সবজির উৎপাদন কম হওয়ায় বাজারে সরবরাহ কমেছে। এতে দামও বেশি। সাপ্তাহিক এক দিনের এ হাটে প্রায় ৫ লাখ টাকার সবজি বেচা-কেনা হয়। বিগত বছর এ সময় প্রচুর পরিমাণ সবজি বাজারে উঠতো। তবে এ বছর তার ব্যতিক্রম।নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, আবহাওয়া বিপর্যয়ের কারণে গাছে সিম আসতে কিছুটা দেরি হয়েছে। তবে দিনের পরিমাণ কমে আসায় শীত বাড়ছে। এতে করে সিমসহ অন্যান্য আগাম জাতের শাক-সবজির আবাদ ভাল হবে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হওয়ার পাশাপাশি কৃষকরা ভাল লাভবান হবেন।
২৪ অক্টোবর ২০২৩ ০৭:৪৮ এএম