মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পেল প্রস্তাবিত বাজেট
নিজস্ব প্রতিবেদক: আজ মন্ত্রিসভা ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট অনুমোদন দিয়েছে। ১ জুন বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠকে প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়।
‘সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অঙ্গীকার’ এ প্রতিপাদ্য নিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বিকেলে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত এ বাজেট সংসদে উপস্থাপন করবেন।
এখন এই প্রস্তাবে সই করবেন প্রেসিডেন্ট মো. সাহাবুদ্দিন। বিকেল ৩টায় অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করবেন। এটিই হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম বাজেট।
প্রস্তাবিত বাজেটের আকার সাত লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পাঁচ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। বাকি দুই লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা থাকবে। দুই লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ইতোমধ্যে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বেশ কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে করছাড় সুবিধা থাকছে এ বাজেটে।
সংশ্লিষ্ট
নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘জাতীয় অর্থনৈতিক কাউন্সিল’ গঠন করা, অতিরিক্ত কর বাতিল ও কালো টাকা সাদা করার সুযোগ প্রত্যাহার করাসহ জনবান্ধব বাজেটের দাবিতে মানববন্ধনের করেছে জাগ্রত বাংলাদেশ। ২০২৪-২৫ অর্থবরের বাজেট অর্থনৈতিক বৈষম্য ও কালো টাকার মাফিয়াদের সুবিধা দেওয়ার বাজেট উল্লেখ করে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বলেছেন, অবৈধ ভোট চোর সরকারকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার জন্য এই বাজেট। অবিলম্বে বৈষম্যমূলক বাজেট প্রত্যাহার করে জনগণের জন্য জনবান্ধব বাজেট চাই।এ সময় তারা অর্থনৈতিক কাউন্সিল করে সমগ্র বাংলাদেশের অর্থনীতিকে স্বচ্ছ জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার দাবি করেন।১১ জুন মঙ্গলবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাগ্রত বাংলাদেশ আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে এসব দাবি করা হয়।মানববন্ধনে জাগ্রত বাংলাদেশের সভাপতি আজমুল জিহাদ, সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. নূরুল আমিন ভূঁইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন মামুন, আইন সম্পাদক অ্যাড. এবিএম জোবায়ের, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাড. হায়দার রবিউল ইসলাম রবি, দফতর সম্পাদক শামসুদ্দিন সামি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সংগঠনের সভাপতি আজমুল জিহাদ বলেন, আমার ইতিহাস, আমার পূর্বপুরুষের ইতিহাস রক্তে লেখা ইতিহাস। ৭১ এ রণাঙ্গনে জীবন দেওয়া ইতিহাস, বৈষম্যহীন দেশ গড়ার জন্য মুক্তির ইতিহাস। আজকে আবার সময় এসেছে সেই পাকিস্তানি দোসরদের অর্থনৈতিক বৈষম্য মোকাবিলা করার।তিনি বলেন, আজকে জেলা ভিত্তিক বৈষম্য, খাত ভিত্তিক বৈষম্য, কালো টাকা সাদা করার নামে দূর্নীতিবাজ, কর খেলাপি, ঋণখেলাপিদের অনৈতিক সুযোগ দিয়ে দেশটাতে দূর্নীতির লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে।তিনি আরও বলেন, ভালো মানুষ দিবে ৩০% কর কিন্তু ঋণখেলাপি দিবে ১৫% কর। এমন বৈষম্য পৃথিবীতে নজিরবিহীন। এমনটা করা হয়েছে শুধু এই অবৈধ ভোট চোর সরকারকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার জন্য।এ সময় তিনি জনগণের জন্য জনবান্ধব বাজেট করতে হবে এবং অর্থনৈতিক কাউন্সিল করে সমগ্র বাংলাদেশের অর্থনীতিকে স্বচ্ছ জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার দাবি করেন।সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন ভূঁইয়া বলেন, সরকার ৭ লক্ষ ৯৭ হাজার কোটি টাকার যে বাজেট দিয়েছেন, তাতে জনগণের চাওয়া পাওয়ার প্রতিফলন ঘটেনি। এই বাজেট কালোবাজারি, মুনাফাখোর, ঋণ খেলাপীদের পুনরায় লুটপাটের সুযোগ করে দিয়েছে। শিক্ষাখাতে ক্রমাগত বাজেট কমছে, স্বাস্থখাতের করুণ দশা সাধারণ মানুষ সরকারি স্বাস্থ্যসেবায় আস্থা হারিয়েছে। জনগণ তাদের আয়ের ৭০ শতাংশ শুধু স্বাস্থ্য সেবায় ব্যয় করছে। তাই আমরা বলতে চাই বাজেট সংশোধন করে জনমুখী বাজেট প্রণয়ন করা হোক।সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন মামুন বলেন, এই সরকার যে বাজেট দিয়েছে সেটা ব্যাংক লুটেরাদের বাজেট, টাকা পাচার কারীদের বাজেট, কালো টাকার মাফিয়াদের জন্য বাজেট। কারন এই বাজেটে এই সকল ব্যাংক ডাকাত, লুটেরা ও কালো টাকার মাফিয়াদের সুবিধা দেয়া ছাড়া আর কিছুই নেই।মানববন্ধন থেকে নিন্মলিখিত দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হলো-ক. সকল ট্রেড ইউনিয়ন এবং কর্ম-পেশার এসোসিয়েশন-এর প্রতিনিধি নিয়ে ৯০০ (নয় শত) সদস্য বিশিষ্ট ‘জাতীয় অর্থনৈতিক কাউন্সিল’ গঠন করতে হবে।খ. ‘জাতীয় অর্থনৈতিক কাউন্সিল’ বার্ষিক বাজেট প্রণয়নে জাতীয় সংসদে সুপারিশ পাঠাবে।গ. জাতীয় পর্যায়ের যে কোন আর্থিক পলিসি বিষয়ে জাতীয় সংসদে সুপারিশ পাঠাতে পারবে।ঘ. যে কোন বিদেশী পুঁজি বিনিয়োগের সম্ভাব্যতা ও যৌক্তিকতার বিষয় ‘জাতীয় অর্থনৈতিক কাউন্সিল’ এ আলোচনা করতে হবে।ঙ. বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কানেকটিভিটি অর্থাৎ ট্রান্সপোর্ট ইকোনমিকে কাজে লাগিয়ে একুশ শতকের উপযোগী করে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত নতুন বাজেটকে জনবান্ধব, যৌক্তিক, বাস্তবসম্মত ও শতভাগ বাস্তবায়নযোগ্য বলে মন্তব্য করেছেন ডিবিসি চ্যানেলের পরিচালক, স্টাইলিশ গার্মেন্টসের চেয়ারম্যান ও ব্যবসায়ী নেতা মো. সালাউদ্দিন চৌধুরী।৬ জুন বৃহস্পতিবার রাতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব কথা বলেন। নিত্য পণ্যের দাম ও মূল্যস্ফীতি কমাতে এবং অর্থনৈতিক সংকট কাটাতে বাজেটকে যুগোপযোগী বলেও মন্তব্য করেন তিনি।সালাউদ্দিন চৌধুরী বলেন, করোনা উত্তর সময়ে ব্যবসায়ীরা অনেক ধরনের সমস্যা পড়ছে। ব্যবসার এ সংকটময় সময়ে দেশের অর্থনীতি ঠিক রাখতে শিল্প ও বাণিজ্যে ছাড় অব্যাহত রাখতেও সরকারে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।উল্লেখ্য, অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেছেন। ৬ জুন বৃহস্পতিবার তিনি জাতীয় সংসদের তৃতীয় অধিবেশনে প্রস্তাবিত এ বাজেট উপস্থাপন করেন।বাজেটের আকার ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা, যা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১৪.২ শতাংশ এবং চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের চেয়ে চার দশমিক ছয় শতাংশ। এটি দেশের ৫৩তম, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের ২৫তম ও অর্থমন্ত্রীর প্রথম বাজেট।বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা থাকছে ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। বাকি ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা থাকবে। ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ইতোমধ্যে অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
আসিফ আহনাফ: ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে স্মার্ট বাংলাদেশের সংকল্পকে প্রাধান্য দেওয়ায় সাধুবাদ জানাই। স্মার্ট বাংলাদেশ এর জন্য প্রয়োজন স্মার্ট অর্থনীতি ও স্মার্ট বাণিজ্য। দেশের সকল ট্রেডিশনাল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ই-কমার্স এ ট্রান্সফর্ম করার জন্য প্রয়োজন আইটি ইনফাস্ট্রাকচার। সেজন্য আইটি ও সফটওয়্যার খাতকে ২০৩১ সাল পর্যন্ত কর অব্যাহতি দেওয়ার জন্য ই-ক্যাব সহ আইসিটি সংগঠনগুলো দাবি জানিয়ে এসেছে। যা এবারের বাজেটে ৩ বছরের জন্যে প্রস্তাবিত হয়েছে, বিশেষ করে ই-ক্যাব প্রস্তাবিত ই-লার্নিং ও ই অ্যাপ্লিকেশন এর উপর এই কর অব্যাহতি রাখায় এই খাতের উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। তবে পুরো ডিজটাল ইন্ড্রাস্ট্রির ব্যাকবোন ও গুরুত্বপূর্ণ অংশ ওয়েবসাইট হোস্টিং ও ক্লাউড সার্ভিসকেও কর অব্যাহতির আওয়াত নিয়ে আসার দাবি জানাচ্ছি। ডিজিটাল কমার্স প্রতিষ্ঠান সমূহের কার্যক্রমে সচ্ছতা, দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠাকল্পে বিজনেস আইডেন্টিটি প্ল্যাটফর্ম (DBID) ইক্যাবের জোরালো প্রস্তাবনা ছিল। ইতোমধ্যে এটি চালু হলেও ডিজিটাল কমার্স সেক্টরের পৃথক কোন কর্তৃপক্ষ না থাকায় DBID গ্রহনে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানসমূহকে এখনো ভোগান্তিতে পরতে হচ্ছে। এছাড়াও DBID এর কার্যকারিতাও এখনো স্পষ্ট হয়নি। এছাড়াও ভোক্তা অধিকার রক্ষায় ইক্যাব এর প্রস্তাবিত সেন্ট্রাল কম্পলায়েন্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এর পাইলটিং পরবর্তী ব্যাপক জনসচেতনতা তৈরি প্রয়োজন। ই কমার্স এর গুরুত্বপূর্ণ অংশ স্মার্ট লজিস্টিক্স। এ বিষয়ে সরকারের ‘জাতীয় লজিস্টিক নীতি’ প্রনয়নে ই-ক্যাব সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেছে। তবে এই নীতিমালার বাস্তবায়নে স্মার্ট লজিস্টিকস প্রতিষ্ঠানসমূহ কে ন্যূনতম পাঁচ বছর কর অব্যাহতি দেওয়া প্রয়োজন এবং গ্রামীণ পর্যায়ে ও ক্রস বর্ডার ই-কমার্স সম্প্রসারণে ‘স্মার্ট পোস্ট অফিস’ এর পাশাপাশি স্মার্ট লজিস্টিক্স প্রতিষ্ঠানসমূহ কে ডাক মাশুল থেকেও অব্যাহতি দেওয়া প্রয়োজন। সর্বোপরি প্রস্তাবিত বাজেটে লজিস্টিক খাতকে অগ্রাধিকার খাত ঘোষণা করায় স্মার্ট লজিস্টিক প্রতিষ্ঠানসমূহ এর ওয়্যারহাউজ ও ট্রাস্পোর্টেশন এর উপর প্রযোজ্য ভ্যাট মওকুফ করার আহবান জানাচ্ছি। এছাড়াও প্রস্তাবিত বাজেটে ক্যাশলেস পেমেন্ট কে বিভিন্নভাবে উৎসাহিত করা হলেও পেমেন্ট গ্রহনে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানসমূহকে পেমেন্ট চার্জ প্রদান করতে হয়, তাই ডিজিটাল পেমেন্ট কে উৎসাহিত করতে এই সেক্টরে পেমেন্ট চার্জ সমমানের ন্যূনতম দুই শতাংশ ক্যাশ ইন্সেটিভ প্রদান করার দাবি জানাচ্ছি। এছাড়াও শিক্ষা ও চিকিৎসা খাতে ক্যাশলেস পদক্ষেপ নেওয়া বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে যা সামগ্রিক পর্যায়ে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ সহজ করবে। ই-কমার্স দেশের সবথেকে ক্রমবর্ধমান সেক্টর, এই সেক্টরে গত ৫ বছরে প্রায় ২ লক্ষ নারী ও তরুন উদ্যোক্তা তৈরি হয়েছে এবং ৫ লক্ষাধিক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে, তাই এই সেক্টরের বিকাশে ২০৩১ সাল পর্যন্ত ই-কমার্স উদ্যোক্তাদের কর অব্যাহতি দেওয়াও দাবি জানাচ্ছি। আমরা আশা করছি স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে এবং স্মার্ট অর্থনীতির সংকল্পে ই-কমার্স সেক্টরকে আরো অগ্রাধিকার দেওয়া হবে এবং ই-ক্যাব এর প্রস্তাবিত দাবি সমূহ সরকার বিশেষ বিবেচনায় নিতে পারে। লেখক: অর্থ সম্পাদক, ই-ক্যাব এবং সিইও, ব্রেকবাইট ইবিজনেস
নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটকে অতি উচ্চাভিলাষী উল্লেখ করে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেছেন, বাজেটে অর্থনৈতিক সূচকের অনেক লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না।৭ জুন শুক্রবার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাজেট পর্যালোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এমন মন্তব্য করেন।বাজেটের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, চলমান অর্থনৈতিক উদ্বেগ মোকাবিলায় যে দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন, তা ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে নেওয়া হয়নি।মূল্যস্ফীতি রোধ ও নিম্ন আয়ের মানুষকে স্বস্তি দিতে বাজেটে যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা যথেষ্ট নয়।তিনি আরও বলেন, বাজেটে মুদ্রাস্ফীতি, জিডিপি গ্রোথ, বিনিয়োগের যেসব লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তা অতিউচ্চাভিলাষী ও বাস্তবসম্মত নয়। বাজেটে অর্থনৈতিক সূচকের অনেক লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না। চলমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ অনুধাবন করতে না পারায়, বাজেটে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা দুর্বল ও অপর্যাপ্ত। সব মিলিয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটটি অসাধারণ সময়ে একটি সাধারণ বাজেট।
মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পেল প্রস্তাবিত বাজেট
সংশ্লিষ্ট
নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘জাতীয় অর্থনৈতিক কাউন্সিল’ গঠন করা, অতিরিক্ত কর বাতিল ও কালো টাকা সাদা করার সুযোগ প্রত্যাহার করাসহ জনবান্ধব বাজেটের দাবিতে মানববন্ধনের করেছে জাগ্রত বাংলাদেশ। ২০২৪-২৫ অর্থবরের বাজেট অর্থনৈতিক বৈষম্য ও কালো টাকার মাফিয়াদের সুবিধা দেওয়ার বাজেট উল্লেখ করে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বলেছেন, অবৈধ ভোট চোর সরকারকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার জন্য এই বাজেট। অবিলম্বে বৈষম্যমূলক বাজেট প্রত্যাহার করে জনগণের জন্য জনবান্ধব বাজেট চাই।এ সময় তারা অর্থনৈতিক কাউন্সিল করে সমগ্র বাংলাদেশের অর্থনীতিকে স্বচ্ছ জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার দাবি করেন।১১ জুন মঙ্গলবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাগ্রত বাংলাদেশ আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে এসব দাবি করা হয়।মানববন্ধনে জাগ্রত বাংলাদেশের সভাপতি আজমুল জিহাদ, সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. নূরুল আমিন ভূঁইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন মামুন, আইন সম্পাদক অ্যাড. এবিএম জোবায়ের, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাড. হায়দার রবিউল ইসলাম রবি, দফতর সম্পাদক শামসুদ্দিন সামি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সংগঠনের সভাপতি আজমুল জিহাদ বলেন, আমার ইতিহাস, আমার পূর্বপুরুষের ইতিহাস রক্তে লেখা ইতিহাস। ৭১ এ রণাঙ্গনে জীবন দেওয়া ইতিহাস, বৈষম্যহীন দেশ গড়ার জন্য মুক্তির ইতিহাস। আজকে আবার সময় এসেছে সেই পাকিস্তানি দোসরদের অর্থনৈতিক বৈষম্য মোকাবিলা করার।তিনি বলেন, আজকে জেলা ভিত্তিক বৈষম্য, খাত ভিত্তিক বৈষম্য, কালো টাকা সাদা করার নামে দূর্নীতিবাজ, কর খেলাপি, ঋণখেলাপিদের অনৈতিক সুযোগ দিয়ে দেশটাতে দূর্নীতির লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে।তিনি আরও বলেন, ভালো মানুষ দিবে ৩০% কর কিন্তু ঋণখেলাপি দিবে ১৫% কর। এমন বৈষম্য পৃথিবীতে নজিরবিহীন। এমনটা করা হয়েছে শুধু এই অবৈধ ভোট চোর সরকারকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার জন্য।এ সময় তিনি জনগণের জন্য জনবান্ধব বাজেট করতে হবে এবং অর্থনৈতিক কাউন্সিল করে সমগ্র বাংলাদেশের অর্থনীতিকে স্বচ্ছ জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার দাবি করেন।সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন ভূঁইয়া বলেন, সরকার ৭ লক্ষ ৯৭ হাজার কোটি টাকার যে বাজেট দিয়েছেন, তাতে জনগণের চাওয়া পাওয়ার প্রতিফলন ঘটেনি। এই বাজেট কালোবাজারি, মুনাফাখোর, ঋণ খেলাপীদের পুনরায় লুটপাটের সুযোগ করে দিয়েছে। শিক্ষাখাতে ক্রমাগত বাজেট কমছে, স্বাস্থখাতের করুণ দশা সাধারণ মানুষ সরকারি স্বাস্থ্যসেবায় আস্থা হারিয়েছে। জনগণ তাদের আয়ের ৭০ শতাংশ শুধু স্বাস্থ্য সেবায় ব্যয় করছে। তাই আমরা বলতে চাই বাজেট সংশোধন করে জনমুখী বাজেট প্রণয়ন করা হোক।সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন মামুন বলেন, এই সরকার যে বাজেট দিয়েছে সেটা ব্যাংক লুটেরাদের বাজেট, টাকা পাচার কারীদের বাজেট, কালো টাকার মাফিয়াদের জন্য বাজেট। কারন এই বাজেটে এই সকল ব্যাংক ডাকাত, লুটেরা ও কালো টাকার মাফিয়াদের সুবিধা দেয়া ছাড়া আর কিছুই নেই।মানববন্ধন থেকে নিন্মলিখিত দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হলো-ক. সকল ট্রেড ইউনিয়ন এবং কর্ম-পেশার এসোসিয়েশন-এর প্রতিনিধি নিয়ে ৯০০ (নয় শত) সদস্য বিশিষ্ট ‘জাতীয় অর্থনৈতিক কাউন্সিল’ গঠন করতে হবে।খ. ‘জাতীয় অর্থনৈতিক কাউন্সিল’ বার্ষিক বাজেট প্রণয়নে জাতীয় সংসদে সুপারিশ পাঠাবে।গ. জাতীয় পর্যায়ের যে কোন আর্থিক পলিসি বিষয়ে জাতীয় সংসদে সুপারিশ পাঠাতে পারবে।ঘ. যে কোন বিদেশী পুঁজি বিনিয়োগের সম্ভাব্যতা ও যৌক্তিকতার বিষয় ‘জাতীয় অর্থনৈতিক কাউন্সিল’ এ আলোচনা করতে হবে।ঙ. বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কানেকটিভিটি অর্থাৎ ট্রান্সপোর্ট ইকোনমিকে কাজে লাগিয়ে একুশ শতকের উপযোগী করে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত নতুন বাজেটকে জনবান্ধব, যৌক্তিক, বাস্তবসম্মত ও শতভাগ বাস্তবায়নযোগ্য বলে মন্তব্য করেছেন ডিবিসি চ্যানেলের পরিচালক, স্টাইলিশ গার্মেন্টসের চেয়ারম্যান ও ব্যবসায়ী নেতা মো. সালাউদ্দিন চৌধুরী।৬ জুন বৃহস্পতিবার রাতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব কথা বলেন। নিত্য পণ্যের দাম ও মূল্যস্ফীতি কমাতে এবং অর্থনৈতিক সংকট কাটাতে বাজেটকে যুগোপযোগী বলেও মন্তব্য করেন তিনি।সালাউদ্দিন চৌধুরী বলেন, করোনা উত্তর সময়ে ব্যবসায়ীরা অনেক ধরনের সমস্যা পড়ছে। ব্যবসার এ সংকটময় সময়ে দেশের অর্থনীতি ঠিক রাখতে শিল্প ও বাণিজ্যে ছাড় অব্যাহত রাখতেও সরকারে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।উল্লেখ্য, অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেছেন। ৬ জুন বৃহস্পতিবার তিনি জাতীয় সংসদের তৃতীয় অধিবেশনে প্রস্তাবিত এ বাজেট উপস্থাপন করেন।বাজেটের আকার ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা, যা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১৪.২ শতাংশ এবং চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের চেয়ে চার দশমিক ছয় শতাংশ। এটি দেশের ৫৩তম, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের ২৫তম ও অর্থমন্ত্রীর প্রথম বাজেট।বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা থাকছে ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। বাকি ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা থাকবে। ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ইতোমধ্যে অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
আসিফ আহনাফ: ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে স্মার্ট বাংলাদেশের সংকল্পকে প্রাধান্য দেওয়ায় সাধুবাদ জানাই। স্মার্ট বাংলাদেশ এর জন্য প্রয়োজন স্মার্ট অর্থনীতি ও স্মার্ট বাণিজ্য। দেশের সকল ট্রেডিশনাল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ই-কমার্স এ ট্রান্সফর্ম করার জন্য প্রয়োজন আইটি ইনফাস্ট্রাকচার। সেজন্য আইটি ও সফটওয়্যার খাতকে ২০৩১ সাল পর্যন্ত কর অব্যাহতি দেওয়ার জন্য ই-ক্যাব সহ আইসিটি সংগঠনগুলো দাবি জানিয়ে এসেছে। যা এবারের বাজেটে ৩ বছরের জন্যে প্রস্তাবিত হয়েছে, বিশেষ করে ই-ক্যাব প্রস্তাবিত ই-লার্নিং ও ই অ্যাপ্লিকেশন এর উপর এই কর অব্যাহতি রাখায় এই খাতের উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। তবে পুরো ডিজটাল ইন্ড্রাস্ট্রির ব্যাকবোন ও গুরুত্বপূর্ণ অংশ ওয়েবসাইট হোস্টিং ও ক্লাউড সার্ভিসকেও কর অব্যাহতির আওয়াত নিয়ে আসার দাবি জানাচ্ছি। ডিজিটাল কমার্স প্রতিষ্ঠান সমূহের কার্যক্রমে সচ্ছতা, দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠাকল্পে বিজনেস আইডেন্টিটি প্ল্যাটফর্ম (DBID) ইক্যাবের জোরালো প্রস্তাবনা ছিল। ইতোমধ্যে এটি চালু হলেও ডিজিটাল কমার্স সেক্টরের পৃথক কোন কর্তৃপক্ষ না থাকায় DBID গ্রহনে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানসমূহকে এখনো ভোগান্তিতে পরতে হচ্ছে। এছাড়াও DBID এর কার্যকারিতাও এখনো স্পষ্ট হয়নি। এছাড়াও ভোক্তা অধিকার রক্ষায় ইক্যাব এর প্রস্তাবিত সেন্ট্রাল কম্পলায়েন্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এর পাইলটিং পরবর্তী ব্যাপক জনসচেতনতা তৈরি প্রয়োজন। ই কমার্স এর গুরুত্বপূর্ণ অংশ স্মার্ট লজিস্টিক্স। এ বিষয়ে সরকারের ‘জাতীয় লজিস্টিক নীতি’ প্রনয়নে ই-ক্যাব সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেছে। তবে এই নীতিমালার বাস্তবায়নে স্মার্ট লজিস্টিকস প্রতিষ্ঠানসমূহ কে ন্যূনতম পাঁচ বছর কর অব্যাহতি দেওয়া প্রয়োজন এবং গ্রামীণ পর্যায়ে ও ক্রস বর্ডার ই-কমার্স সম্প্রসারণে ‘স্মার্ট পোস্ট অফিস’ এর পাশাপাশি স্মার্ট লজিস্টিক্স প্রতিষ্ঠানসমূহ কে ডাক মাশুল থেকেও অব্যাহতি দেওয়া প্রয়োজন। সর্বোপরি প্রস্তাবিত বাজেটে লজিস্টিক খাতকে অগ্রাধিকার খাত ঘোষণা করায় স্মার্ট লজিস্টিক প্রতিষ্ঠানসমূহ এর ওয়্যারহাউজ ও ট্রাস্পোর্টেশন এর উপর প্রযোজ্য ভ্যাট মওকুফ করার আহবান জানাচ্ছি। এছাড়াও প্রস্তাবিত বাজেটে ক্যাশলেস পেমেন্ট কে বিভিন্নভাবে উৎসাহিত করা হলেও পেমেন্ট গ্রহনে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানসমূহকে পেমেন্ট চার্জ প্রদান করতে হয়, তাই ডিজিটাল পেমেন্ট কে উৎসাহিত করতে এই সেক্টরে পেমেন্ট চার্জ সমমানের ন্যূনতম দুই শতাংশ ক্যাশ ইন্সেটিভ প্রদান করার দাবি জানাচ্ছি। এছাড়াও শিক্ষা ও চিকিৎসা খাতে ক্যাশলেস পদক্ষেপ নেওয়া বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে যা সামগ্রিক পর্যায়ে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ সহজ করবে। ই-কমার্স দেশের সবথেকে ক্রমবর্ধমান সেক্টর, এই সেক্টরে গত ৫ বছরে প্রায় ২ লক্ষ নারী ও তরুন উদ্যোক্তা তৈরি হয়েছে এবং ৫ লক্ষাধিক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে, তাই এই সেক্টরের বিকাশে ২০৩১ সাল পর্যন্ত ই-কমার্স উদ্যোক্তাদের কর অব্যাহতি দেওয়াও দাবি জানাচ্ছি। আমরা আশা করছি স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে এবং স্মার্ট অর্থনীতির সংকল্পে ই-কমার্স সেক্টরকে আরো অগ্রাধিকার দেওয়া হবে এবং ই-ক্যাব এর প্রস্তাবিত দাবি সমূহ সরকার বিশেষ বিবেচনায় নিতে পারে। লেখক: অর্থ সম্পাদক, ই-ক্যাব এবং সিইও, ব্রেকবাইট ইবিজনেস
নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটকে অতি উচ্চাভিলাষী উল্লেখ করে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেছেন, বাজেটে অর্থনৈতিক সূচকের অনেক লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না।৭ জুন শুক্রবার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাজেট পর্যালোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এমন মন্তব্য করেন।বাজেটের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, চলমান অর্থনৈতিক উদ্বেগ মোকাবিলায় যে দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন, তা ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে নেওয়া হয়নি।মূল্যস্ফীতি রোধ ও নিম্ন আয়ের মানুষকে স্বস্তি দিতে বাজেটে যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা যথেষ্ট নয়।তিনি আরও বলেন, বাজেটে মুদ্রাস্ফীতি, জিডিপি গ্রোথ, বিনিয়োগের যেসব লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তা অতিউচ্চাভিলাষী ও বাস্তবসম্মত নয়। বাজেটে অর্থনৈতিক সূচকের অনেক লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না। চলমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ অনুধাবন করতে না পারায়, বাজেটে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা দুর্বল ও অপর্যাপ্ত। সব মিলিয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটটি অসাধারণ সময়ে একটি সাধারণ বাজেট।
মন্তব্য করুন