ফাইল ছবি
পরিক্ষীৎ চৌধুরী
তোমাকে ভালোবাসার কথা আমায় কেউ শিখিয়ে দেয়নি,
প্রতিদিন সূর্যপ্রণাম করার মতোন
তোমার প্রশস্তিমিশ্রিত মন্ত্র আমি কোনো গ্রন্থে শিখিনি,
তোমাকে নৈবেদ্য দিবো বলে
কোনো ফুলকে করিনি বৃন্তচ্যুত।
কিন্তু তোমাকে ভালোবাসার কোনো অন্ত আমার নেই
তোমাকে শিয়রে তুলে রাখার চেয়ে বড় কোনো আরাধ্য আমার নেই।
পৃথিবীর সকল বৃক্ষের দোলনায়
দোলায়মান সকল পুষ্প
তোমার চরণে নতজানু হয়ে প্রণতি জানায় প্রতিদিন।
কারণ, ওরা জানে আমি তোমাকে ভালোবাসি।
তোমার জন্য যারা বুক পেতে দিয়েছিলো ঘাতক বুলেটের সামনে,
তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে প্রমাণ করেছিলো যে
তোমাকে ভালোবাসার মতোন বড় কোনো প্রেমকাহিনী
পৃথিবীতে কোনদিনও জন্ম নেবে না
তাদেরকেও গোপনে কেউ বলে দেয়নি,
‘যাও, রক্ত দিয়ে ভালোবাসার কথা বলে আসো।‘
ওরা তোমাকে ভালোবেসেছিলো সহজাত প্রবৃত্তি থেকে।
কবিতায় তোমাকে ভালোবাসার কথা বলে যাই-
আমাকে তাও কেউ শিখিয়ে দেয়নি,
কারণ, আমি তোমাকে ভালোবাসি।
বৃক্ষের শেকড় যেমন ভালোবাসে মৃত্তিকা,
পাখিদের ডানাগুলো যেমন ভালোবাসে বাতাসের গন্ধ
আমিও তেমনি ভালোবাসি তোমাকে-
আ-মরি বাংলা ভাষা।
সংশ্লিষ্ট
নিজস্ব প্রতিবেদক: একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি অসীম সাহা আর নেই। ১৮ জুন মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক ও কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা।তিনি জানান, মাঝখানে দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর অসীম সাহা মোটামুটি সুস্থই ছিলেন। অল্প কয়েকদিন আগেই আমার সঙ্গে দেখা হয়। আজ শুনি তিনি আর নেই।জানা গেছে, কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়াবেটিসসহ একাধিক রোগে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিলেন তিনি। সর্বশেষ তিনি বিএসএমএমইউ’র নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ছিলেন।অসীম সাহার পৈত্রিক নিবাস মাদারীপুরে হলেও ১৯৪৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি তিনি নেত্রকোণা জেলায় তার মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৫ সালে মাধ্যমিক পাস করেন এবং ১৯৬৭ সালে মাদারীপুর নাজিমুদ্দিন মহাবিদ্যালয় থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। ১৯৬৯ সালে স্নাতক পাস করে তিনি ১৯৬৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৬৯ সালে অসহযোগ আন্দোলন এবং পরে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে তার স্নাতকোত্তর পরীক্ষা পিছিয়ে যায় এবং তিনি ১৯৭৩ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।সাহিত্যে অবদানের জন্য অসীম সাহা ২০১২ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ও ২০১৯ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন।
কুমারখালী (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি: বাংলা সাহিত্যের সর্বক্ষেত্রেই কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভূমিকা রেখেছেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহবুবউল আলম হানিফ।৮ মে বুধবার সকাল ১১টায় বিশ্বকবির ১৬৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কুষ্টিয়ার শিলাইদহে কবির স্মৃতিবিজড়িত কুঠিবাড়ি আঙিনায় ২ দিনব্যাপী রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী ও আলোচনা অনুষ্ঠানের উদ্বোধনকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনাদর্শ ও তার সৃষ্টিকর্ম শোষণ-বঞ্চনামুক্ত, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে চিরদিন বাঙালিকে অনুপ্রাণিত করবে। তিনি বাঙালির চেতনা ও মননের প্রধান প্রতিনিধি। বিশ্বকবির কুঠিবাড়ী, কাচারিবাড়িসহ তার সব স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য বর্তমান সরকারের প্রচেষ্টার অব্যাহত আছে।কুষ্টিয়ার ঐতিহ্য আমাদের এই শিলাইদহের কুঠিবাড়ি উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতিনিয়ত এখানে রবীন্দ্রপ্রেমী ও দর্শনার্থীদের আগমন ঘটে। তাই এখানে আধুনিক পর্যটন কেন্দ্র করতে আরও বেশি উদ্যোগ নেওয়া হবে এবং ট্যুরিস্ট পুলিশের তৎপরতা বাড়াতে হবে, যাতে করে পর্যটকদের কোনো সমস্যার সৃষ্টি না হয়। একইসাথে এই শিলাইদহে ভবিষ্যতে শান্তি নিকেতনের আদলে কিছু করা যায় কিনা, সেটাও ভেবে দেখা হবে।কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো. এহেতেশাম রেজার সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথির বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া-৪ (খোকসা-কুমারখালী) আসনের সংসদ সদস্য আব্দুর রউফ।এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার এএইচ এম আবদুর রকিব, কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক শিশির কুমার রায়, সাংবাদিক ইউনিয়ন কুষ্টিয়ার সভাপতি রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব, জাগ্রত মহানায়ক শিহাব রিফাত আলম, জাতীয় মানবাধিকার সোসাইটির চেয়ারম্যান প্রফেসর নজরুল ইসলাম তামিজি প্রমুখ।কবির কর্মময় জীবন নিয়ে আলোচনা করেন রবীন্দ্র গবেষক ইবির বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. সরওয়ার মুর্শেদ রতন ও শিলাইদহ রবীন্দ্র সংসদের পরিচালক আফজাল হোসেন।এর আগে জেলা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীদের কণ্ঠে সূচনা সঙ্গীত পরিবেশিত হয়। দুই দিনব্যাপী রবীন্দ্রমেলাকে ঘিরে শিলাইদহ কুঠিবাড়ি আঙিনা হাজারো দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে। তবে প্রচণ্ড গরম এবং উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের কারণে তিন দিনের এ অনুষ্ঠানকে দুই দিনেই শেষ করা হবে।সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন বিশ্বকবির ১৬৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী আয়োজিত অনুষ্ঠানে কুঠিবাড়ির মূলমঞ্চে প্রতিদিনই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জেলার সংগঠনসহ জাতীয় পর্যায়ের শিল্পীরা কুঠিবাড়ির মূলমঞ্চে রবীন্দ্র সংগীত, কবিতা আবৃত্তি, দলীয় নৃত্য পরিবেশন ও রবীন্দ্রনাথের লেখা নাটক মঞ্চস্থ করবেন।এদিকে, রবীন্দ্র জন্মবার্ষিকীতে কুঠিবাড়ি চত্বরে বসেছে বিশাল গ্রামীণ মেলা। নানারকম পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। ঐতিহাসিক এই উৎসবকে নির্বিঘ্ন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।জমিদারি দেখাশোনার জন্য ১৮৯১ সালে প্রথম এই কুঠিবাড়িতে আসেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। নিরিবিলি পরিবেশ, জমিদারি আর ব্যবসার কারণে বার বার কুষ্টিয়ার এই কুঠিবাড়িতে ফিরে আসতেন তিনি। নিভৃত বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চল কুষ্টিয়ার শিলাইদহে কবির জীবনের বেশকিছু মূল্যবান সময় কেটেছে। এখানে বসে রচিত গীতাঞ্জলি কাব্যই রবীন্দ্রনাথকে এনে দিয়েছে নোবেল পুরস্কার আর বিশ্বকবির মর্যাদা। এছাড়া তিনি এখানে বসেই বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতসহ অসংখ্য কালজয়ী সাহিত্য রচনা করেছেন। কুঠিবাড়িতে সংরক্ষিত আছে সেসব দিনের নানা স্মৃতি।তবে কুমারখালী শিলাইদহের পার্শ্ববর্তী দুটি উপজেলাতে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের কারণে এবারের অনুষ্ঠানে লোক সমাগম কম হয়েছে। এতে রবীন্দ্রপ্রেমীদের মধ্যে এক ধরনের হতাশা কাজ করেছে। আগামীতে তারা জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠান উপভোগ করতে চায়।
নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীতে মহাকবি আল্লামা ইকবালের ৮৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে 'মহাকবি ইকবালের জীবন ও চিন্তাদর্শন' শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২১ এপ্রিল রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াতের মধ্যদিয়ে সেমিনারের সূচনা হয়। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আল্লামা ইকবাল সংসদের সদস্য সচিব ড. আব্দুল ওয়াহিদ। তিনি বাংলাদেশে ইকবাল চর্চার গুরুত্ব ও আল্লামা ইকবাল সংসদের কার্যক্রম সম্বন্ধে সংক্ষেপে একটি পর্যালোচনা তুলে ধরেন। আল্লামা ইকবালের একটি কবিতার গীতিরূপ আবৃত্তি করেন বিশিষ্ট গীতিকার ও সুরকার লিটন হাফিজ। ইকবালের এই অসাধারণ কবিতার আবৃত্তিতে শ্রোতা এবং আবৃত্তিকারসহ সকলেই একাত্ম হন। 'আল্লামা ইকবালের মানব ঐক্যের দর্শন' শীর্ষক প্রবন্ধ পাঠ করেন সৈয়দ তোশারফ আলী। প্রথমে তিনি আল্লামা ইকবালের জীবন ও জ্ঞানের সফরের একটি সংক্ষিপ্ত চিত্র তুলে ধরেন। পরবর্তীতে বিশ্বায়ন, বর্তমান দুনিয়ার সংকটের প্রেক্ষিতে আল্লামা ইকবালের দর্শনচর্চা কীভাবে আমাদের সংকট উত্তরণের পথ নির্দেশ করতে পারে, তা তিনি তুলে ধরেন। প্রধান অতিথি প্রফেসর ড. শমশের আলী শারীরিক অসুস্থতার দরুণ উপস্থিত হতে না পারলেও, তার বক্তব্য রেকর্ড করে পাঠিয়ে দেন, যা সেমিনারে শোনানো হয়। এছাড়া বক্তব্য রাখেন এশিয়ান ইউনিভার্সিটির ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রধান ড. এনামুল হক আজাদ ও বিশিষ্ট গবেষক শাহ আব্দুল হালিম। সভাপতির বক্তব্যে বিশিষ্ট কবি ও সম্পাদক আল মুজাহিদী শুরুতেই ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন। পাশাপাশি, বর্তমান দুনিয়ার প্রেক্ষিতে আল্লামা ইকবালের চিন্তা কীভাবে এখনো প্রাসঙ্গিকতা রাখে, তাও তিনি সংক্ষেপে তুলে ধরেন। সেমিনার সঞ্চালনা করেন বিশিষ্ট কবি জাকির আবু জাফর। বক্তব্যের মাঝে কয়েকজন ইকবাল অনুরাগীর কালামে ইকবাল থেকে আবৃত্তি সেমিনারকে আরো প্রাণবন্ত করে তোলে। উল্লেখ্য, আল্লামা ইকবাল সংসদ গত তিনযুগেরও অধিক সময় ধরে বাংলাদেশে ইকবাল চর্চার পথপ্রদর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘শুদ্ধ সাহিত্য চর্চায় অঙ্গীকারবদ্ধ’ স্লোগানকে সামনে রেখে আত্নপ্রকাশ করেছে ভাওয়াল সাহিত্য সংসদ নামে একটি সংগঠনের।৯ এপ্রিল মঙ্গলবার সকালে গাজীপুরের একটি অভিজাত রিসোর্টে প্রবীণ-নবীণ লেখক, কবি ও সাহিত্যিকদের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে ২০২৪-২৫ কার্যনির্বাহী কমিটি। এতে লেখক, কলামিস্ট ও সাংবাদিক হাফিজুর রহমানকে সভাপতি এবং মো. হারুন-অর-রশিদকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়েছে।১৯ সদস্য বিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটির অন্যান্যরা হলেন- সিনিয়র সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর সনজু, সহ-সভাপতি বি এম আশিক হাসান, সহ-সাধারণ সম্পাদক হানিফ আকন্দ, সহ-সাধারণ সম্পাদক বসির আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মো. আরিফুল ইসলাম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবু হুরায়রা, দফতর সম্পাদক আল আমিন রতন, অর্থ সম্পাদক সাকিল আল ফারুকী, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক ইমরান হক, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক বিলকিস আক্তার, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক শরিফুল ইসলাম এবং ক্রীড়া ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আতিকুল হোসেন।কার্যকরী সদস্যরা হলেন- মোবারক হোসেন রনি, দেলোয়ার হোসেন, খাইরুল ইসলাম সুমন, শরীফুল ইসলাম ও জাহাঙ্গীর আলম।ভাওয়াল সাহিত্য সংসদের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্যরা হলেন- গাজীপুর সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আফাজ উদ্দিন কাঁইয়া, সাংবাদিক নেতা মো. আবু বকর সিদ্দিক এবং বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও শিক্ষানুরাগী জালাল উদ্দিন মাস্টার।ভাওয়াল সাহিত্য সংসদের নবনির্বাচিত সভাপতি হাফিজুর রহমান বলেন, সাহিত্য চর্চার মধ্য দিয়েই একজন মানুষের পূর্ণাঙ্গ স্বত্বা বিকশিত হয়। ভাওয়াল সাহিত্য সংসদ সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে কাজ করে যাবে। শিল্প সাহিত্য চর্চা ও তা বিকাশের জন্য প্রয়োজন একটি প্লাটফর্মের সেই কারণে ভাওয়াল সাহিত্য সংসদ ‘ভাওয়ালের কাগজ’ নামে একটি সাহিত্য পত্রিকা প্রকাশ করবে, যাতে লেখকরা তাঁদের ভেতরের প্রতিভা প্রকাশের প্লাটফর্ম খুঁজে পান। ভাওয়াল সাহিত্য সংসদের প্রতিটা লেখক ও সাহিত্যিক একেক জন আলোকিত মানুষ। তাই বিশ্বাস রাখি এই সংগঠনের মাধ্যমে আলোকিত হবে সমাজ ও রাষ্ট্র। আমরা শুধুমাত্র সাহিত্য নয়, বরং সমাজ ও পরিবেশের কল্যাণে সকল ধরণের সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করবো এই সংগঠনের ব্যানারে।
তোমাকে ভালোবাসা আমার সহজাত
সংশ্লিষ্ট
নিজস্ব প্রতিবেদক: একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি অসীম সাহা আর নেই। ১৮ জুন মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক ও কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা।তিনি জানান, মাঝখানে দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর অসীম সাহা মোটামুটি সুস্থই ছিলেন। অল্প কয়েকদিন আগেই আমার সঙ্গে দেখা হয়। আজ শুনি তিনি আর নেই।জানা গেছে, কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়াবেটিসসহ একাধিক রোগে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিলেন তিনি। সর্বশেষ তিনি বিএসএমএমইউ’র নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ছিলেন।অসীম সাহার পৈত্রিক নিবাস মাদারীপুরে হলেও ১৯৪৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি তিনি নেত্রকোণা জেলায় তার মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৫ সালে মাধ্যমিক পাস করেন এবং ১৯৬৭ সালে মাদারীপুর নাজিমুদ্দিন মহাবিদ্যালয় থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। ১৯৬৯ সালে স্নাতক পাস করে তিনি ১৯৬৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৬৯ সালে অসহযোগ আন্দোলন এবং পরে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে তার স্নাতকোত্তর পরীক্ষা পিছিয়ে যায় এবং তিনি ১৯৭৩ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।সাহিত্যে অবদানের জন্য অসীম সাহা ২০১২ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ও ২০১৯ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন।
কুমারখালী (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি: বাংলা সাহিত্যের সর্বক্ষেত্রেই কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভূমিকা রেখেছেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহবুবউল আলম হানিফ।৮ মে বুধবার সকাল ১১টায় বিশ্বকবির ১৬৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কুষ্টিয়ার শিলাইদহে কবির স্মৃতিবিজড়িত কুঠিবাড়ি আঙিনায় ২ দিনব্যাপী রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী ও আলোচনা অনুষ্ঠানের উদ্বোধনকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনাদর্শ ও তার সৃষ্টিকর্ম শোষণ-বঞ্চনামুক্ত, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে চিরদিন বাঙালিকে অনুপ্রাণিত করবে। তিনি বাঙালির চেতনা ও মননের প্রধান প্রতিনিধি। বিশ্বকবির কুঠিবাড়ী, কাচারিবাড়িসহ তার সব স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য বর্তমান সরকারের প্রচেষ্টার অব্যাহত আছে।কুষ্টিয়ার ঐতিহ্য আমাদের এই শিলাইদহের কুঠিবাড়ি উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতিনিয়ত এখানে রবীন্দ্রপ্রেমী ও দর্শনার্থীদের আগমন ঘটে। তাই এখানে আধুনিক পর্যটন কেন্দ্র করতে আরও বেশি উদ্যোগ নেওয়া হবে এবং ট্যুরিস্ট পুলিশের তৎপরতা বাড়াতে হবে, যাতে করে পর্যটকদের কোনো সমস্যার সৃষ্টি না হয়। একইসাথে এই শিলাইদহে ভবিষ্যতে শান্তি নিকেতনের আদলে কিছু করা যায় কিনা, সেটাও ভেবে দেখা হবে।কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো. এহেতেশাম রেজার সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথির বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া-৪ (খোকসা-কুমারখালী) আসনের সংসদ সদস্য আব্দুর রউফ।এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার এএইচ এম আবদুর রকিব, কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক শিশির কুমার রায়, সাংবাদিক ইউনিয়ন কুষ্টিয়ার সভাপতি রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব, জাগ্রত মহানায়ক শিহাব রিফাত আলম, জাতীয় মানবাধিকার সোসাইটির চেয়ারম্যান প্রফেসর নজরুল ইসলাম তামিজি প্রমুখ।কবির কর্মময় জীবন নিয়ে আলোচনা করেন রবীন্দ্র গবেষক ইবির বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. সরওয়ার মুর্শেদ রতন ও শিলাইদহ রবীন্দ্র সংসদের পরিচালক আফজাল হোসেন।এর আগে জেলা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীদের কণ্ঠে সূচনা সঙ্গীত পরিবেশিত হয়। দুই দিনব্যাপী রবীন্দ্রমেলাকে ঘিরে শিলাইদহ কুঠিবাড়ি আঙিনা হাজারো দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে। তবে প্রচণ্ড গরম এবং উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের কারণে তিন দিনের এ অনুষ্ঠানকে দুই দিনেই শেষ করা হবে।সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন বিশ্বকবির ১৬৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী আয়োজিত অনুষ্ঠানে কুঠিবাড়ির মূলমঞ্চে প্রতিদিনই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জেলার সংগঠনসহ জাতীয় পর্যায়ের শিল্পীরা কুঠিবাড়ির মূলমঞ্চে রবীন্দ্র সংগীত, কবিতা আবৃত্তি, দলীয় নৃত্য পরিবেশন ও রবীন্দ্রনাথের লেখা নাটক মঞ্চস্থ করবেন।এদিকে, রবীন্দ্র জন্মবার্ষিকীতে কুঠিবাড়ি চত্বরে বসেছে বিশাল গ্রামীণ মেলা। নানারকম পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। ঐতিহাসিক এই উৎসবকে নির্বিঘ্ন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।জমিদারি দেখাশোনার জন্য ১৮৯১ সালে প্রথম এই কুঠিবাড়িতে আসেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। নিরিবিলি পরিবেশ, জমিদারি আর ব্যবসার কারণে বার বার কুষ্টিয়ার এই কুঠিবাড়িতে ফিরে আসতেন তিনি। নিভৃত বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চল কুষ্টিয়ার শিলাইদহে কবির জীবনের বেশকিছু মূল্যবান সময় কেটেছে। এখানে বসে রচিত গীতাঞ্জলি কাব্যই রবীন্দ্রনাথকে এনে দিয়েছে নোবেল পুরস্কার আর বিশ্বকবির মর্যাদা। এছাড়া তিনি এখানে বসেই বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতসহ অসংখ্য কালজয়ী সাহিত্য রচনা করেছেন। কুঠিবাড়িতে সংরক্ষিত আছে সেসব দিনের নানা স্মৃতি।তবে কুমারখালী শিলাইদহের পার্শ্ববর্তী দুটি উপজেলাতে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের কারণে এবারের অনুষ্ঠানে লোক সমাগম কম হয়েছে। এতে রবীন্দ্রপ্রেমীদের মধ্যে এক ধরনের হতাশা কাজ করেছে। আগামীতে তারা জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠান উপভোগ করতে চায়।
নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীতে মহাকবি আল্লামা ইকবালের ৮৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে 'মহাকবি ইকবালের জীবন ও চিন্তাদর্শন' শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২১ এপ্রিল রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াতের মধ্যদিয়ে সেমিনারের সূচনা হয়। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আল্লামা ইকবাল সংসদের সদস্য সচিব ড. আব্দুল ওয়াহিদ। তিনি বাংলাদেশে ইকবাল চর্চার গুরুত্ব ও আল্লামা ইকবাল সংসদের কার্যক্রম সম্বন্ধে সংক্ষেপে একটি পর্যালোচনা তুলে ধরেন। আল্লামা ইকবালের একটি কবিতার গীতিরূপ আবৃত্তি করেন বিশিষ্ট গীতিকার ও সুরকার লিটন হাফিজ। ইকবালের এই অসাধারণ কবিতার আবৃত্তিতে শ্রোতা এবং আবৃত্তিকারসহ সকলেই একাত্ম হন। 'আল্লামা ইকবালের মানব ঐক্যের দর্শন' শীর্ষক প্রবন্ধ পাঠ করেন সৈয়দ তোশারফ আলী। প্রথমে তিনি আল্লামা ইকবালের জীবন ও জ্ঞানের সফরের একটি সংক্ষিপ্ত চিত্র তুলে ধরেন। পরবর্তীতে বিশ্বায়ন, বর্তমান দুনিয়ার সংকটের প্রেক্ষিতে আল্লামা ইকবালের দর্শনচর্চা কীভাবে আমাদের সংকট উত্তরণের পথ নির্দেশ করতে পারে, তা তিনি তুলে ধরেন। প্রধান অতিথি প্রফেসর ড. শমশের আলী শারীরিক অসুস্থতার দরুণ উপস্থিত হতে না পারলেও, তার বক্তব্য রেকর্ড করে পাঠিয়ে দেন, যা সেমিনারে শোনানো হয়। এছাড়া বক্তব্য রাখেন এশিয়ান ইউনিভার্সিটির ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রধান ড. এনামুল হক আজাদ ও বিশিষ্ট গবেষক শাহ আব্দুল হালিম। সভাপতির বক্তব্যে বিশিষ্ট কবি ও সম্পাদক আল মুজাহিদী শুরুতেই ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন। পাশাপাশি, বর্তমান দুনিয়ার প্রেক্ষিতে আল্লামা ইকবালের চিন্তা কীভাবে এখনো প্রাসঙ্গিকতা রাখে, তাও তিনি সংক্ষেপে তুলে ধরেন। সেমিনার সঞ্চালনা করেন বিশিষ্ট কবি জাকির আবু জাফর। বক্তব্যের মাঝে কয়েকজন ইকবাল অনুরাগীর কালামে ইকবাল থেকে আবৃত্তি সেমিনারকে আরো প্রাণবন্ত করে তোলে। উল্লেখ্য, আল্লামা ইকবাল সংসদ গত তিনযুগেরও অধিক সময় ধরে বাংলাদেশে ইকবাল চর্চার পথপ্রদর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘শুদ্ধ সাহিত্য চর্চায় অঙ্গীকারবদ্ধ’ স্লোগানকে সামনে রেখে আত্নপ্রকাশ করেছে ভাওয়াল সাহিত্য সংসদ নামে একটি সংগঠনের।৯ এপ্রিল মঙ্গলবার সকালে গাজীপুরের একটি অভিজাত রিসোর্টে প্রবীণ-নবীণ লেখক, কবি ও সাহিত্যিকদের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে ২০২৪-২৫ কার্যনির্বাহী কমিটি। এতে লেখক, কলামিস্ট ও সাংবাদিক হাফিজুর রহমানকে সভাপতি এবং মো. হারুন-অর-রশিদকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়েছে।১৯ সদস্য বিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটির অন্যান্যরা হলেন- সিনিয়র সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর সনজু, সহ-সভাপতি বি এম আশিক হাসান, সহ-সাধারণ সম্পাদক হানিফ আকন্দ, সহ-সাধারণ সম্পাদক বসির আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মো. আরিফুল ইসলাম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবু হুরায়রা, দফতর সম্পাদক আল আমিন রতন, অর্থ সম্পাদক সাকিল আল ফারুকী, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক ইমরান হক, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক বিলকিস আক্তার, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক শরিফুল ইসলাম এবং ক্রীড়া ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আতিকুল হোসেন।কার্যকরী সদস্যরা হলেন- মোবারক হোসেন রনি, দেলোয়ার হোসেন, খাইরুল ইসলাম সুমন, শরীফুল ইসলাম ও জাহাঙ্গীর আলম।ভাওয়াল সাহিত্য সংসদের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্যরা হলেন- গাজীপুর সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আফাজ উদ্দিন কাঁইয়া, সাংবাদিক নেতা মো. আবু বকর সিদ্দিক এবং বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও শিক্ষানুরাগী জালাল উদ্দিন মাস্টার।ভাওয়াল সাহিত্য সংসদের নবনির্বাচিত সভাপতি হাফিজুর রহমান বলেন, সাহিত্য চর্চার মধ্য দিয়েই একজন মানুষের পূর্ণাঙ্গ স্বত্বা বিকশিত হয়। ভাওয়াল সাহিত্য সংসদ সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে কাজ করে যাবে। শিল্প সাহিত্য চর্চা ও তা বিকাশের জন্য প্রয়োজন একটি প্লাটফর্মের সেই কারণে ভাওয়াল সাহিত্য সংসদ ‘ভাওয়ালের কাগজ’ নামে একটি সাহিত্য পত্রিকা প্রকাশ করবে, যাতে লেখকরা তাঁদের ভেতরের প্রতিভা প্রকাশের প্লাটফর্ম খুঁজে পান। ভাওয়াল সাহিত্য সংসদের প্রতিটা লেখক ও সাহিত্যিক একেক জন আলোকিত মানুষ। তাই বিশ্বাস রাখি এই সংগঠনের মাধ্যমে আলোকিত হবে সমাজ ও রাষ্ট্র। আমরা শুধুমাত্র সাহিত্য নয়, বরং সমাজ ও পরিবেশের কল্যাণে সকল ধরণের সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করবো এই সংগঠনের ব্যানারে।
মন্তব্য করুন