গুরুদাসপুরে ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করায় গণপিটুনির শিকার পুলিশ
গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি: নাটোরের গুরুদাসপুরে দুই ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করায় গণপিটুনির শিকার হয়েছেন এক পুলিশ সদস্য। ২৬ নভেম্বর রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পৌরশহরের চাঁচকৈড় নাজিম উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজের পেছনের গলির ভেতর এ ঘটনা ঘটে। পরে গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোনোয়ারুজ্জামান এসে ওই পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান।ওসি মোনোয়ারুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের নাম কামরুল হাসান (কং নম্বর-৬৩৯)। ঘটনার সময় সিভিল পোশাকে ছিলেন। অবিবাহিত এই পুলিশ সদস্য ৮/৯ মাস আগে থানায় যোগদান করেছেন। বিষয়টি পুলিশ সুপারকে জানানো হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাছাড়া ছাত্রীর অভিভাবকরা চাইলে মামলাও করতে পারেন।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উত্ত্যক্তের শিকার দুই ছাত্রী চাঁচকৈর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী। বার্ষিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য স্কুলে যাচ্ছিল তারা। স্কুলের পেছনের গলির ভেতর যাওয়া মাত্রই দুই ছাত্রীর মুখ চেপে ধরে ওই পুলিশ সদস্য। এক পর্যায়ে হাত ফসকে দৌড়ে পালায় ওই দুই ছাত্রী। পরে বিষয়টি তারা শিক্ষকদের জানায়।চাঁচকৈর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহমুদা পারভিন জানান, ছাত্রীর অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রথমে ওই পুলিশ সদস্যকে পাওয়া যায়নি। পরে স্থানীয় একটি ধানসেদ্ধ করা চাতালের শ্রমিক জানান, একটি ঘরের ভেতর লুকিয়ে রয়েছেন এক লোক। ঘরের ভেতর গিয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রীরা পুলিশ সদস্যকে সনাক্ত করলে সে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে।বিদ্যালয়ের সামনের প্রধান সড়কে স্থানীয়রা ওই পুলিশ সদস্যকে আটক করে উত্তম মাধ্যম দেন। পরে নিজেকে পুলিশ সদস্য পরিচয় দেওয়ায় জনরোষ থেকে রক্ষা পায়। পরিস্থিতি বিবেচনায় অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকে বিদ্যালয়ে আনা হয়। পরে থানায় খবর দেওয়া হলে ওসি মোনোয়ারুজ্জামান এসে তাঁকে নিয়ে গেছেন।অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের উদ্ধৃতি দিয়ে ওসি জানান, ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করার অভিযোগটি সত্য নয়, পুলিশ সদস্য কামরুল হাসান বিভিন্ন সময়ে নাজিম উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজে পরীক্ষা সংক্রান্ত কাজে দায়িত্ব পালন করতেন, এ সুবাদে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর সাথে তাঁর পরিচয় ঘটে। রোববার সিভিল পোশাকে ওই ছাত্রীর সাথে সেখানে দেখা করতে গিয়েছিলেন। এ সময় দুই ছাত্রী তাদের দেখে ফেলে, বিষয়টি শিক্ষকদের বলে দেওয়ার কথা বলায় দুই ছাত্রীর মুখ চেপে ধরেছিলেন। ঘটনা যাই ঘটুক, অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান ওসি মোনোয়ারুজ্জামান।