পাইকগাছায় স্বামী-শ্বশুরের বেদম প্রহারে দুই সন্তানের জননী আবেদার মৃত্যু
পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি: খুলনার পাইকগাছার হরিঢালীতে স্বামী-শ্বশুরের নির্মম অত্যাচারে পুত্রবধূ আবেদা বেগম (২৭) নামের এক মৃত্যু হয়েছে। শ্বশুর ও স্বামীর বেদম প্রহারে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে ভর্তির এক পর্যায়ে তার মৃত্যু হয় বলে জানা গেছে।এলাকাবাসী, পুলিশ ও মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার হরিঢালী ইউপির হরিঢালী গ্রামের মোহাম্মদ আলী সরদারের বড় ছেলে জাকারিয়া সরদার (৩০) এর সঙ্গে একই ইউপির সোনাতনকাটী গ্রামের ফরিদ গাজীর কন্যা আবেদা বেগমের বিবাহ হয়। বিবাহ পরবর্তী পারিবারিক নানা প্রতিকূলতার অজুহাতে আবেদা বেগমের শ্বশুর মোহাম্মদ আলী সরদার, শাশুড়ি রাবেয়া খাতুন ও স্বামী জাকারিয়া সরদার প্রতিনিয়ত তার উপর নির্যাতন চালিয়ে আসছিল।এমতাবস্থায় ঘটনার দিন ৪ মে শনিবার দুপুর ১২টার দিকে সাংসারিক ঝামেলার অজুহাতে স্বামী ও শ্বশুর মিলে দফায় দফায় তার উপর শারীরিক নির্যাতন চালায়। একপর্যায়ে আবেদা বেগম মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন। এসময় তড়িঘড়ি করে তার স্বামী ও শাশুড়ি মিলে প্রথমে তালা হাসপাতালে ও পরে অবস্থার অবনতি হলে সাতক্ষীরা মেডিকেল ভর্তি করে। সেখানেও তার অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ৫ মে রোববার তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই ৭ মে মঙ্গলবার সকালে তার মৃত্যু হয়।মৃত্যুর খবর পেয়ে আবেদার আত্মীয়-স্বজন সেখানে উপস্থিত হয়ে স্বামী ও শাশুড়িকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে। এদিকে পুত্রবধুর আবেদার মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকে শ্বশুর মোহাম্মদ আলী সরদার পলাতক আছেন।মৃত আবেদা বেগমের গর্ভের আব্দুল্লা সরদার (৯) ও আবির হাসান নামের (১৮ মাস) দুই পুত্র সন্তান রয়েছে।এ ব্যাপারে মৃতের ফুফাতো ভাই মিজানুর রহমান গাজী জানান, আমার বোনকে তার স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ি মিলে ঘটনার দিন কয়েক দফায় বেদম মারপিট করলে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। মারপিটের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।তিনি আরও জানান, আমার বোনের শ্বশুরের কু-প্রস্তাবের কারণে জাকারিয়ার আগের স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে গেছে। আমার বোনকে তারা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।এ ব্যাপারে পাইকগাছা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ওবাইদুর রহমান বলেন, আবেদার মৃত্যুর খবর আমরা শুনেছি। তার লাশ খুমেক হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। লাশের ময়না তদন্ত শেষে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।