নিজস্ব প্রতিবেদক: পবিত্র মাহে রমজান কয়েক সপ্তাহ পরে। এ মাস সংযমের মাস। কিন্তু দেশের ব্যবসায়ীরা সিয়াম সাধনার পবিত্র এ মাসটি এলেই যেন বেশি সংযম হারায়! নিত্যপণ্যের দাম বাড়ান তাদের ইচ্ছেমতো। এবারও ব্যতিক্রম খুব একটা চোখে পড়ছে না। ইতোমধ্যে রোজায় যেসব পণ্যের চাহিদা বাড়ে, তার সবকিছুর দামেই আগুনের মত রেড়ে গেছে। এসব পণ্য ছুঁতে গেলেই যেন পকেট পুড়ে যাওয়া অবস্থা।এরই মধ্যে আগামী রোববার পবিত্র শবে বরাতকে কেন্দ্র করে গরুর মাংসের দাম আরেক দফা বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। রাজধানীর কোনো বাজারেই ৭৫০ টাকার নিচে মিলছে না গরুর মাংস।তাল মিলিয়ে মুরগীর দামেও চলছে ডিজিট বাড়ানোর খেলা। একই বাজারে পাশাপাশি দোকানে ১০-২০ টাকার তারতম্য দেখা যাচ্ছে দামে। কোথাও ২০০ টাকা কেজির নিচে মিলছে না ব্রয়লার মুরগীর।২৩ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার রাজধানীর শেওড়াপাড়া বাজারে প্রতিকেজি দাম চাওয়া হচ্ছে ২১০-২৩০ টাকা। এছাড়া লেয়ার মুরগি ৩১০ টাকা, পাকিস্তানি মুরগি ৩০০ টাকা ও দেশি মুরগি ৬০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করা হচ্ছে এ বাজারে।দামের এই ঊর্ধ্বগতির বিষয়ে খুচরা ব্যবসায়ীরা জানান, মুরগির দাম বেশ কয়েকদিন ধরেই বেড়েছে। কেনা দাম বেশি পড়ায় বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।এদিকে মাছের বাজার চড়া অনেকদিন ধরেই। তালতলা মাছ বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি বড় রুই মাছ ৪০০-৪৫০ টাকা, মাঝারি রুই মাছ ৩০০-৩৫০ টাকা, ছোট কাতলা মাছ ৩০০-৩৫০ টাকা, বড় কাতলা মাছ ৪৫০-৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এমনকি পাঙ্গাশ মাছের দামও হাঁকা হচ্ছে ৩০০-৩৫০ টাকা।এছাড়া আকার ভেদে ইলিশ মাছ ৭০০-১২০০ টাকা, সিলভারকার্প মাছ ২৫০-৩০০ টাকা, বোয়াল মাছ ৫০০-৭০০ টাকা, আইড় মাছ ৬০০ টাকা, বড় কৈ মাছ ৬০০ টাকা, শিং মাছ ৮৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।ছোট মাছের মধ্যে কাচকি মাছ ৪৫০ টাকা, মলা মাছ ৩০০ টাকা, পাবদা মাছ ৫০০-৬০০ টাকা, গলদা চিংড়ি আকারভেদে ৬৫০-৭৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।বেড়েছে সবজির দাম: মৌসুমের এই সময়ে সবজির বাজারে স্বস্তি আসার কথা থাকলেও এবার তা কিনতে গিয়েও হিমশিম খেতে হচ্ছে ক্রেতা সাধারণের। শীতকালীন সবজির দাম কিছুটা কমলেও গ্রীষ্মকালীন সবজিগুলো ১০০ টাকার নিচে কিনতে পারছেন না ভোক্তারা।মিরপুরের কয়েকটি বাজার ঘুরে তুলনামূলক বিচারে দেখা যায়, প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৮০ টাকায়, একেকটি ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, ব্রকলি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। এছাড়া মৌসুমের শেষেও এক কেজি গাজর কিনতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, খিরাই কিনতে ৬০ থেকে ৮০ টাকা ও টমেটো কিনতে ৪০ থেকে ৮০ টাকা গুনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। প্রায় সব বাজারে আলু ও মুলা বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়।এছাড়া গ্রীষ্মকালীন সবজি কচুরমুখী ১০০ টাকা, বেগুন ৮০ থেকে ১০০ টাকা, করলা ১৪০ টাকা, ঢেঁড়স ১২০ টাকা, বরবটি ১৪০ টাকায়, শসা ১০০ টাকা, প্রতিটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৫০ টাকা, ধুন্দুল ১০০ টাকা, চিচিঙ্গা ৮০ টাকা, ঝিঙা ১০০ টাকা, পটল ১৪০ টাকা এবং সাজনে ডাঁটা ২৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।লাগাম টানা যাচ্ছে না পেঁয়াজের দরেও। দেশি পেঁয়াজ ১২০-১৩০ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা যাচ্ছে রাজধানীর সব বাজারে। তাছাড়া রোজার মধ্যে আরেক দফা সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম দেখা যাবে বলে আশঙ্কা করছেন অনেক ক্রেতা।খেজুর এখন বিলাসী পণ্য: পবিত্র রমজানকে সামনে রেখে সরকার সম্প্রতি চিনি ও খেজুরের আমদানি শুল্ক কমালেও বাজারে এর কোনো প্রভাব পড়েনি। রোজায় সর্বসাধারণের ভোগ্যপণ্য খেজুর এখন বিক্রি হচ্ছে বিলাসী পণ্যের দরে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলার সংকটের কারণে রোজায় বিঘ্ন ঘটতে পারে চিনি ও খেজুর সরবরাহে। অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে।এর আগে, বৃহস্পতিবার রাজধানীর মৌলভীবাজারে এক অনুষ্ঠানে আসন্ন রমজানে চিনি ও খেজুরের স্বাভাবিক সরবরাহ পাওয়া নিয়ে আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর পরিচালক আবু মোতালেব বলেন, ব্যাংকের সুদহার বেড়ে যাচ্ছে। সুদ না কমালে পণ্যমূল্য কখনোই কমবে না। তা ছাড়া ডলারের সংকটের কারণে ব্যাংক এলসি দিচ্ছে না। এতে আমদানি ব্যাহত হচ্ছে।ডলারের দর ও শুল্ক বৃদ্ধির কারণে রোজায় খেজুর মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন ফল আমদানিকারক সমিতির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম।তিনি বলেন, খেজুরে কখনোই এত বেশি শুল্ক ছিল না। গত অর্থবছর থেকে খেজুরকে বিলাসী পণ্য হিসেবে মূল্যায়ন করা হচ্ছে। বর্তমানে ১২০ টাকার খেজুরে শুল্ক দিতে হচ্ছে ২০৮ টাকা। তাছাড়া গত বছর ডলারের রেট ছিল ১০০ টাকার কিছু বেশি। এখন ডলারের দর ১২০ টাকার বেশি।তিনি বলেন, কাস্টমসে ১ হাজার ডলারের খেজুরের আমদানি মূল্য আড়াই হাজার ধরে শুল্কায়ন করা হচ্ছে। এতে অনেক বেশি শুল্ক পরিশোধ করতে হয়। এর সুরাহা করতে হবে। তাঁর অভিযোগ, বন্দর থেকে আগে দু’দিনের মধ্যে খেজুর খালাস করা যেত। এখন ৮ থেকে ১০ দিন লাগে। তাতে চট্টগ্রাম বন্দরে পাঁচ শতাধিক খেজুর বোঝাই কনটেইনার আটকে আছে। দ্রুত খালাস না করলে সরবরাহ ব্যবস্থায় বিঘ্ন হতে পারে।
২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ০৯:৫৭ এএম
নিউজ ডেস্ক: আমদানি শুল্কে ছাড় ঘোষণার পরও নিয়ন্ত্রণহীন রয়ে গেছে নিত্যপণ্যের বাজার। সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে শাক-সবজি ও মাছ-মাংসসহ প্রায় সব ধরনের পণ্যেরই। ৯ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার কেরানীগঞ্জের আগানগর, জিনজিরা এবং রাজধানীর নয়াবাজার ও কারওয়ান বাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে এ চিত্র।সরবরাহ স্বাভাবিক রেখে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি চাল, চিনি, ভোজ্যতেল ও খেজুরের ওপর থেকে আমদানি শুল্ক কমিয়ে ৮ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তবে শুক্রবার বাজারে এর কোনো প্রভাব দেখা যায়নি।ব্যবসায়ীরা বলছেন, আরও আগেই শুল্ক কমানো উচিত ছিল। এখন কমিয়ে তেমন একটা কাজ হবে না। আর ক্রেতারা বলছেন, অস্থির বাজার নিয়ন্ত্রণে শুধু আমদানি শুল্ক কমালেই চলবে না, তদারকি জোরদার করতে হবে এর পাশাপাশি।এদিকে রমজানের আগেই নিত্যপণ্যের ক্রমবর্ধমান দাম ঘাম ধরাচ্ছে ক্রেতা সাধারণের কপালে। এর মধ্যেই বাড়তে শুরু করেছে আটা-ময়দা, ডাল-ছোলা, চিনি, ভোজ্যতেল ও খেজুরের দাম। দাম নিয়ন্ত্রণে চিনি, ভোজ্যতেল ও খেজুরের আমদানি শুল্ক কমিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।অথচ শুক্রবার বাজার ঘুরে দেখা যায়, কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়ে ছোলা বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১০৫ টাকায়। ছোলার পাশাপাশি বাড়ছে অন্যান্য ডালের দামও। গত একমাসের মধ্যে এসব পণ্যের দাম ১০-৩০ টাকা বেড়েছে।অন্যান্য পণ্যের মধ্যে খোলা আটা ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, প্যাকেট আটা ৬৫ থেকে ৬৮ টাকা, খোলা ময়দা ৬৫ থেকে ৭০ টাকা এবং প্যাকেট ময়দা ৭৫ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৭০ টাকা ও প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকায়। আর প্যাকেটজাত চিনি তো বাজার থেকেই উধাও!এরই মধ্যে আকাশ ছুঁয়েছে খেজুরের দাম বাজারে প্রতি কেজি দাবাস খেজুর ৪৫০ থেকে ৪৮০ টাকা, জিহাদি খেজুর ২৪০ টাকা, আজওয়া খেজুর ৯০০ টাকা, বরই খেজুর ৪০০ টাকা, মরিয়ম খেজুর ৯০০ টাকা ও মেডজুল খেজুর ১ হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বর্তমানে।বিক্রেতারা বলছেন, আসন্ন রমজানকে কেন্দ্র করে চাহিদা বাড়তে থাকায় দামও বাড়ছে খেজুরের। রাজধানীর কারওয়ান বাজারের রাকিব জেনারেল স্টোরের বিক্রেতা রাকিব জানান, দাম যা বাড়ার তা আগেই বেড়ে গেছে। মূলত রোজাকে কেন্দ্র করে পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে মিল মালিকরা। আর তার প্রভাবই এখন পড়ছে পাইকারি ও খুচরা বাজারে।দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে মসলার বাজারেও। গত এক মাসের ব্যবধানে এলাচ-লবঙ্গের দাম প্রতি কেজিতে বেড়েছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা। গোলমরিচ ও দারুচিনির দামও বাড়তি। এর কারণ জানেন না খোদ বিক্রেতারাও। তাদের দাবি, আমদানিকারকদের কারসাজিতেই বাড়ছে দাম।নতুন করে ঝাঁজ লেগেছে পেঁয়াজের দামেও। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজিতে ২০ থেকে ২৫ টাকা বেড়ে মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকায়। আমদানিশুরু হলেও বাজারে দেখা নেই ভারতীয় পেঁয়াজের। উধাও পুরাতন দেশি পেঁয়াজও। দু-একটি দোকানে পাওয়া গেলেও সেগুলো বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে।বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে মুড়িকাটা পেঁয়াজের সরবরাহ কমে গেছে, তাই ফের দাম বাড়ছে। কেরানীগঞ্জের আগানগর বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা আসলাম বলেন, বাজারে মুড়িকাটা পেঁয়াজ কম আসছে। এ ছাড়া বাজারে অন্য জাতের পেঁয়াজ ও ভারতীয় পেঁয়াজও নেই। তাই দাম বাড়ছে।র তবে, সরবরাহ ঠিক থাকায় নতুন করে দাম বাড়েনি আদা ও রসুনের। কেবল মানভেদে দামে কিছুটা তারতম্য আছে।এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে আলু ও মরিচ বাদে বেড়েছে প্রায় সব ধরনের শাক-সবজির দাম। কেজিতে দাম বেড়েছে ৫-১৫ টাকা পর্যন্ত। বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারি দাম বাড়ায় খুচরা বাজারেও এর প্রভাব পড়ছে।বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি মুলা ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, শালগম ৪০ টাকা, করলা ৬০ থেকে ৮০ টাকা, শসা ৬০ টাকা, লতি ৮০ টাকা, শিম ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, পেঁপে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা ও গাজর বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়।এ ছাড়া প্রতি কেজি বেগুন জাতভেদে ৬০ থেকে ১০০ টাকা, ক্ষীরাই ৫০ টাকা, টমেটো ৬০ থেকে ৭০ টাকা, কহি ৮০ টাকা, কাঁচা টমেটো ৩০ থেকে ৪০ টাকা ও পেঁয়াজের কলি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। আর প্রতি পিস লাউ ৮০ থেকে ১০০ টাকা, আকারভেদে প্রতিপিস ফুলকপি ৩০ থেকে ৫০ টাকা, বাঁধাকপি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা ও ব্রকলি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।তবে বাজারে কমেছে নতুন আলু ও কাঁচামরিচের দাম। খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়। আর পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। এদিকে, উভয় পর্যায়ে দাম কমে পাইকারিতে কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায় ও খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়। এ ছাড়া বাজারে লালশাকের আঁটি ১৫ টাকা, পুঁইশাক ২৫ টাকা, পালংশাক ১০ টাকা ও লাউ শাক ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।অন্যসব পণ্যের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আবারও দাম বেড়েছে মাংস ও ডিমের। প্রতি কেজিতে মুরগির দাম বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত। বিক্রেতাদের দাবি, পাইকারি বাজারে মুরগির সরবরাহ কমে গেছে।বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২১০ থেকে ২২০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩২০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৫০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩১০ টাকায়। আর জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকায়।বাজারে আজ প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হতে দেখা গেছে ৭২০ থেকে ৭৫০ টাকায়। গত মাসে নিজেরাই গরুর মাংসের দাম ৬৫০ টাকা বেঁধে দিলেও এখন থেকে গরুর মাংসের দাম নির্ধারিত থাকবে না বলে সিদ্ধান্ত জানিয়েছে মাংস ব্যবসায়ী সমিতি। প্রতিকেজি গরুর মাস ৬৫০ টাকায় বিক্রি করায় ব্যবসায়ীরা লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছেন দাবি করে আপাতত ৭০০ টাকা দরে বিক্রির চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সমিতির সভাপতি গোলাম মুর্তজা।মাংস ব্যবসায়ী সমিতি ৭০০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রির কথা বললেও কেন ৭২০ থেকে ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে জানতে চাইলে কেরানীগঞ্জের আগানগর বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, ৭৫০ টাকায় ভালো মানের মাংস বিক্রি হচ্ছে। এর চেয়ে কম দামে মাংস বিক্রি করে পোষাচ্ছে না তাদের।গত সপ্তাহের তুলনায় এখন ডজন প্রতি ৫ টাকা বেড়েছে ডিমের দাম। প্রতি ডজন লাল ডিম ১৪০ টাকা ও সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে আজ। আর প্রতি ডজন হাঁসের ডিম ২৪০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিম ২৪৫ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।এদিকে মাছের বাজারের অস্থিরতাও থামছে না। সপ্তাহ ব্যবধানে বেড়েছে দেশি মাছের দাম। হাতে গোনা কয়েকটি চাষের মাছের দাম কমলেও তা নাগালের বাইরে বলে দাবি ক্রেতাদের।বাজার ঘুরে দেখা যায়, আকারভেদে প্রতি কেজি রুই ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, কাতলা ৪০০ থেকে ৪৮০ টাকা, চাষের শিং ৬৫০ টাকা, চাষের মাগুর ৫৫০ টাকা, চাষের কৈ ২৫০ টাকা, কোরাল ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, টেংরা ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা, চাষের পাঙাশ ২০০ থেকে ২২০ টাকা ও তেলাপিয়া ২৩০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।এ ছাড়া প্রতি কেজি বোয়াল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, আইড় ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা, বাইম ১ হাজার টাকা, দেশি কৈ ১ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা, শিং ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, শোল ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা ও নদীর পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকায়। আর প্রতি কেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার টাকার ওপরে।কেরানীগঞ্জের কালীগঞ্জ বাজারের মাছ ব্যবসায়ী হরিপদ বলেন, মাছের সরবরাহ না বাড়ায় দামও কমছে না।এদিকে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর, খাদ্য অধিদফতরসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থা মাঠে নামলেও সুখবর নেই চালের বাজারে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে থেকে দাম যতটা বেড়েছে, তার তুলনায় কমেছে সামান্য। খুচরা পর্যায়ে চালভেদে কেজিতে কেউ কেউ এক-দুই টাকা কম রাখলেও বেশিরভাগ বিক্রেতা আগের বাড়তি দামেই চাল বিক্রি করছেন।কারওয়ান বাজারের বরিশাল রাইস এজেন্সির আল হাসিব বলেন, নতুন করে বাড়েনি চালের দাম। তবে মিল-মালিকদের সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে আবারও বাড়তে পারে চালের দাম।নিত্যপণ্যের এ অস্থির বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের দাবি ক্রেতা সাধারণের। ক্রেতারা বলছেন, নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হয় না। এতে বিক্রেতারা ইচ্ছেমতো দাম বাড়ানোর সুযোগ পায়। আর বিক্রেতারা বলছেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছে। বাজারে নিয়মিত অভিযান চালালে অসাধুদের দৌরাত্ম্য কমবে। সূত্র: আরটিভি
০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ০৯:৩৭ এএম
নওগাঁ প্রতিনিধি: ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, আসুন আমরা দুর্নীতিকে না করি। সকল দ্রব্যমূল্য সহনশীল পর্যায়ে রাখি। লাভের পরিমাণ কমাই। মানুষের সেবা করি। মানুষের সেবা করার মধ্যে স্বার্থকতা রয়েছে। সৃষ্টির সেবা করার মধ্যে আনন্দ রয়েছে।২৫ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টায় নওগাঁ শহরের নওজোয়ান মাঠে নাগরিক কমিটি আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।এর আগে আওয়ামী লীগের সকল অঙ্গ সংগঠন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, চেম্বার অব কমার্সের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন, ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুল এবং ক্রেস্ট দিয়ে অতিথিদের সম্মাননা জানানো হয়। পরে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নওগাঁর ৩টি আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে বিজয়ী খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, ব্যারিস্টার নিজাম উদ্দিন জলিল জন এবং সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীকে নাগরিক সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
২৬ জানুয়ারী ২০২৪ ০২:৪৮ এএম
মেহেরপুর প্রতিনিধি: মেহেরপুরের নিত্যপণ্যের দাম প্রতিনিয়ত লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েই চলেছে। এ সপ্তাহে বেড়েছে আদা, রসুন ও পেঁয়াজের দামও। কাঁচা মরিচের দাম কিছুটা স্থিতিশীল থাকলেও কয়েক সপ্তাহ ধরে ঊর্ধ্বমুখী আদা, আলু ও চিনির দাম।গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে মেহেরপুরের বাজারে অধিকাংশ সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে প্রয়োজনের তুলনায় কম বাজার কিনে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে সাধারণ ক্রেতাদের। এখন খুচরা ব্যবসায়ীরাও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাজার দাম বাড়িয়ে চললেও নেই প্রশাসনিক কোনো ব্যবস্থা।মেহেরপুরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, কাঁচা বাজারগুলোতে পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ, আদা, রসুন, আলু ও শাক-সবজির পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও দাম কমেনি। গত কয়েক সপ্তাহের ধরেই এসব নিত্যপণ্যের দাম চড়া। আলু, টমেটো এবং কাঁচা মরিচের দাম থেমে থেমে বাড়ছে।বাজারে আলুর কেজি ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। পেঁয়াজ প্রকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৫৭০-৯০ টাকা কেজিতে। প্রতি কেজি করলা এখন কেজি ১০০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা কেজি, ঢেঁড়স কেজিতে ৪০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা কেজি ও পেঁপের কেজি ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া চিচিঙ্গা কেজিতে ৪০ টাকা, কাঁকরোল ৪০ টাকা এবং কচুমুখি কেজিতে ৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গত দুই মাস ধরে ৪০০ টাকার উপরে আদার কেজি। চলতি সপ্তাহে নতুন করে রসুনের দাম কেজিতে প্রায় ৪০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ২৭০ টাকা কেজি দরে।এদিকে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায়। সোনালি মুরগির দাম রাখা হচ্ছে প্রতি কেজি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা। দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫৫০ থেকে ৫৬০ টাকায়।মাছের বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, ১ কেজি বা ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ প্রতি কেজি ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ছোট সাইজের জাটকা ইলিশ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি দরে। মাঝারি ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি দরে।দুই থেকে আড়াই কেজি ওজনের রুই মাছের দাম প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। রুই মাছ ছোট সাইজের বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা, বড় সাইজের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে সাড়ে ৩০০ টাকা কেজি দরে। পাঙ্গাস, তেলাপিয়া, সিলভারকার্প বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি দরে। বাজারভেদে গরুর মাংস কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৯৫০ টাকা কেজি দরে।সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বাজার করতে আসা এক ক্রেতা জানান, বেশিরভাগ পণ্যই অতিরিক্ত দামে কিনতে হচ্ছে। নিত্যপণ্যের দাম শুনে হতাশ হতে হচ্ছে ক্রেতাদের।এদিকে খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকারি বাজারে সবজির সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বাড়ছে। চাহিদা অনুযায়ী সবজি পাচ্ছেন না তারা।
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০১:০৫ পিএম
নিজস্ব প্রতিবেদক: ডিম সিন্ডিকেট, ডাব সিন্ডিকেট, স্লাইন সিন্ডিকেট থেকে শুরু করে মানুষের মৌলিক চাহিদাকে ভুলুন্ঠিত করে দেশে যে সিন্ডিকেট মাফিয়া চক্র গড়ে উঠেছে, এর বিরুদ্ধে জনতাকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে রাজধানীতে মানববন্ধন করেছে তারুণ্য নির্ভর রাজনৈতিক দল জাগ্রত বাংলাদেশ (জেবিডি)। ৯ সেপ্টেম্বর শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।সংগঠনের সভাপতি আজমুল জিহাদের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. নুরুল আমিন ভূঁইয়া, সহ-সভাপতি অ্যাড. এইউজেড প্রিন্স, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. মহিউদ্দিন মামুন, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. এবিএম জোবায়ের, অ্যাড. রবিউল হায়দার রবি, অ্যাড. অভি, অ্যাড. রফিকুল ইসলামসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।‘সিন্ডিকেট মাফিয়া নিপাত যাক, জনতা মুক্তি পাক’, ‘হটাও সিন্ডিকেট, বাঁচাও দেশ’ স্লোগানকে সামনে রেখে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তারা দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মধ্যস্বত্বভোগী নির্ভর বাজার ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ও সিন্ডিকেট মাফিয়াদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।তারা বলেন, আজকে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে দেশের সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠছে। একদল সিন্ডিকেট মাফিয়াদের হাতে জিম্মি হয়ে আছে দেশের মানুষ। কোথায় নেই এই সিন্ডিকেট। ডিম সিন্ডিকেট, ডাব সিন্ডিকেট, স্লাইন সিন্ডিকেট থেকে শুরু করে মানুষের মৌলিক চাহিদাকে ভুলুন্ঠিত করে গড়ে উঠেছে এই সিন্ডিকেট মাফিয়া চক্র। এই চক্রের হাতে সাধারণ মানুষ আজ জিম্মি। এই অপশক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনিক ও সরকারি কোনো উদ্যোগ তেমন চোখে পড়ে না। যা-ও আমরা প্রত্যক্ষ করি, সেটা শুধুমাত্র লোকদেখানো ও বুলি আওড়ানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ। আমরা মনে করি, এই অবস্থার অবসান হওয়া অত্যন্ত জরুরি।তারা আরও বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে আমাদের বাঙালি জাতির সর্বাধিনায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে দুর্নীতি -স্বজনপ্রীতি ও সিন্ডিকেট মাফিয়াদের প্রতি হুঙ্কার দিয়েছিলেন, সেই চেতনাকে ধারণ করে এখন আমাদের সময় এসেছে রুখে দাঁড়ানোর।জাগ্রত বাংলাদেশের (জেবিডি) সভাপতি আজমুল জিহাদ বলেন, যদি আজ আমার দিন আনা দিন খাওয়া মানুষ, আমার শ্রমিক, আমার রিক্সাচালক ভাই, এতো দাম দিয়ে ভোগ্যপণ্য কিনতে না পারেন, তার সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দিতে না পারেন, আর তখন যদি তারা চুরি ছিনতাই করতে বাধ্য হন, তাহলে এর দায় কার? আজ সিন্ডিকেটের কারনে স্লাইনের অভাবে যদি কোন এক কোমল শিশু মায়ের বুক খালি করে দুনিয়া ছেড়ে চলে যায়, তাকে কেন রাষ্ট্রীয় অব্যবস্থার কারণে পরিকল্পিত মার্ডার বলা হবে না? এমন ব্যবস্থা চলতে দিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী কি করে তার পদে বহাল থাকেন? সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে জনতার মুক্তি ফিরিয়ে আনতে হবে। জনতার লড়াই অব্যাহত থাকবে, যতক্ষণ না জনতা তার কাঙ্ক্ষিত মুক্তি পান।সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. নুরুল আমিন ভূঁইয়া বলেন, মেহনতি মানুষের মুখের খাবারে ভাগ বসিয়েছে আজ সিন্ডিকেট নামক চক্র। তারা হাতিয়ে নিচ্ছে জনতার মাথার ঘাম পায়ে ফেলা অর্থ। সে অর্থ পাচার করে বিদেশে বেগমপাড়া বানাচ্ছে।সহ-সভাপতি অ্যাড. এইউজেড প্রিন্স বলেন, বাণিজ্যমন্ত্রীর বাণিজ্যের শেতপত্র প্রকাশ করতে হবে।
০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৯:৪৮ এএম